লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর ঠাকুরগাঁও। Lokayan Park Thakurgaon। kabir bokul।
লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁও
লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর
ঠাকুরগাঁও জেলার আকচা গ্রামে অবস্থিত একটি ব্যতিক্রমী দর্শনীয় স্থান লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর (Lokayan Life Diversity Museum)। শ্রমজীবী মানুষ ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনজীবনকে কেন্দ্র করে লোকজ সংস্কৃতি, শ্রমজীবী মানুষের ব্যবহৃত নানা উপকরন ও জীবন বৈচিত্রের নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই জাদুঘরে। হাজার বছরের বাঙ্গালীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে ২০০৬ সালে ড. মুহম্মদ শহীদ-উজ-জামান এই লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন।
লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘরের বিশাল চত্বর জুড়ে প্রায় ৭০ ধরনের বিভিন্ন ধরনের ফল ও ১২০ ধরনের ঔষধি গাছ-গাছালী রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তৃনমূল লোকজ গ্যলারি হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও পরবর্তীতে এখানে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ভিত্তিক সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গ্যালারি, নদী গ্যালারি ও মুক্তিযুদ্ধ গ্যলারি যুক্ত করা হয়। এখানে প্রাচীন কাল থেকে কৃষি কাজে ব্যবহৃত ও লোকজ ঐতিহ্যের বিভিন্ন উপাদান, শ্রমজীবী বা সাধারন মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহৃত জিনিস, মাদল, সানাই, পালকি ও টোপরের মতো প্রাচীন বৈবাহিক উপকরন, একতারা, দোতারাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র, নদ নদীর তালিকা, মৎস্য ও জলজ উদ্ভিদ সম্পর্কিত তথ্য, মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরন ও ইতিহাস, ব্রিটিশ আমলের হাতে লেখা অস্পষ্ট দলিল, চিঠিপত্র, পুঁথি ও জমিদারের খাজনা আদায়ের রশিদের মতো অসংখ্য জিনিস সংরক্ষণ করা হয়েছে।
পাখির কলকাকলিতে পরিপূর্ণ লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘরে ছোটদের জন্য রয়েছে দোলনা, চরকি, ঢেঁকি সহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের আয়োজন, দর্শনার্থীদের বসার জন্য বাঁশের মাচা, গাছের গুড়ি দিয়ে তৈরি চেয়ার ও টেবিল। আবার বর্ষা, হেমন্ত ও শীতকে কেন্দ্র করে জাদুঘর প্রাঙ্গনে বর্ষামঙ্গল, নবান্ন ও পিঠা উৎসবের মতো ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। আর এসব অনুষ্ঠানে স্থানীয় লোকনাট্য ধর্মের গান, কবিগান, গীত ও আদিবাসী নাচ-গান পরিবেশন করা হয়।
সময়সূচী ও প্রবেশ মুল্য
সোমবার হতে শনিবার প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর খোলা থাকে। সাধারণ সকল দর্শনার্থীদের জন্য এখানে প্রবেশ টিকেটের মূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা হলেও শিক্ষা সফরে আগত শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারে।
যোগাযোগ: কলেজ পাড়া (গোবিন্দনগর), ঠাকুরগাঁও – ৫১০০
ফোন: +880-561-52149, +880-561-61599
মোবাইল: +88-01714-063360
ইমেইল: [email protected]
ওয়েবসাইট: www.lokayanmuseum.org
কিভাবে যাবেন
দেশের যেকোন জায়গা থেকে বাস, ট্রেন বা নিজস্ব পরিবহনে ঠাকুরগাঁও যেতে পারবেন। কর্ণফুলি পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, নাবিল পরিবহন, বাবলু এন্টারপ্রাইজ এবং কেয়া পরিবহনের বাস ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রুটে চলাচল করে। এছাড়া ঢাকার কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে ষ্টেশন হতে লালমনিরহাট বা ঠাকুরগাঁও রুটে চলাচলকারী যেকোন ট্রেনে ঠাকুরগাঁও যেতে পারবেন। বাস ভেদে ভাড়া পড়বে ৫৫০-৬০০ টাকা আর ট্রেনের ভাড়া ৪০০-৯০০ টাকা।
ঠাকুরগাঁও শহর থেকে রিক্সা বা অটো রিকশায় ডায়াবেটিস হাসপাতালের পাশের রাস্তা দিয়ে ৪ কিলোমিটার দূরে আকচা গ্রামে অবস্থিত লোকায়ন জাদুঘরে যাওয়া যাবে।
কোথায় থাকবেন
ঠাকুরগাঁওয়ের নর্থ সার্কুলার রোডে হোটেল সালাম ইন্টার ন্যাশনাল, হোটেল প্রাইম ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল শাহ্ জালাল ও হোটেল সাদেকের মতো বেশ কিছু আবাসিক হোটেল আছে। এছাড়া সরকারী সার্কিট হাউজ ও জেলা পরিষদের রেস্ট হাউজের প্রয়োজনে থাকতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
ঠাকুরগাঁও সদরে মুন্সির হোটেল, উজ্জল হোটেল, বাবুর হোটেল, শহিদুল হোটেল, নিরিবিলি হোটেল, আনসারি হোটেল ও নিউ সুরুচি হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের মতো বেশকিছু স্থানীয় খাবারের রেস্টুরেন্ট আছে। কয়েক ধরনের শুঁটকি ও মশলা মিশিয়ে বানানো “সিদল ভর্তা” এবং চালের গুড়ার তৈরী পিঠা ঠাকুরগাঁও জেলার জনপ্রিয় খাবার।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
ঠাকুরগাঁওয়ের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে বালিয়াডাঙ্গী সূর্যপূরী আমগাছ, বালিয়া মসজিদ ও ফানসিটি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
Информация по комментариям в разработке