Скачать или смотреть স্বাবলম্বী প্রজেক্ট | টিম খাগড়াছড়ি

“ভাই, এই ইদে একজন অসচ্ছল লোককে লুঙ্গি কিনে দিয়েছিলাম। ঝালমুরি বিক্রেতা। লোকটা টাকার অভাবে ঘরবন্দী হয়ে আছে। পুরো রমজানমাস স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় বিক্রির জন্য বের হতে পারেনি। এর মাঝে স্বল্প পুঁজির এ দোকানির সব ফুরিয়েছে। এর জন্য কিছু করা যায় কি?” কথাগুলো বলছিলো ছোট ভাই আতিক উল্লাহ।
খোঁজ নিয়ে দেখতে পেলাম তিনি পরিচিত এক ঝালমুড়িওয়ালা। যিনি প্রায় ২০ বছরেরও অধিক সময় ধরে খাগড়াছড়িতে ছোট্ট ভ্যান নিয়ে বিভিন্ন যায়গায় ঝালমুড়ি বিক্রি করছেন। আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখনো উনার কাছ থেকে ঝালমুড়ি খেয়েছি। উনাকে কিছু করে দিতে পারলে আত্মতৃপ্তি পাবো।
বললাম, “ঠিক আছে, আমাদের পরবর্তী স্বাবলম্বী প্রজেক্ট – ২ উনার জন্য বরাদ্দ করা হলো”।
এর মাঝে আমাদের প্রথম স্বাবলম্বী প্রজেক্টটি দেখে খাগড়াছড়ির সম্মানিত রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জনাব গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ মাহি ‘খাগড়াছড়ি রিজিয়ন সদরদপ্তর’ থেকে স্বাবলম্বী প্রজেক্ট এর জন্য সহযোগিতা করার ইচ্ছে পোষণ করেন। আমিও অত্যন্ত খুশি হয়ে গেলাম।
খোঁজ নিলাম আশেপাশে এমন আর কোনো ছেলে-পেলে আছে কি-না যাদের অল্প সহযোগিতা করলে তারা নিজেদের ব্যবসাটাকে এগিয়ে নিতে পারবে। ‘টিম খাগড়াছড়ি’ সদর ইউনিট ১ ও সদর ইউনিট ২ তে আমি পোস্ট করি, যেখানে প্রায় ৩০০+ সদস্য রয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী শরীফ সরকার আমায় ম্যাসেজ দেয়। "আমাদের অফিসের সামনে একটি ছেলে চা দোকান করে। পুঁজির অভাবে দোকান শুরু করতে পারছে না। ৫ সদস্যের পরিবারে স্ত্রী, সন্তান ও মা’কে নিয়ে তার পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আপনি এ ছেলেটাকে দেখতে পারেন সহযোগিতা করার জন্য।" আমিও খোঁজ নিয়ে দেখলাম ছেলেটিকে সহযোগিতা করা যায়।
এদিকে ইয়সিন আরাফাত নক দিয়ে বললেন, “আমাদের মুসলিমপাড়া এলাকায় একজন মহিলা একটি দোকান করে্ন। খুবই কষ্ট করে চা দোকানটা চালায়। ছোট এক ছেলেকে মাদ্রাসায় পড়াচ্ছে। স্বামী যখন সামনে যে ব্যবসা পায় সেটাই করে। আপনাদের স্বাবলম্বী প্রজেক্ট থেকে উনাকে সহযোগিতা করা যায় কি-না?" খোঁজ নিয়ে দেখলাম দোকানে তেমন কোনো মালামালই নেই, তাকেও সহযোগিতা করা যায়।
এর মাঝে রিজিয়ন কমান্ডার মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করতে যাই শরিফ সরকারকে নিয়ে। সহযোগিতা করেন মেজর জাহিদ (GSO-2 of Region HQ)। সম্মানিত রিজিয়ন কমান্ডার জনাব মহিউদ্দিন আহমেদ মাহি আমাদের আপ্যায়ন করেন। এছাড়াও আমাদের স্বেচ্ছাসেবি কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তাঁকে জানাই, তিনিও পরামর্শ দেন। শেষে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন এর পক্ষ থেকে উপরের তিনটি প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য আমাদের হাতে ২০,০০০ টাকা তুলে দেন।
সে টাকা দিয়ে ঝালমুড়ি বিক্রেতার ভ্যান মেরামতসহ ৩ টি দোকানেই বিভিন্ন মালামাল তুলে দেই গতকাল। মালামাল দিয়ে দোকান সাজানোর সময় রিজিয়ন সদর দপ্তর থেকে একজন ক্যাপ্টেনসহ উপস্থিত ছিলেন ‘টিম খাগড়াছড়ি’ এর বেশ ক’জন স্বেচ্ছাসেবী।
খাগড়াছড়ির সর্ববৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম ‘Khagrachari’ ফেসবুক গ্রুপের সিস্টের কনসার্ন ‘Team Khagrachari’ এর স্বাবলম্বী প্রজেক্ট বাস্তবায়নে খাগড়াছড়ি রিজয়ন সদর দপ্তর সহযোগিতা করায় ‘টিম খাগড়াছড়ি’ এর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
আশাকরছি আগামীতেও খাগড়াছড়ি রিজিয়নসহ সকল শুভাকাঙ্খীকে আমাদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে পাশে পাবো।

Music copied from #ncs