শুকরিয়া যে করে, সেটা নিজের জন্যেই করে | মিজানুর রহমান আজহারী ওয়াজ | ইসলামের সত্য পথ
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু!
শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা এমন একটি আমল, যা মূলত আল্লাহর কোনো উপকারে আসে না — বরং পুরোপুরি আমাদের নিজেদের উপকারের জন্য। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তো অমুখাপেক্ষী, তিনি কারো ইবাদত বা শুকরিয়ার প্রয়োজন অনুভব করেন না। বরং বান্দা যখন কৃতজ্ঞ হয়, তখন সে নিজেকেই উন্নত করে, নিজের জীবনেই বরকত ডেকে আনে, নিজের দুনিয়া ও আখিরাত সুন্দর করে তোলে।
ড. মিজানুর রহমান আজহারী হুজুর আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ বয়ানে অত্যন্ত স্পষ্ট ও প্রাঞ্জল ভাষায় বুঝিয়েছেন —
কেন শুকরিয়া আল্লাহর জন্য নয়, বরং আমাদের নিজেদের জন্য জরুরি।
কেন অকৃতজ্ঞতা আমাদের রিজিক, বরকত এবং ঈমান ধ্বংস করে ফেলে।
কিভাবে প্রতিদিনের ছোট ছোট অনুগ্রহের শুকরিয়া আমাদের জীবন বদলে দিতে পারে।
এই বয়ানে আলোচিত মূল বিষয়সমূহঃ
শুকরিয়া আল্লাহর দরকার নেই — তিনি সৃষ্টিজগতের প্রভু।
বান্দার কৃতজ্ঞতা বান্দাকেই সম্মানিত করে।
অকৃতজ্ঞতার ফলাফল কীভাবে ধ্বংস ডেকে আনে।
দুঃসময়ে ও সুখের সময়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের গুরুত্ব।
শুকরিয়ার মাধ্যমে ইমান মজবুত হয় এবং রিজিক বাড়ে।
কিভাবে প্রতিদিনের জীবনকে শুকরিয়ার মাধ্যমে বরকতময় করা যায়।
কুরআনের আলোকে শুকরিয়ার গুরুত্বঃ আল্লাহ তাআলা বলেন —
"আর যে কৃতজ্ঞ, সে নিজের উপকারের জন্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আর যে অকৃতজ্ঞ হয়, তবে আল্লাহ তো অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।"
(সূরা লোকমান, আয়াত ১২)
আবার আল্লাহ বলেন —
"তোমরা যদি কৃতজ্ঞ হও, আমি অবশ্যই তোমাদের জন্য (নিয়ামত) বৃদ্ধি করবো, আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে অবশ্যই আমার শাস্তি কঠোর।"
(সূরা ইবরাহীম, আয়াত ৭)
এই আয়াতগুলো স্পষ্ট করে দেয় যে, শুকরিয়া করা মানে নিজের জন্য কল্যাণ লাভ করা। আল্লাহর কিছু কমে না, বাড়েও না। বরং শুকরিয়া প্রকাশকারীর জন্য আল্লাহ আরও অনুগ্রহের দরজা খুলে দেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন থেকেও শিক্ষা: আমরা দেখি, রাসূলুল্লাহ (সা.) এতই শুকরিয়া আদায় করতেন যে, তার পা ফুলে যেত। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন —
"আমি কি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?"
(বুখারি ও মুসলিম)
তাঁর এই আচরণ আমাদের শিক্ষা দেয় — শুকরিয়া হলো এমন ইবাদত, যা শুধু মুখের কথা নয়, বরং অন্তরের অনুভূতি, আমলের প্রকাশ এবং আল্লাহর প্রতি বিনয়ী থাকার এক বিশেষ রূপ।
কেন শুকরিয়া করা উচিত? ১. শুকরিয়া করলে জীবনে বরকত আসে।
২. রিজিক বৃদ্ধি পায় এবং দুঃখ-কষ্ট দূর হয়।
৩. অন্তর শান্তি পায়, ঈমান দৃঢ় হয়।
৪. আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হয়।
৫. জীবন সুন্দর ও পরিপূর্ণ হয়।
কিভাবে শুকরিয়া করা যায়?
দোয়া ও ইবাদতের মাধ্যমে।
অন্তরে আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করে।
জবান দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করে।
শরীর দিয়ে নেক আমল করে।
অন্যের প্রতি দয়ালু ও উদার আচরণ করে।
আজহারী হুজুরের অনন্য বৈশিষ্ট্যঃ
ড. মিজানুর রহমান আজহারী হুজুরের আলোচনায় সবসময় কুরআন-হাদিসের নির্ভরযোগ্য দলিল, যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা এবং জীবনের বাস্তব উদাহরণ থাকে। তাঁর কথাবার্তা সহজ, হৃদয়গ্রাহী এবং চিন্তাশীল। আজকের ওয়াজও ব্যতিক্রম নয়। তিনি অত্যন্ত প্রাঞ্জলভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন — আল্লাহর শুকরিয়া করা মানে আসলে নিজের জীবন সুন্দর ও সাফল্যময় করে তোলা।
আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা:
আজকের ওয়াজ থেকে শিক্ষা হলো — কখনোই অকৃতজ্ঞ হওয়া যাবে না। জীবন যেমনই হোক, যত কষ্টই থাকুক, কিছু না কিছু পেয়েছি বলেই বেঁচে আছি। তাই অন্তর থেকে সব সময় বলুন —
"আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল"
— সকল অবস্থার জন্য আল্লাহর প্রশংসা।
ভিডিওটি ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক দিন, কমেন্টে আপনার অনুভূতি জানান এবং শেয়ার করুন।
আর নতুন নতুন ইসলামীক ওয়াজ ও আলোচনা পেতে আমাদের চ্যানেল "ইসলামের সত্য পথ" সাবস্ক্রাইব করুন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রকৃত কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
#ইসলামের_সত্য_পথ, #মিজানুর_রহমান_আজহারী, #শুকরিয়া, #আল্লাহর_শুকরিয়া, #ওয়াজ, #ইসলামীক_ওয়াজ, #কৃতজ্ঞতা, #আল্লাহর_নিয়ামত, #কুরআন_হাদিস, #ইসলামিক_শিক্ষা, #ইসলামিক_লেকচার, #দোয়া
Информация по комментариям в разработке