Скачать или смотреть ৮ দিনে ঘুরে নিন হরিদ্বার, ঋষিকেশ ও আওলি || পাহাড়, বরফ আর গঙ্গারতির সফর – সম্পূর্ণ গাইড

৮ দিনে ঘুরে নিন হরিদ্বার, ঋষিকেশ ও আওলি!
পাহাড়, বরফ আর গঙ্গারতির সফর – সম্পূর্ণ গাইড!
হরিদ্বার থেকে আওলি – এক অপরূপ ট্র্যাভেল কাহিনি
উত্তরাখণ্ডের ৩ রত্ন – হরিদ্বার, ঋষিকেশ, আওলি
গঙ্গার তীরে আধ্যাত্মিকতা, পাহাড়ে বরফের মায়া!
সপ্তাহে তিন শহর – ছুটির মরশুম শুরু হোক!

ছুটির মরশুমে পাহাড় ডাকছে – হরিদ্বার, ঋষিকেশ ও আওলি ভ্রমণের গল্প

সময়কাল: ৮ দিন, ৭ রাত
সূত্রপাত: কলকাতা থেকে

১ম দিন – কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু

ছুটির মরশুম এসে গেছে, আর মনটা ছুটির মতোই পাখা মেলেছে। হরিদ্বার, ঋষিকেশ আর স্নো-ক্লাদ আওলি—এই তিন গন্তব্যকে ঘিরে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করলাম এক পাহাড়ি অভিযানের।
সন্ধেবেলায় হাওড়া স্টেশন থেকে হরিদ্বারের উদ্দেশে ট্রেনে রওনা দিলাম। প্যাসেঞ্জার ট্রেনের জানালা দিয়ে দূরে চলে যাওয়া আলো আর তালের পাতার মত ছুটে চলা দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিল—একটা নতুন কাহিনির শুরু।

২য় দিন – হরিদ্বার দর্শন

পরদিন সকালে পৌঁছলাম হরিদ্বারে। গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে প্রথম বার যে অনুভূতি—সেটা ভাষায় বোঝানো মুশকিল।
হর কি পৌরি-তে গঙ্গাজলে পা ছুঁয়ে মনে হলো, যেন পাপ ভেসে গেল। বিকেলে গঙ্গারতি দেখলাম—দীপের আলো, ঘণ্টার ধ্বনি, ভক্তদের কণ্ঠে ভজন—সব মিলিয়ে এক অপার্থিব অভিজ্ঞতা। রাতে স্থানীয় হোটেলে থাকলাম।

৩য় দিন – ঋষিকেশ যাত্রা ও সন্ধ্যার গঙ্গারতি

সকালে প্রাতঃরাশ সেরে চললাম ঋষিকেশের দিকে। রাস্তায় পাহাড়ের কোল ঘেঁষে চলা গঙ্গা যেন আমাদের সঙ্গী হয়ে উঠেছিল।
লক্ষ্মণ ঝুলা, রাম ঝুলা, ত্রিবেণী ঘাট, আর বিটল্‌স আশ্রম দেখে মন ভরে গেল। বিকেলে আবার একবার গঙ্গারতি—এবার ঋষিকেশে। শান্ত, ধ্যানমগ্ন পরিবেশ মনটাকে এক অন্য জগতে নিয়ে গেল।

৪র্থ দিন – ঋষিকেশ থেকে জোশীমঠ হয়ে আওলি

ভোরে ঋষিকেশ থেকে গাড়ি নিয়ে রওনা হলাম আওলি-র দিকে। পথ দীর্ঘ হলেও সৌন্দর্যে ভরপুর।
দেবপ্রয়াগ, রুদ্রপ্রয়াগ, কর্ণপ্রয়াগ পেরিয়ে জোশীমঠে পৌঁছালাম বিকেলে। রাস্তার ধারে চা আর পাকোড়ার স্বাদ যেন পাহাড়ি ক্লান্তিকে ভুলিয়ে দিল। জোশীমঠে একরাত থেকে গেলাম।

৫ম দিন – আওলি: তুষাররাজ্যে একদিন

সকালে কেবল কারে করে ওপরে উঠলাম আওলিতে। চারদিক বরফে মোড়া। মনে হচ্ছিল যেন কেউ তুলোর চাদর বিছিয়ে রেখেছে পাহাড়ের গায়ে।
স্কিইং করার চেষ্টা করলাম, যদিও পড়লাম বেশি!
দূরে নন্দাদেবী ও মানা পর্বতশ্রেণী যেন পাহাড়ের রাজকুমারীর মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে। সন্ধ্যাবেলা ফিরলাম জোশীমঠে।

৬ষ্ঠ দিন – জোশীমঠ থেকে ঋষিকেশ ফেরা

সকাল সকাল ফিরতি পথে রওনা হলাম। পাহাড়ি রাস্তা নামার সময় যেন মনটা ভারী হয়ে আসছিল। ঋষিকেশে ফিরে আবার ঘাটে গিয়ে বসলাম কিছুক্ষণ—বিদায় জানাতে গঙ্গাকে।

৭ম দিন – ঋষিকেশ থেকে হরিদ্বার, তারপর ট্রেনে কলকাতা ফেরার প্রস্তুতি

এই দিনটা রিল্যাক্স করার জন্য রেখেছিলাম। সকালে ঋষিকেশ থেকে হরিদ্বার এসে স্থানীয় কিছু বাজার ঘুরে, প্রসাদ কিনে নিলাম।
রাতে ট্রেনে উঠলাম। জানালার বাইরে দেখা দিল রাতের তারাভরা আকাশ, আর মনের ভিতরে চলতে থাকল এই ট্রিপের স্মৃতিচারণ।

৮ম দিন – কলকাতা ফিরে দেখা শেষ হলেও গল্পের নয়

ভোরে পৌঁছালাম হাওড়া স্টেশনে। শহরের কোলাহলে ফিরে এলাম ঠিকই, কিন্তু হৃদয়ের কোথাও পাহাড় থেকে পাওয়া শান্তিটুকু রেখে দিলাম।


---

🔖 পরামর্শ ও খরচপাতি (সংক্ষেপে):

সবচেয়ে ভালো সময়: নভেম্বর – মার্চ

মোট খরচ (প্রতি জন): ₹১৮,০০০ – ₹২৫,০০০ (ভ্রমণ, থাকা, খাওয়া মিলিয়ে)

ক্যামেরা গিয়ার: ড্রোন, অ্যাকশন ক্যাম, ট্রাইপড – কাজে আসবে আওলি ও গঙ্গারতির সময়ে

ভ্রমণ টিপস:

ঋষিকেশে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস (রাফটিং, বাঞ্জি) ট্রাই করতে পারো

আওলি যাওয়ার আগে আবহাওয়া দেখে নাও

পায়ে হাঁটার জন্য ভালো গ্রিপ-ওয়ালা জুতো নিতে ভুলোনা