#counting of zakat#measurment
How to create measurement of zakat easily
যাকাতের হিসাব করবেন কিভাবে?
-----------------------------------------------
শাইখুল হাদীস হুসাইন আহমদ বাহুবলী
-------------------------------------------------------
আমাদের যে সম্পদের উপর যাকাত আসে তা সাধারণত চার প্রকার হয়ে থাকে।
প্রথম প্রকার, স্বর্ণ।
দ্বিতীয় প্রকার, রৌপ্য।
স্বর্ণ এবং রৌপ্য যেকোনো রূপে বা আকারে, যে কোন উদ্দেশ্যে, আপনার মালিকানায় থাকুক,
যেমন- অলংকার হিসেবে, বাণিজ্যিক আকারে কিংবা কারো নিকট আমানাত বন্ধক রাখা স্বর্ণ।
যেকোনো ভাবে আপনার মালিকানায় থাকলেই হল। এর উপর যাকাত আসবে।
দ্বিতীয় প্রকার, টাকা।
আমাদের কাছে থাকতে পারে
ক) নগদ টাকা।
খ) কারও নিকট আমানত রাখা টাকা।
গ) ভবিষ্যতের কোনো উদ্দেশ্যে জমানো টাকা।
যেমন হজ, বিয়ে-শাদী, ঘর নির্মাণের উদ্দেশ্যে জমানো টাকা।
ঘ) ব্যাংকে জমানো টাকা বৈদেশিক মুদ্রা হলে তার মার্কেট মূল্য।
ঙ) বীমা-ইন্সুরেন্সে জমানো টাকা এবং প্রাইজবন্ড।
চ) কর্জ টাকা যা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ছ) যেকোনো ফেরত যোগ্য টাকা।
যেমন এডভান্স সিকিউরিটি, জামানত রাখা টাকা যার মূল্য বা বিকল্প আসবে।
জ) মুদারাবা সঞ্চয়ী ফান্ড অংশীদারিত্বের চুক্তিতে যে পুঁজি বিনিয়োগ করা হয় তার মূল পুঁজি এবং মুনাফাসহ হালাল টাকা।
হারাম টাকায় যাকাত আসে না। হারাম টাকা সম্পূর্ণভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেওয়া অতীব জরুরী।
চতুর্থ প্রকার,
ব্যবসায়িক সম্পদ।
ক) দোকানের মালামাল। বিক্রির উদ্দেশ্যে ক্রয় করা জমি, গাড়ি, গরু, ছাগল, পাখি ইত্যাদি।
খ) কোম্পানির শেয়ার মূল্য।
উপরোক্ত সকল খাতে আপনার মালিকানার সকল সম্পদ যোগ করে যে টাকাটা হবে,
সেই টাকা থেকে আপনি বিয়োগ করবেন,
১) সকল প্রকার ভাড়া- বিল। যেমন, বাড়ি, দোকান, গুদাম, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ইন্টারনেট বিল।
২) কর্মচারীর বেতন। আপনার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হোক অথবা বাড়িঘরের হোক।
৩) বাকিতে ক্রয় কৃত পণ্যের মূল্য বা যে কোন প্রকার ঋণ।
৪) বিগত বছরের অনাদায়ী যাকাত এর পরিমান।
(এই পরিমাণটা যাকাতের জন্য বের করাটা কার সাথে বিতরণ করে দিতে হবে)
মোট সম্পত্তি থেকে এই চার খাতের মোট টাকা বিয়োগ করে, দেখতে হবে আপনার মালিকানায় মোট কত টাকা অবশিষ্ট আছে?
