আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন | নায়ক জসিম । লটারি জসিম । jashim
#jashim #নায়কজসিম #জসিমউদ্দিন #জসিম
কিংবদন্তি নায়ক জসিম অভিনীত অনেক ছবিতেই তিনি লটারি জিতেছিলেন কিন্তু ভাগ্যটা বেজায় খারাপ। কারণ লটারি জিতে টাকা হাতে যেই বাড়ি ফেরে রাস্তায় ওৎ পেতে থাকে গুণ্ডার দল আর কেড়ে নেয় সব। জসিমও ওদের উচিত শিক্ষাটা দিয়ে দেয়। হঠাৎ চলে না গেলে আরো অনেক সিনেমাতেই হয়তো লটারি জিতত আর গিনেসে নামটা উঠলেও উঠতে পারত।
১৯৫১ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার নবাবগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জসিম। পুরো নাম আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন। একইসঙ্গে অভিনেতা, অ্যাকশন ডিরেক্টর, প্রযোজক, পরিবেশক। প্রথম ছবি ‘দেবর’ এবং অ্যাকশন ডিরেক্টর ‘রংবাজ’ ছবিতে। নায়ক হিসেবে প্রথম ছবি ‘মোকাবেলা।’ পড়াশোনা করেন বিএ অনার্স।
জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছিলেন জসিম। সারাদিন, সারা রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করতেন। সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে পারিশ্রমিক পেয়েছেন ১০ টাকা। সে জায়গা থেকে হয়ে ওঠেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্রিয় নায়ক। অনেকেই তাকে বাংলা সিনেমার অ্যাকশনের পথপ্রদর্শক মনে করেন।
জসিম ভেবেছিলেন ফাইট ডিরেক্টর হিসেবে ক্যারিয়ার গড়বেন। পাশাপাশি ফাইটার হিসেবে কাজ করবেন। কিন্তু সেখান থেকে নায়ক হিসেবে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন। জীবনের শেষ সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছিলেন জসিম।
সিনেমার ফাইট ডিরেক্টর হিসেবে জসিম নিজেকে মেলে ধরেছিলেন মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে। পশ্চিমা সিনেমা থেকে ধারণা নিয়ে ফাইট প্রয়োগ করতেন তিনি। এক সময় পর্দার নাম করা ভিলেন ছিলেন জসিম। বেশ কিছু সিনেমায় ভিলেনের ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে।
নায়কের সঙ্গে ফাইট করার সময় দর্শকরা ভিলেন জসিমের জন্য হাততালি দিতেন। সেই সূত্র ধরেই পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু ‘অমর শরীফ’ সিনেমায় জসিমকে নায়ক হিসেবে বেছে নিলেন। সেই সময় সিনেমা এত জনপ্রিয় হয়েছিল যে তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি।
শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন নায়ক জসিম। জসীম অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে—দেবর, রংবাজ, দোস্ত দুশমন, মহেশখালির বাঁকে, বারুদ, বদলা, কসাই, বাহাদুর, এক মুঠো ভাত, সুন্দরী আসামি হাজির, প্রতিহিংসা, মান-সম্মান, লাইলী মজনু, নাজমা, গাদ্দার, সবুজ সাথী, সিআইডি, লাভ ইন সিঙ্গাপুর, অভিযান, আক্রোশ, দি রেইন, কুয়াশা, প্রতিজ্ঞা, এপার-ওপারমেয়েরাও মানুষ, ভালোবাসার ঘর, ঘাত-প্রতিঘাত, পরাধীন, লাট সাহেব, কালিয়া, বিজয়, ছোট বউ, জিদ্দি, ওমর আকবর, রক্তের বদলা, চিরশত্রু, লক্ষ্মীর সংসার, লালু মাস্তান, টাইগার, কাজের বেটি রহিমা ও বাংলার নায়ক।
ব্যক্তিগত জীবনে দুবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন জসিম। প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী সুচরিতা এবং দ্বিতীয় স্ত্রী নাসরিন। নাসরিন আশি-নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়িকা এবং বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে। জসিম-নাসরিন দম্পতির তিন ছেলে সামি, রাতুল ও রাহুল যারা তিনজনই সঙ্গীতের সাথে যুক্ত ।
১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যান জসিম। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল পুরো ফিল্মপাড়ায়। প্রয়াত এ নায়ককে স্মরণীয় করে রাখতে এফডিসিতে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা জসিম ফ্লোর’। জসিম আজও আছেন অসংখ্য বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের অন্তরে, তার কাজের মাধ্যমে।
Информация по комментариям в разработке