বোধিসত্ত্বের পঞ্চ অবলোকন পৃথিবীতে বুদ্ধত্ব লাভের সময়

Описание к видео বোধিসত্ত্বের পঞ্চ অবলোকন পৃথিবীতে বুদ্ধত্ব লাভের সময়

বোধিসত্ত্বের পঞ্চ অবলোকন পৃথিবীতে বুদ্ধত্ব লাভের সময় ‎@BuddhoHoda24-zy7mi 
বোধিসত্ত্ব তুষিত স্বর্গে অবস্থান করার সময়েই পৃথিবীতে ‘বুদ্ধ কোলাহল’ দেখা দিয়েছিল। সাধারণত জগতে কল্প-কোলাহল, বুদ্ধ-কোলাহল ও চক্রবর্তী-কোলাহল—এই তিন প্রকারের মহাকোলাহল উৎপন্ন হয়ে থাকে। বুদ্ধ-কোলাহলের শব্দ শুনে দশ হাজার চক্রবালের সব দেবতা একস্থানে একত্রিত হয়ে ‘অমুক সত্ত্ব বুদ্ধ হবেন’ জানতে পেরে সবাই তাঁর কাছে গিয়ে প্রার্থনা করেন। এভাবে কোনো এক সময় প্রত্যেক চক্রবালের দেবতারা তাঁদের নিজ নিজ চক্রবালের চার মহারাজা দেবরাজ ইন্দ্র-সুযাম-তুষিত-পরনির্মিত বশবর্তী ও মহাব্রহ্মাসহ সব চক্রবালের দেবগণ এক চক্রবালে একত্রিত হয়ে তুষিত ভবনে বোধিসত্ত্বের কাছে গিয়ে প্রার্থনা করলেন, ‘বন্ধু, তুমি যে দশ পারমী পূর্ণ করেছ, তা দেবরাজ ইন্দ্রসম্পদ, মারসম্পদ, ব্রহ্মসম্পদ কিংবা চক্রবর্তী সম্পদ লাভের প্রত্যাশায় পূর্ণ করোনি। সংসার থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে সর্বজ্ঞতা প্রার্থনা করেই পূর্ণ করেছ। হে বন্ধু, বুদ্ধত্ব লাভের এখনই সময়।’

দেবতাগণের প্রার্থনার জবাবে সম্মতি দেবার আগে বোধিসত্ত্ব কাল বা সময়, দ্বীপ, দেশ, কুল এবং মাতার আয়ুষ্কাল—এ পাঁচটি বিষয় চেয়ে নিলেন।

১. কাল বা সময় : এটা বুদ্ধ হবার উপযুক্ত কাল নাকি অকাল—এই ভেবে প্রথমেই কাল দেখলেন। মানুষের এক লাখ বছরের অধিক আয়ুষ্কালকে যথার্থ কাল বলা যায় না, যেহেতু তখন প্রাণীদের চিত্তে জন্ম-জরা-মৃত্যু ইত্যাদি অনিত্য বিষয়ে ভালোমতো উপলব্ধি হয় না। অথচ বুদ্ধদের ধর্মদেশনা কখনো ত্রিলক্ষণমুক্ত হয় না। তাদের অনিত্য, দুঃখ ও অনাত্ম সম্বন্ধে উপদেশ দিলে তারা ‘ইনি এসব কী বলছেন’ ভেবে তার প্রতি মনোযোগ দেওয়া কিংবা শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা কর্তব্য বলেও মনে করে না। ফলে তখন মানুষের পক্ষে ধর্মজ্ঞান লাভ সম্ভব হয় না। তার অভাবে বুদ্ধশাসন মুক্তিদায়ী হয় না। তাই এটা বুদ্ধোৎপত্তির পক্ষে অকাল বলা হয়েছে।

