Скачать или смотреть উত্তল দর্পণের ব্যবহার।

দর্পণ/আয়না(Mirror):যে মসৃণ তলে আলোক রশ্মি আলোর নিয়মিত প্রতিফলনের সূত্রানুযায়ী প্রতিফলিত হয়, তাকে দর্পণ/আয়না বলে।সাধারণত কাচের এক পিঠে ধাতুর(সাধারণত:রূপার) প্রলেপ লাগিয়ে দর্পণ তৈরি করা হয়। কাচের উপর ধাতুর প্রলেপ দেওয়াকে পারা লাগানো/সিলভারিং(Silvering) করা বলে।কাচের যেদিকে পারা লাগানো হয় তার বিপরীত পৃষ্ঠকে দর্পণের পৃষ্ঠ/প্রতিফলক পৃষ্ঠ বলে।পারা লাগানো কাচ ছাড়াও যে কোনো মসৃণতল যেমন পালিশ করা টেবিল, ধাতব পাত,স্থির পানি পৃষ্ঠ, পরিষ্কার পারদ পৃষ্ঠ ইত্যাদি সবই দর্পণ হিসাবে কাজ করে।

দর্পণের প্রকারভেদ(Types of Mirror):দর্পণ প্রধানত দুই প্রকার।যথা:
ক)সমতল দর্পণ(Plane Mirror)
খ)গোলীয় দর্পণ(Spherical Mirror)

সমতল দর্পণ: যে দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠ সমতল, তাকে সমতল দর্পণ বলে।যেমন:মুখ দেখার আয়না।

গোলীয় দর্পণ:যে দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠ কোনো গোলকের অংশ বিশেষ, তাকে গোলীয় দর্পণ বলে।

গোলীয় দর্পণ আবার দু'প্রকার।যথাঃ–
i)অবতল দর্পণ(Concave Mirror)
ii)উত্তল দর্পণ(Convex Mirror)

অবতল দর্পণঃ–কোনো ফাঁপা গোলকের ভিতরের পৃষ্ঠের কিছু অংশ যদি মসৃণ হয় এবং তাতে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে অর্থাৎ গোলকের অবতল পৃষ্ঠ যদি প্রতিফলকরূপে কাজ করে, তবে তাকে অবতল দর্পণ বলে।

কোনো স্বচ্ছ গোলকের খানিকটা অংশ কেটে নিয়ে তার বাইরের পৃষ্ঠে অর্থাৎ উত্তল পৃষ্ঠে পারা লাগিয়ে অবতল দর্পণ তৈরি করা যায়।

উত্তল দর্পণঃ–কোনো ফাঁপা গোলকের বাইরের পৃষ্ঠ যদি মসৃণ হয় এবং তাতে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে, অর্থাৎ গোলকের উত্তল পৃষ্ঠ যদি প্রতিফলকরূপে কাজ করে, তবে তাকে উত্তল দর্পণ বলে।

কোনো স্বচ্ছ ফাঁপা গোলকের কিছু অংশ কেটে নিয়ে তার অবতল পৃষ্ঠে পারা লাগিয়ে উত্তল দর্পণ তৈরি করা যায়।

গোলীয় দর্পণ সংক্রান্ত কয়েকটি সংজ্ঞাঃ–
i)মেরু(Pole):গোলীয় দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠের মধ্যবিন্দুকে দর্পণের মেরু বলে।

অবতল দর্পণের ক্ষেত্রে প্রতিফলক পৃষ্ঠের সবচেয়ে নিচু বিন্দু এবং উত্তল দর্পণের ক্ষেত্রে প্রতিফলক পৃষ্ঠের সবচেয়ে উঁচু বিন্দুই দর্পণের মেরু।

ii)বক্রতার কেন্দ্র(Centre of Curvature): গোলীয় দর্পণ যে গোলকের অংশ, তার কেন্দ্রকে ঐ দর্পণের বক্রতার কেন্দ্র বলে।

iii)বক্রতার ব্যাসার্ধ(Radious of Curvature): গোলীয় দর্পণ যে গোলকের অংশ, তার ব্যাসার্ধকে ঐ গোলীয় দর্পণের বক্রতার ব্যাসার্ধ বলে।বক্রতার ব্যাসার্ধকে সাধারণত r দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

iv)প্রধান অক্ষ(Principal Axis):গোলীয় দর্পণের মেরু ও বক্রতার কেন্দ্রগামী সরলরেখাকে দর্পণের প্রধান অক্ষ বলে।

v)গৌণ অক্ষ(Secondary Axis): মেরু বিন্দু ব্যতীত গোলীয় দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠের উপরস্থ যে কোনো বিন্দু এবং বক্রতার কেন্দ্র দিয়ে গমনকারী সরলরেখাকে দর্পণের গৌণ অক্ষ বলে।

vi)প্রধান ফোকাস(Principal Focus): গোলীয় দর্পণে আপতিত প্রধান অক্ষের নিকটবর্তী ও সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ প্রতিফলনের পর প্রধান অক্ষের উপরস্থ যে বিন্দুতে মিলিত হয় (অবতল দর্পণে) অথবা যে বিন্দু থেকে অপসৃত হয় বা ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে হয় (উত্তল দর্পণে) তাকে প্রধান ফোকাস বলে।প্রধান ফোকাসকে F দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

vii)ফোকাস দূরত্ব(Focal Length): গোলীয় দর্পণের মেরু থেকে প্রধান ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বকে ফোকাস দূরত্ব বলে।ফোকাস দূরত্বকে f দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

viii)ফোকাস তল(Focal Plane): কোনো গোলীয় দর্পণের প্রধান ফোকাসের মধ্য দিয়ে প্রধান অক্ষের সাথে লম্বভাবে যে সমতল কল্পনা করা হয় তাকে ফোকাস তল বলে।

ix)উন্মেষ(Aperture): দর্পণের প্রান্তবিন্দুদ্বয় বক্রতার কেন্দ্রে যুক্ত করলে যে কোণ উৎপন্ন হয়, তাকে দর্পণের কৌণিক উন্মেষ বা উন্মেষ বলে।