আবৃত্তি-আচার্য উৎপল কুণ্ডু ও তাঁর আবৃত্তি-আদর্শ নিয়ে জনপ্রিয় তথ্যচিত্র- অতএব উৎপল।

Описание к видео আবৃত্তি-আচার্য উৎপল কুণ্ডু ও তাঁর আবৃত্তি-আদর্শ নিয়ে জনপ্রিয় তথ্যচিত্র- অতএব উৎপল।

১৯৫০ সালের ২৮ শে সেপ্টেম্বর উৎপল কুণ্ডুর জন্ম।
এখনও, মানে এই ২০২৪ সালেও তিনি নিরন্তর নিমগ্ন আবৃত্তি-গবেষণায়। নির্মাণ করেছেন আবৃত্তির পূর্ণাঙ্গ ব্যাকরণ। তাঁর লেখা 'আবৃত্তিচর্চা বইটি আবৃত্তি শিক্ষার বেদ হিসেবে স্বীকৃত। তিনিই আবৃত্তির মহাগুরু। আবৃত্তির আশ্রয় ও বোধিবৃক্ষ।
অত্রিমুনির পত্নী যেমন সীতার চোখে মূর্তিমান গায়ত্রী ( অরণ্যকাণ্ড, কৃত্তিবাসী রামায়ণ ), জীবনানন্দ দাশ জীবনে আর সৃষ্টিতে যে অর্থে বাংলা কবিতা, সেভাবেই আবৃত্তি আর উৎপল কুণ্ডু সমার্থক।
এক জীবনের সাধনায় আবৃত্তিশিল্প তাঁর হাত ধরেই প্রাপ্তবয়স্ক হচ্ছে। জন্ম দেননি নিশ্চই। কিন্তু পরম পিতৃস্নেহে লালন করেছেন, বড়ো করে তুলেছেন, ভালোবেসেছেন কখনো মায়ের মতো, কখনো বা প্রেমিকার মতো। হাজার বছর পরেও যদি আমরা পথ হাঁটি, বাংলা ভাষা মানুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়, তখনও যদি বাঙালি আবৃত্তিচর্চা করে - উৎপল কুণ্ডুকে আবৃত্তির জনক বলা ছাড়া তাদের বিকল্প থাকবে না।

উৎপল কুণ্ডুর নানা দিক - আবৃত্তিশিল্পী, আবৃত্তির শিক্ষক,গবেষক ও ব্যাকরণ নির্মাতা, সুবক্তা, অসাধারণ গদ্যশিল্পী, ছন্দনীড়ের সম্পাদক ও সংগঠক, সাধক এবং সর্বোপরি মানুষ উৎপল কুণ্ডু।

একটা তথ্য হয়তো অপ্রাসঙ্গিক হবেনা, গত ২০২১ সালে কুচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা চালু করতে পেরেছি UGC অনুমোদিত আবৃত্তির একবছরের ডিপ্লোমা কোর্স। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যায়তনিক পরিসরে আবৃত্তিশিল্পের এই অন্তর্ভুক্তি নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক। তৎকালীন উপাচার্য ডঃ দেবকুমার মুখোপাধ্যায়ের অকুণ্ঠ এবং অবিরল সহযোগিতা এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। সিলেবাস তৈরী এবং অন্যান্য গুরুদায়িত্ব এই অধমের। কিন্তু নেপথ্যে পথ দেখিয়েছেন গুরু। তাই বকলমে এটাও উৎপল কুণ্ডুর একটা উল্লেখযোগ্য কাজ।
আবৃত্তিচর্চায় আগ্রহীদের চলার পথের পাথেয় তুলে দিতে উৎপল কুণ্ডু তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। যে কোনো শিল্পের ইতিহাসেই এই উৎসর্গের তুলনা নেই। সেই অনন্যতার কিছুটা ইঙ্গিত হয়তো এই তথ্যচিত্র দিতে পারবে। আবৃত্তির দেবতার কাছে প্রার্থনা করি আরেকজন উৎপল বা উৎপলতর কেউ আসুক। আবৃত্তির আগামী অপ্রতিহত হোক।
২০২২ সালে চিত্র পরিচালক পলাশ দাস নির্মাণ করেন ‘অতএব উৎপল’ তথ্যচিত্রটি।প্রযোজনায় ছিলেন সুমন্ত্র সেনগুপ্ত,জগন্নাথ ছত্তপাধ্যায়, চন্দন মজুমদার,পার্থপ্রতিম পান এবং পলাশ দাস। রোটারি সদনে ১৫ ই জুলাই,২০২২ শ্রদ্ধেয়া রত্না মিত্রের বাচিক সংস্থা বাকের উদ্যোগে ইতিহাস তৈরী হয় অতএব উৎপল এর প্রথম প্রদর্শনে। সন্ধে ঠিক ছটায় যখন আচার্য উৎপল কুণ্ডু যখন মঞ্চে আমন্ত্রিত হলেন তাঁকে টানা আড়াই মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল, কেননা চেয়ারে বসা, সিঁড়িতে বসা হল ভর্তি মানুষ তাঁকে Standing Ovation দিয়ে তাঁর সারা জীবনের সাধনাকে, আবৃত্তি শিল্পের ব্যাকরণ নির্মাণের আশ্চর্য কাজকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। দর্শকাশনে বসে বা দাঁড়িয়ে পুরো তথ্যচিত্র যাঁরা দেখেছেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিকাশ ভট্টাচার্য, ডাঃ শান্তনু বন্দোপাধ্যায়, বিজয়লক্ষ্মী বর্মণ, প্রণতি ঠাকুর,উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রাজশ্রী ভট্টাচার্য। তা ছাড়াও ছিলেন আবৃত্তি সংগীত জগতের বহু গুণী মানুষ এবং অনেক বিশিষ্ট কবি।৬-১০ এ হলের সমস্ত গেট বন্ধ করতে হয়েছিল এবং কয়েকশ মানুষ ঢুকতে না পেরে ফিরে গিয়েছিলন। তখন মনে হয়েছিল বাঙালী এখনও মরে যায়নি, প্রকৃত শিল্পসাধনার কাছে এখনও বাঙালি আভূমি প্রণত হতে জানে। প্রথম পরিবেশনের পর পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে অনেক বাচিক সংস্থার উদ্যোগে এই তথ্যচিত্র টি অনেক বার প্রদর্শিত ও সমাদৃত হয়েছে।

সম্প্রতি উৎপল কুণ্ডু কে নিয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়েছে। তাঁর শিষ্য ডাঃ পার্থপ্রতিম পানের সম্পাদনায় পরম্পরা প্রকাশনী থেকে আশি জন লেখকের লেখা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘আবৃত্তি-আচার্য উৎপল কুণ্ডু’ বই টি। ২৫ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, কলকাতার শিশির মঞ্চে বই টির মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডঃ পবিত্র সরকার।

Комментарии

Информация по комментариям в разработке