শতবর্ষের কম আয়ুষ্কালও বুদ্ধাবির্ভাবের উপযুক্ত কাল নয়। যেহেতু তখন প্রাণীরা অত্যধিক কলুষপরায়ণ হয়ে থাকে। সেই কলুষিত সত্ত্বদের উদ্দেশে দেওয়া উপদেশ ফলপ্রসূ হয় না। জলের ওপর অঙ্কিত রেখার মতোই তৎক্ষণাৎ মিলিয়ে যায়। তাই তা-ও অকাল বলা হয়েছে। বস্তুত এক লাখ বছর হতে নিচে এবং শত বছর হতে বেশি আয়ুষ্কালকেই যথার্থ কাল বলা হয়। তখন মানুষের আয়ুষ্কাল শতবর্ষ ছিল। অতএব মহাপুরুষ বুঝতে পারলেন যে তাঁর আবির্ভাবের সময় তখনও যথাযথ আছে।

২. দ্বীপ : এরপর তিনি দ্বীপ অবলোকন মানসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপমালা-পরিবেষ্টিত চতুর্মহাদ্বীপ অবলোকন করে দেখতে পেলেন যে একমাত্র জম্বুদ্বীপেই বুদ্ধ উৎপন্ন হয়ে থাকেন। অন্য তিন দ্বীপে বুদ্ধের আবির্ভাব নেই।

৩. দেশ : তারপর তিনি দশ হাজার যোজন বিস্তৃত বিশাল জম্বুদ্বীপের কোন প্রদেশে বুদ্ধ উৎপন্ন হন, তা অবলোকন করে মধ্যদেশ দেখতে পেলেন।

মধ্যদেশের সীমা-পূর্বদিকে কজঙ্গল নামে নগর, তার অপরদিকে মহাশাল, তারপর প্রত্যন্ত জনপদ; পূর্ব-দক্ষিণ (কোণে) দিকে সললবতী নদী, তার অপরদিকে প্রত্যন্ত জনপদ; দক্ষিণ দিকে শ্বেতকর্ণিকা নামে নগরী, তারপর প্রত্যন্ত জনপদ; পশ্চিম দিকে থুন নামে ব্রাহ্মণ গ্রাম, তারপর প্রত্যন্ত জনপদ; উত্তর দিকে উসীরধ্বজ নামে পর্বত, তারপর প্রত্যন্ত জনপদ। উপরে বর্ণিত সীমার মাঝখানের স্থানটি মধ্যদেশ নামে অভিহিত। বিনয়পিটকে উল্লিখিত এই মধ্যদেশ দৈর্ঘ্যে তিনশো যোজন, বিস্তারে আড়াইশো যোজন এবং এর পরিধি নয়শো যোজন। এই প্রদেশে বুদ্ধ, পচ্চেকবুদ্ধ, অগ্রশ্রাবক, চক্রবর্তী রাজা এবং অন্যান্য মহাক্ষমতাশালী ক্ষত্রিয়-ব্রাহ্মণ-গৃহপতি ও মহাশ্রেষ্ঠীগণ উৎপন্ন হয়ে থাকেন। সেখানে রয়েছে কপিলবাস্তু নগর। ‘আমার সেখানেই উৎপন্ন হওয়া উচিত’ বোধিসত্ত্ব এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন।

৪. কুল : এরপর তিনি কুল অবলোকন করতে গিয়ে দেখলেন যে ‘বুদ্ধগণ কখনো বৈশ্য কিংবা শূদ্রকুলে জন্মগ্রহণ করেন না। বিশ্ববিখ্যাত ক্ষত্রিয় অথবা ব্রাহ্মণ—এই দুই কুলেই জন্মগ্রহণ করে থাকেন। বর্তমান জগতে ক্ষত্রিয়কুলই শ্রেষ্ঠ। সুতরাং সেখানে জন্মগ্রহণ করব। শুদ্ধোদন নামে নরপতি আমার পিতা হবেন।’

৫. মাতা ও তার আয়ুষ্কাল : তারপর মাতাকে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখলেন, ‘বুদ্ধমাতারা কখনো লোভী, চরিত্রহীনা এবং মদ্যপায়িনী হন না। তাঁরা লক্ষ কল্পাবধি পারমীপূর্ণ এবং জন্মাবধি অখণ্ডভাবে পঞ্চশীল রক্ষা করেন। মহামায়া দেবী হচ্ছেন এরূপ নারী। অতএব তিনিই আমার মাতা হবেন।’
#buddho_hoda_24 #buddho_hoda24 #buddhist_story

Комментарии

Информация по комментариям в разработке