Скачать или смотреть চলে গেলেন মহাজন বাউল সাধক গায়ক সাধন দাস বৈরাগী.......

চলে গেলেন মহাজন বাউল সাধক গায়ক সাধন দাস বৈরাগী। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭২। রেখে গেলেন দেশ বিদেশের প্রায় বেশি ৫০০ শিষ্য, শিষ্যাদের। আর রয়ে গেল তার অজস্র সৃষ্টি বাউল গান।
তিনি প্রথম জীবনে কমলাকে বিবাহ করেন। পরে বাউল জীবনে এসে মাকী কাজুমিকে সাধন সঙ্গী করে তোলেন। হেঁটেছেন দীর্ঘ পথ।রবিবার, রাত্রি ৮ টা ১০ মিনিটে, পূর্ব বর্ধমানের আমারুন আশ্রমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গত কয়েক মাস আগেই তার ক্যানসার রোগ ধরা পরে। তারপর চিকিৎসা চলছিল। জয়দেবের 'মনেরমানুষ' আখড়ায় মাঝে মধ্যেই এসে থাকতেন। তবে জয়দেবের মেলায় তিন পাঁচ দিন, আসর বসিয়ে থাকতেন। এক বর্ণময় বাউল সাধক ছিলেন তিনি। কেন্দুলীর 'মনেরমানুষ' আখড়ায় থাকেন তাঁর শিষ্য তন্ময় দাস বাউল ও তার স্ত্রী, সাধন বৈরাগীর শিষ্যা রেখা। এই মৃত্যুর খবর আসাতে, তারাও আমারুনের পথে রওনা দিয়েছে।
জয়দেব-কেঁদুলির মেলা গত কয়েক বছর ধরে হাঁসফাঁস করেছে আধুনিকতার ছোয়ায়। গান শুনে মন আকুল হবে কী, কান ঝালাপালা হয়ে যায় মাইকের আওয়াজেই। রাতে বাহারি আলোয় কৃত্রিম পরিবেশে বাউলের আসরের সেই মাহাত্ম্য আর খুঁজে পান না রসিক জন। সকলেই মাইক, লাইট বর্জন করে অজয় নদের তীরে পুরোনো পরিবেশ ফেরাতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন সাধন বৈরাগী। "নিজে যদি হওগো ভালো ,ভালো দেখবে সকলকে", "আমরা নিরাকার বেড়ায় ঘুরে","ভালোবেসে ভালোবাসো মন"প্রভৃতি গান দেশ-বিদেশের মানুষকে আলোড়ন ফেলে দেয়।১৯৯১ সালে সাধন দাস ভারত উৎসবে যখন জাপান সফররত তখনই ওঁর গান শুনে মাকি চলে আসেন এ দেশে। সাধন দাসের তত্ত্বাবধানে বাংলা শিখে এরপর সাধনায় ডুবে মাকি হয়ে ওঠেন বাংলারই বাউলানি। এক সময় পৌঁষমেলায় শান্তিনিকেতনের মূল মঞ্চে তিনি প্রবেশাধিকারই পাননি বিদেশিনী বলে। কিন্তু আজ তিনি বিশ্বের দরবারে পশ্চিমবঙ্গের বাউল সমাজেরই উজ্জ্বল প্রতিনিধি।জীবনভর সম্মান, স্বীকৃতি কম পাননি। কিন্তু ক’বছর আগে পর্যন্তও, শরীর যত দিন দিয়েছে, তাঁকে দেখা গিয়েছে নতুন শিল্পীর প্রতিভা তৈরি করতে। ছুটে এসেছেন হাজার হাজার শিল্পী থেকে গবেষণারত পড়ুয়ারাও।কিন্তু এত সব কিছুও বদলাতে পারেনি তাঁর অনাড়ম্বর জীবনযাপনকে। বিচ্যুত করতে পারেনি তাঁর সাধনার পথ থেকে।
বীরভূমের ইলামবাজার থানার অন্তর্গত অজয় তীরবর্তী ক্ষুদ্র জনপদ জয়দেবে মনের মানুষ আখড়ায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।