Скачать или смотреть ২৫ শে মার্চ কালো রাত

#১৯৭১ #২৫শে_মার্চ #মুক্তিযুদ্ধ #স্বাধীনতা





২৫ মার্চের ভয়াল কালো রাতে তাজউদ্দীন আহমদ গেলেন মুজিবের বাড়িতে । বড় কোনো সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাজউদ্দীন আহমদ এর উপদেশ গ্রহণে মুজিব এর আগে দ্বিধা করেননি। তাজউদ্দীন আহমদের, সে কারণে বিশ্বাস ছিল যে, ইতিহাসের এই যুগসন্ধিক্ষণে মুজিব কথা রাখবেন। মুজিব , তাজউদ্দীন আহমদের সাথেই যাবেন। অথচ শেষ মুহূর্তে মুজিব অনড় রয়ে গেলেন। তিনি তাজউদ্দীন আহমদকে বললেন, 'বাড়ি গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকো, পরশুদিন (২৭ মার্চ) হরতাল ডেকেছি।' মুজিবের তাৎক্ষণিক এই উক্তিতে তাজউদ্দীন আহমদ বিস্ময় ও বেদনায় বিমূঢ় হয়ে পড়লেন। এদিকে বেগম মুজিব ঐ শোবার ঘরেই সুটকেসে মুজিবের জামাকাপড় ভাঁজ করে রাখতে শুরু করলেন। ঢোলা পায়জামায় ফিতা ভরলেন। পাকিস্তানি সেনার হাতে মুজিবের স্বেচ্ছাবন্দি হওয়ার এইসব প্রস্তুতি দেখার পরও তাজউদ্দীন আহমদ হাল না ছেড়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন ঐতিহাসিক উদাহরণ টেনে মুজিবকে বোঝাবার চেষ্টা করলেন। তিনি কিংবদন্তি সমতুল্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উদাহরণ তুলে ধরলেন, যাঁরা আত্ম.গোপন করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু মুজিব তাঁর এই সিদ্ধান্তে অনড় হয়ে রইলেন। তাজউদ্দীন আহমদ বললেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য হলো পূর্ব বাংলাকে সম্পূর্ণ রূপেই নেতৃত্ব-শূন্য করে দেওয়া। এই অবস্থায় মুজিবের ধরা দেওয়ার অর্থ হলো আ.ত্ম.হত্যার শামিল। তিনি বললেন, 'মুজিব ভাই, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হলেন আপনি। আপনার নেতৃত্বের ওপরই তারা সম্পূর্ণ ভরসা করে রয়েছে।' মুজিব বললেন, 'তোমরা যা করবার কর। আমি কোথাও যাব না।'

তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা বইয়ের ৪৫ পৃষ্ঠার অংশবিশেষ।