বিড়ি সিগারেট কেন হারাম? মাওলানা এম রজিব কাজলাবী হুজুরের লিখিত বই পড়ুন।
মহান আল্লাহ সুরা আল-মায়িদা ৯০ নম্বর আয়াতে ফরমান:
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡخَمۡرُ وَ الۡمَیۡسِرُ وَ الۡاَنۡصَابُ وَ الۡاَزۡلَامُ رِجۡسٌ مِّنۡ عَمَلِ الشَّیۡطٰنِ فَاجۡتَنِبُوۡهُ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
অর্থঃ ‘হে মু’মিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি ইত্যাদি এবং লটারীর তীর, এ সব গর্হিত বিষয়, শাইতানী কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং এ সব থেকে সম্পূর্ণ রূপে দূরে থাক, যেন তোমাদের কল্যাণ হয়।
আল্লাহ তা‘য়ালা আরো বলেনঃ
اِنَّمَا یُرِیۡدُ الشَّیۡطٰنُ اَنۡ یُّوۡقِعَ بَیۡنَکُمُ الۡعَدَاوَۃَ وَ الۡبَغۡضَآءَ فِی الۡخَمۡرِ وَ الۡمَیۡسِرِ وَ یَصُدَّکُمۡ عَنۡ ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ عَنِ الصَّلٰوۃِ ۚ فَهَلۡ اَنۡتُمۡ مُّنۡتَهُوۡنَ
অর্থঃ ‘নিশ্চয় শয়তান মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদের আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে বিরত রাখতে চায়, তবু কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না।
নিশা কি?
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেনঃ كُلُّ مُسْكِرٍ خَمْرٌ وَكُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: وَكُلُّ خَمْرٍ حَرَامٌ অর্থঃ প্রত্যেক নেশাকর বস্তুুই। আর প্রত্যেক নেশাকর বস্তুুই তো হারাম। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, প্রত্যেক মদ জাতীয় বস্তুুই হারাম”
মাদক দ্রব্যের প্রকারভেদঃ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( ডঐঙ) এর মতে মাদক দ্রব্যের আন্তর্জাতিক কয়েকটি প্রকার হলোঃ
(১) নারকটিক জাতীয় মাদক দ্রব্যঃ যেমন: হেরোইন,মরফিন,আফিম,পেথিডিন, কোডিন,ফেনসিডিল,মেথাডন ইত্যাদী।
(২) বারবিচুয়েট জাতীয় মাদক দ্রব্যঃ যেমন: ফেনোবারটন,পেনটোবারবিটন জাতীয় মাদক দ্রব্য।
(৩) প্রশান্তি জাতীয় ঔষধঃ ডায়াজিপাম,নাইট্রাজেপাম,ক্লোবাজাম,লরাজেপাম ইত্যাদী। এ সব ঔষধ মাদক হিসেবে গ্রহণ করা সম্পুর্ণ হারাম। তবে যাদের ঘুম হয়না,তারা ডাক্তারের পরামর্শে সেবন করতে পারবে।
(৪) সরাসরি মদ জাতীয়ঃ যেমন: বিয়ার,ব্রান্ডি,হুইসকি,ভদকা,রাম,বাংলা মদ,তাড়ি,জিন,রেকটিফাইড স্পিরিট, এছাড়া ৫% এর অধিক এলকোহলযুক্ত যেকোন তরল পদার্থ মদের অন্তভুক্ত।
(৫) ক্যানাবিস জাতীয় মাদক যা মানুষের ¯œায়ুকে উত্তেজিত করেঃ গাঁজা, মারিজুয়ানা, ভাং, হাশিশ, চরস, সিদ্ধি।
(৬) এমফেটামিন জাতীয়ঃ রিটালিন, ডেকসোড্রিন, মেথিড্রিন।
(৭) কোকেইন জাতীয়ঃ কোকেইন বড়ি, নস্যি বা পেস্ট।
(৮) মায়াবিভ্রম উৎপাদনকারী মাদকঃ এলএসডি, মেসকেলিন।
(৯) তামাক জাতীয়ঃ বিড়ি, চুরুট, সিগারেট, হুক্কা, জর্দা, সাদাপাতা, খৈনী, দাঁতের গুল, নস্যি, ভিক্স ইত্যাদি। উল্লেখ্য, যেসব তামাকজাত দ্রব্যের নিকোটিন স্নায়ুতন্ত্রের নিকোটিনিক রিসেপ্টরে যুক্ত হয়ে নেশার সৃষ্টি করে, অনুভূতিকে প্রভাবিত করে; ইসলামে তাও নিষিদ্ধ। কারণ এসব তামাকজাত দ্রব্যে কেউ আসক্ত হলে যেমন সে ইচ্ছা করলেও তা সহজে ছাড়তে পারেনা। আবার তামাকজাত দ্রব্য তথা বিড়ি-সিগারেট, জর্দা ও গুলসহ সব দ্রব্যের কারণে ক্যান্সার, হার্ট, ফুসফুস আক্রান্ত ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সে কারণে এসব গ্রহণ করাও ইসলামে সুস্পষ্ট হারাম।
(১০) বিবিধ মাদকদ্রব্যঃমরফিন ধরনের ঔষধ দেহের যন্ত্রণা কমায় এবং ঘুম পাড়ায় খুব তাড়াতাড়ি। ঘুমের তথাকথিত দেবতা ‘‘মারফিউস’’ এর নামানুসারে এর নাম রাখা হয় মরফিন। এ থেকে আরও শক্তিশালী যন্ত্রণা কমানোর ঔষধ আবিষ্কার হয়েছে যেমন হেরোইন। এটা কখনো বাদামী রং এবং কখনো সাদা রং এর পাউডার হিসেবে পাওয়া যায়। মরফিন ও হেরোইন ধুমপানের সঙ্গে কিংবা নাকের ভিতর দিয়ে টেনে বা রক্তনালীর মধ্যে ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশার কাজে ব্যবহার করা হয়।
Информация по комментариям в разработке