Скачать или смотреть সাজেক দারুস সালাম জামে মসজিদ। Ruilui Tripuri Para Sajek | সাজেক ও রুইলুই পাড়া।

সাজেক ভ্যালি :)


সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়ি জীবনধারা এবং অপূর্ব দৃশ্যের জন্য সুপরিচিত। সাজেক সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করছি:
সাজেকের অবস্থান ও উচ্চতা
সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা প্রায় ১,৮০০ ফুট, এটি বাংলাদেশের অন্যতম উঁচু পর্যটন স্থান করে তুলেছে।
পাহাড়ি সৌন্দর্য
সাজেকের মূল আকর্ষণ হলো বিস্তৃত পাহাড়ের সারি, যা “পাহাড়ের রানী” নামে পরিচিত।
রোদের সঙ্গে মেঘের লুকোচুরি এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য এখানে অসাধারণ।
অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হলো কংলাক চূড়া, যেখানে থেকে পুরো সাজেক ও মেঘমালা দেখা যায়।
সাজেকের মধ্যে দারুস সালাম জামে মসজিদ, যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত মসজিদ।
সাজেকের পাড়া বা গ্রামসমূহ
সাজেক ভ্যালিতে দুটি প্রধান গ্রাম রয়েছে: রুইলুইপাড়া এবং কংলাকপাড়া।
রুইলুইপাড়া সাজেকের প্রবেশদ্বার এবং মূল পর্যটন কেন্দ্র।
কংলাকপাড়া সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়ায় অবস্থিত। সুর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখার জন্য এখানে প্রায় সকল পর্যটক সকাল-সন্ধায় জড় হয়।
যাতায়াত ও নিরাপত্তা
সাজেকে যাওয়ার পথ রাঙামাটির বাঘাইহাট থেকে শুরু হয়ে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিচালিত হয়।
চট্টগ্রাম বা খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের সহজ যাতায়াত ব্যবস্থা রয়েছে।
সাজেকে ভ্রমণের সময় সেনাবাহিনীর অনুমতি প্রয়োজন হয়।
পর্যটন সুবিধা
সাজেক ভ্যালিতে পর্যটকদের জন্য আধুনিক কটেজ, রিসোর্ট ও খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনধারা এবং সংস্কৃতিও পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়।
কংলাক পাহাড়
কংলাক পাহাড়ের উপরে কংলাক পাড়া অবস্থিত। সাজেক ভ্যালি মূলত রুইলুই পাড়া এবং কংলাক পাড়ার সমন্বয়ে গঠিত। কংলাক পাহাড় থেকে লুসাই পাহাড় স্পষ্ট দেখা যায়। চারদিকে পাহাড়, সবুজ আর মেঘের অকৃত্রিম মিতালী চোখে পড়ে। সাজেক ভ্রমণরত পর্যটকদের কাছে এটি এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। রুইলুই পাড়া হতে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরত্বে এটি অবস্থিত; সাজেকের হ্যালিপ্যাড হতে ৩০-৪০ মিনিট ট্রেকিং করে কংলাক পাড়ায় যেতে হয়।
কংলাক পাড়াটি কমলাক পাড়া নামেও পরিচিত। স্থানীয় তথ্য মতে, এই পাড়াটির পাশে বড় বড় কমলা বাগান অবস্থিত বলে এটিকে কমলাক পাড়া বলা হয়। পাহাড়ের নিচে কংলাক ঝর্ণা অবস্থিত এবং এই ঝর্নার নামানুসারেই এই পাহাড়ের নামকরণ করা হয়েছে।
পাহাড়চূড়ার ছোট্ট গ্রামটিতে ত্রিপুরা ও লুসাই নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস৷ জুম চাষ এ পাড়ার প্রধান খাদ্য ও উপার্জনের উৎস। বেশি চাষ হয় হলুদ, আদা ও কমলার। কংলাকে পানি সংকট রয়েছে। প্রতিটি বাড়িতেই চোখে পড়বে একাধিক ও বড়বড় পানির রিজার্ভার। বৃষ্টির জমানো পানিই এ পাড়ার পানির মূল উৎস। অধিবাসীরা ঘরের চালা থেকে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে রিজার্ভারে ধরে রাখেন ও দৈনন্দিন কার্যাদি সম্পন্ন করেন।
সাজেক জামে মসজিদ
সাজেকের দারুস সালাম জামে মসজিদ বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত মসজিদ, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১,৭০০ ফুট উচ্চতায় সাজেক ভ্যালির রুইলুইপাড়ায় অবস্থিত। এই মসজিদটি ২০২০ সালে সেনাবাহিনী ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে নির্মাণ শুরু হয় এবং ২০২২ সালের পহেলা রমজানে উদ্বোধন করা হয়। নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩.৮৫ কোটি টাকা।
মসজিদটির আয়তন ৫,২৬৫ বর্গফুট। এতে রয়েছে চারটি গম্বুজ ও একটি সুউচ্চ মিনার। এখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি জুমা ও তারাবি পড়া হয়। মসজিদটি পরিচালিত হয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে।
এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পেরে ভীষণ প্রশান্তি অনুভব করছি। তবে পানির অভাবের কারণে দৈনিক ৫,০০০ লিটার পানি কিনতে হয়। এই খরচ মেটাতে দান-অনুদানের ওপর নির্ভর করতে হয়। তবুও সকলের সহযোগিতায় মসজিদটি নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

দারুস সালাম জামে মসজিদ, রুইলুই পাড়া, সাজেক।সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৭০০ ফুট উপরে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র জামে মসজিদ।