Скачать или смотреть ছাদ বাগানে গাছের ফুল ও ফল ঝরে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার।

ছাদ বাগানে গাছের ফুল ও ফল ঝরে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার 🍀

বেশ কিছু জৈবিক ও অজৈবিক কারণে গাছের ফুল ও ফল ঝরে পরে।
১. সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ না করার কারণে, গাছে পুষ্টির অভাব হলে, ফল ঝরে পড়তে পারে। বিশেষ করে পটাশিয়ামের অভাব হলে ফল ঝরা বেশি হয়। বোরনের অভাবেও ফল ঝরে পড়ে। জিংক সারের কম ব্যবহার করলে ফল ঝরে পরে। এসব পুষ্টি উপাদান পাতায় স্প্রে করে বা গোড়ায় প্রয়োগ করে ফল ঝরা প্রতিরোধ করা যায়। তবে প্রতি বছর বর্ষা শুরু ও শেষে গাছের গোড়ায় সুষম সার ব্যবহার করলে ফল ঝরা অনেকাংশে কমে যায়।

২. ফল ঝরে পড়ার অনেক অজৈবিক কারণের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল খরা বা মাটিতে রসের অভাব । এতে মাটি থেকে গাছ পুষ্টি উপাদান বা খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে না এবং ফল ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি পায়। তাই, সঠিক সময় ও সঠিক মাত্রায় সেচ দিতে হবে। খরার সময় হঠাৎ বৃষ্টি হলে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায় অথবা খরার সময় মাটিতে হঠাৎ রসের পরিমাণ বেড়ে গেলে ফল ও ফলের বোঁটার সংযোগস্থলে একটি নির্মোচন স্তর তৈরি হয়। এতে কচি ফল ঝরে পরে। নিয়মিতভাবে সেচ ও নিস্কাশন করে মাটির রসের পরিমাণ যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় তাহলে ফল ঝরা কমানো যায়।

৩. পুরাতন ডালপালা না কাটা তথা গাছের পরিচর্যার অভাবে ফল ঝরে পরে তাই, পুরাতন ডালপালা কেটে গাছ পরিষ্কার রাখতে হবে।

৪. সুষম পরাগায়নের ব্যবস্থা না নেওয়া। অনেক ধরনের ফল গাছ আছে যেগুলোয় স্ত্রী ও পুরুষ গাছ দেখা যায়। যেমন পেঁপে গাছ। পেঁপে বাগানে যদি শতকরা ১০টি পুরুষ গাছ রাখা যায় তাহলে পেঁপের স্ত্রী ফুলের পরাগায়ন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এবং পেঁপের পরাগায়ন জনিত সমস্যায় ফল ঝরা প্রতিরোধ করা যায়। এ ছাড়া অনেক ফল গাছে প্রথম দিকে শুধু পুরুষ ফুল কিংবা অধিকাংশ ফুলই পুরুষ ফুল হিসেবে ফোঁটে, সে ক্ষেত্রে শেষের দিকে পুরুষ ফুলের সংখ্যা কমে যায় এবং স্ত্রী ফুলগুলো পরাগায়নের অভাবে ঝরে যায়। তাই, পুরুষ ফুলের গর্ভদন্ড দিয়ে হাতে পরাগায়ন করতে হবে।

৫. নাইট্রোজেন জাতীয় সারের অতিরিক্ত প্রয়োগে বা গাছের অতিরিক্ত গ্রহণে গাছের দৈহিক বৃদ্ধি বা গাছের তেজ বেশি হয়, এতে স্ত্রী ফুলের চেয়ে পুরুষ ফুল কম ফোটে এবং অনেক স্ত্রী ফুল সঠিকভাবে পরাগায়িত না হওয়ায় ফল ঝরে যায়। তাই, সঠিক মাত্রায় নাইট্রোজেন জাতীয় সার ব্যবহার করতে হবে।

৬. হরমোনের তারতম্যের জন্য ফল ঝরে যেতে পারে তাই উদ্ভিদের অনুখাদ্য হিসাবে ফ্লোরা / বায়োফার্টি / প্লান্টফিড ১০ লিটার পানিতে ২.৫ মিঃলিঃ হারে প্রয়োগ করতে হবে।

৭. ফল গাছে অনেক ধরনের রোগ দেখা দিলে ফল ঝরে পড়ে । যেমন- পেঁপের গোড়া পচা রোগে ফল ঝরে যায়, নারকেলের কুঁড়ি পচা রোগে কচি ফল ঝরে যায়, এনথ্রকানোজ বা ফোসকা পড়া রোগে কচি আম ও পেয়ারা, কাঁঠালের মুচি ফল ঝরে যায় এবং শুঁটিমোল্ড রোগে কুল ঝরে যায়। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য মেনকোজেব বা সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।


৯. তীব্র শৈত্য প্রবাহে গাছের ফল না ঝরলেও গাছের পাতায় শীতের ক্ষত দেখা দিতে পারে এবং গাছে খাবার উৎপাদন ব্যাহত হয়ে গাছ দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এতে কিছু ফল ঝরেও যেতে পারে। শৈত্য প্রবাহের সময় নিয়মিতভাবে শুধু পানি পাতায় স্প্রে করলে পাতা শীতের ক্ষত থেকে রক্ষা পায় এবং পরে ফল ঝরা অনেক কমে যায়।

১০. গ্রীষ্মকালে বাতাসের তাপমাত্রা বেশি এবং আর্দ্রতা কম থাকলে ফল ঝরে পরে। ফলের ভেতরের ও বাইরের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার পার্থক্যের কারণে ফলের বোঁটা দুর্বল হয়ে ফল ঝরে পড়ে। আবার তাপ প্রবাহেও গাছের জৈবিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এবং দৈহিক বৃদ্ধিও স্থবির হয়ে পড়ে। গাছে ভেতরে ও বাইরে আর্দ্রতার হেরফের হওয়ায় ফল ঝরে পড়তে শুরু করে। তাপ প্রবাহের সময় নিয়মিতভাবে মধ্যরাতের দিকে গাছের গোড়ায় ও স্প্রে মেশিন দিয়ে পাতায় স্প্রে করলে ফল ঝরা অনেকাংশে কমানো যেতে পারে।
#gardening
#Roof_Garden
#ছাদ_বাগান
#makeagarden
#ছাদ_বাগান_পরিচর্যা
‪@Makeagarden‬