এরপর যাকাত দেয়ার আগে আপনার নেসাব চিহ্নিত করতে হবে।
যাকাতের নেসাব দুই প্রকার:
দরিদ্রবান্ধব নেসাব:
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য দুটি পরিমাণের তুলনামূলক কম পরিমাণ সম্পদকে যাকাতের নেসাব হিসেবে ধর্তব্য করে যাকাত প্রদানের এগিয়ে আসা।
স্বার্থ বান্ধব নেসাব:
দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কম দেয়ার অথবা একেবারে না দেয়ার উদ্দেশ্যে দুটি পরিমাণের তুলনামূলক বড় পরিমাণকে যাকাতের নেসাব হিসেবে ধর্তব্য করে, কম দেয়ার অথবা যাকাত থেকে পালানোর চেষ্টা করা।
দরিদ্রবান্ধব নেসাব হচ্ছে,
সাড়ে ৫২ তোলা বা ৬১২.৩৫ গ্রাম রৌপ্য। যার বর্তমান বাজারমূল্য এক হাজার টাকা ভরি হলে ৫২,৫০০ (বায়ান্ন হাজার পাঁচশত) টাকা হয়।
আর স্বার্থ বান্ধব নেসাব হচ্ছে,
অথবা সাড়ে ৭ তোলা বা ৮৭.৪৫ গ্রাম স্বর্ণ। যার বর্তমান বাজার দর আটচল্লিশ হাজার টাকা ভরি হলে ৩,৬০,০০০ (তিন লক্ষ ষাট হাজার) টাকা হয়।
শরিয়া আপনাকে স্বাধীনতা দিয়েছে দরিদ্রবান্ধব নেসাব অথবা স্বার্থ বান্ধব নেসাব এর যেকোন একটি বেছে নেয়ার।
আর কোন নেসাব বেছে নিলে আপনার আখেরাত উজ্জল হয় সেটা খুবই সুস্পষ্ট।
এবার দেখুন আপনার মোট সম্পদ উল্লেখিত দুটি নেসাবের কোন একটির পরিমাণ অথবা বেশি কিনা?
যদি
ক) কোন একটির পরিমাণ অথবা বেশি হয়,
খ) এই পরিমাণ সম্পদ আপনার জরুরী প্রয়োজনের অতিরিক্ত হিসেবে,
গ) এক বছর পর্যন্ত আপনার কাছে স্থায়ী হয়।
তাহলে এই অতিরিক্ত সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ, বা শতকরা আড়াই টাকা বা হাজারে ২৫ টাকা বা লাখে আড়াই হাজার টাকা,
কুরআনে বর্ণিত যাকাত বন্টনের সুনির্দিষ্ট আটটি খাতের কোন একটিতে অথবা সকলটিতে বন্টন করে দেয়া আপনার উপর ফরজ।
এবার বুঝুন জরুরী প্রয়োজন কি?
আমার ওস্তাদ আল্লামা ইসহাক জালালাবাদী তাঁর হাদীসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা গ্রন্থ দরসে মিশকাতের ২য় খণ্ডের ১৮৫নং পৃষ্ঠায় জরুরি প্রয়োজনে সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
আপনার জরুরী প্রয়োজন নির্ভর করে আপনি কোন পেশার মানুষ।
এক.
আপনি যদি কৃষক হয়ে থাকেন তাহলে,
এক মৌসুম থেকে আরেক মৌসুম পর্যন্ত খানা পিনা, নিত্য প্রয়োজন সেরে আবার ফসলের মাঠ প্রস্তুতের সামর্থ্য থাকা আপনার জরুরী প্রয়োজন। এর অতিরিক্তটা নেসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে।
দুই.
আপনি যদি ব্যবসায়ী হন তাহলে আপনার প্রথমবার হাট করে অথবা দোকানে পণ্য তোলে, আরেকবার পণ্য তোলা পর্যন্ত আপনার খানাপিনা, নিত্য প্রয়োজন পরবর্তী পণ্য কেনা পর্যন্ত সামর্থ্য থাকা আপনার জরুরী প্রয়োজন। এর বাহিরে যা থাকবে তা নেসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে।
তিন.
আপনি যদি চাকুরীজীবী হন তাহলে দেখতে হবে আপনি কতদিন পর পর বেতন পান।
যদি বাৎসরিক হিসেবে বেতন পান তাহলে এক বৎসরের খানাপিনা ও নিত্যপ্রয়োজন সারার মত সম্পদ আপনার জরুরী প্রয়োজন,
যদি মাসিক হিসেবে বেতন পান তাহলে এক মাসের খানাপিনা ও নিত্যপ্রয়োজন সারার মত সম্পদ আপনার জরুরী প্রয়োজন,
যদি সপ্তাহিক বেতন পান তাহলে এক সপ্তাহের খানাপিনা ও নিত্যপ্রয়োজন সারার মত সম্পদ আপনার জরুরী প্রয়োজন,
যদি দৈনিক বেতন পান তাহলে একদিনের খানাপিনা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সম্পদ আপনার জরুরী প্রয়োজন। এর অতিরিক্ত যে টাকা থাকবে তা নেসাবে অন্তর্ভুক্ত হবে।
যাকাত বন্টনের আটটি খাত,
১. ফকীর ২.মিসকিন ৩. যাকাত আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা ৪. নওমুসলিম ৫. বন্দিমুক্তি ৬. ঋণগ্রস্ত ৭. আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদ, মুবাল্লিগ, মুআল্লিম মুতাআল্লিম ও ৮. মুসাফির
(সূরা আত তাওবা আয়াত নং ৬০)
Информация по комментариям в разработке