Скачать или смотреть গোপালগঞ্জ জেলা | জেনে নিন গোপালগঞ্জ জেলা সম্পর্কে | District of Gopalganj | Gopalganj

অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে গোপালগঞ্জ ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহকুমা ও থানাধীন ছিল। ১৯০৯খ্রিস্টাব্দ সদর মহকুমা থেকে মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী থানা এবং মাদারীপুর থেকে গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া থানা নিয়ে গোপালগঞ্জ মহকুমা স্থাপিত করা হয়। গোপালগঞ্জ টাউন কমিটি ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। যা স্বাধীনতার মাত্র কয়েকদিনের মাথায়। অর্থাৎ ২০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালের গোপালগঞ্জের পৌরসভা গঠিত হয়। এরপর ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোপালগঞ্জ সদর থানা উপজেলায় উন্নীত করা হয়। গোপালগঞ্জ জেলার ভৌগলিক অবস্থান বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে অন্যতম। দেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল হচ্ছে গোপালগঞ্জ। জেলার পূর্বে মাদারীপুর ও বরিশাল পশ্চিমে নড়াইল ও মাগুরা, উত্তরে ফরিদপুর এবং দক্ষিণে পিরোজপুর, বাগেরহাট ও খুলনা জেলা অবস্থিত। গোপালগঞ্জ জেলার মোট আয়তন হচ্ছে ১৪৬৮.৭৪ বর্গ কিলোমিটার এবং মোট জনসংখ্যা ১১,৭২,৪১৫ জন। বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার আদি নাম ছিল রাজগঞ্জ। তৎকালীন সময় এ অঞ্চলে ব্রিটিশদের রাজত্ব ছিল। রানী রাসমণি ছিলেন জেলা কন্যা। রানী রাসমনির নাতি ছিলেন গোপাল এবং সেই গোপালের নাম অনুসারে রাজগঞ্জের নাম বদলে গোপালগঞ্জ রাখা হয়। গোপালগঞ্জ জেলা পাট বাদাম এবং তরমুজের জন্য বিখ্যাত। এই জেলাতে পাট বাদাম এবং তরমুজ সর্বাধিক পরিমাণ উৎপন্ন হয়ে থাকে। গোপালগঞ্জের বিখ্যাত কিছু ব্যক্তিবর্গের নাম জেনে নেই। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈতৃক বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। তিনি বিপ্লবী কবি এবং বাংলা সাহিত্যের প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী। গোপালগঞ্জ রয়েছে হরিনাহাটি জমিদার বাড়ি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হরিণাহাটি নামক স্থানে অবস্থিত এই জমিদার বাড়ি। বাড়িটি গোপালগঞ্জ জেলার একটি ১৮ শতকের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি, যা তৎকালীন প্রাচীন নিদর্শন স্বরূপ। এখানে রয়েছে উজানীর জমিদার বাড়ি। গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উজানী গ্রামে উজানীর জমিদার বাড়ি অবস্থিত, ১৮ শতকের একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন ও দর্শনীয় স্থাপনা। গোপালগঞ্জ জেলার সদরে অবস্থিত আড়পাড়া মুন্সিবাড়ি। ঐতিহাসিক মুন্সিবাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার আরপাড়া গ্রামে অবস্থিত। এটি প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছরের পুরাতন দোতলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি। গোপালগঞ্জ জেলায় উলপুর গ্রামে রয়েছে উলপুর জমিদার বাড়ী। জমিদার বাড়িটি আনুমানিক ১৯১৭সালে নির্মাণ করা হয়। গোপালগঞ্জ জেলায় রয়েছে কিছু বিখ্যাত খাবার। বিখ্যাত খাবারের মধ্যে অন্যতম রয়েছে গোপালগঞ্জের তরমুজ। এখানকার তরমুজ সারা দেশে বেশ জনপ্রিয়। এ জেলায় তরমুজের পর বাদাম বেশ জনপ্রিয়। আপনারা তো জানেন বাংলাদেশে বাদাম কতটা জনপ্রিয়। রসগোল্লা, এখানকার রসগোল্লা সাধের কথা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন। গোপালগঞ্জ জেলার স্থানীয় কারিগররা এই রসগোল্লা দীর্ঘ সময় নিয়ে তৈরি করেন। যার দরুন এর অতুলনীয় স্বাদ। ছানার জিলাপি, মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে ছানার জিলাপি অন্যতম। এটি ছানা, চিনি, ঘি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে তৈরি করা হয়। দানোর সন্দেশ, গোপালগঞ্জ জেলায় একটি প্রখ্যাত মিষ্টিন্ন হচ্ছে দানোর সন্দেশ। এই সুস্বাদু সন্দেশ শুধু গোপালগঞ্জ এবং এর পার্শ্ববর্তী কিছু জেলাতেই পাওয়া যায়। গোপালগঞ্জ জেলায় রয়েছে স্বনামধন্য কিছু ব্যক্তিবর্গ। এ জেলার স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে প্রথমে যার নাম আসে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সম্পর্কে কম-বেশি আমরা সবাই জানি। এছাড়া রয়েছেন চৌধুরী জাফরুল্লাহ সরাফত, যিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট এর একজন অন্যতম বাংলা ধারাভাষ্যকার। তিনি মূলত সতন্ত্র বাচনভঙ্গি এবং ধারাভাষ্যর জন্য সারাদেশে পরিচিতি লাভ করে। মোল্লা জালাল উদ্দিন আহমেদ, তিনি একজন আইনজীবী এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি ১ ফেব্রুয়ারি ১৯২৬ সালের গোপালগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭৯ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জামিল উদ্দিন আহমেদ, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জামিল উদ্দিন আহমেদ মূলত কর্নেল জামিল নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। ২০০৯ সালে সরকার কর্তৃক বীর উত্তম খেতাবে তিনি ভূষিত হন। শরফুদ্দিন আহমেদ, শরফুদ্দিন আহমেদ একজন বাংলাদেশী বিখ্যাত চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ। এছাড়াও তিনি ছিলেন একজন বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য। নরেন বিশ্বাস, তিনি বাংলাদেশের লেখক গবেষক আবৃত্তি শিল্পী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৪৫ সালে গোপালগঞ্জ এর মাঝিগাতি গ্রামে (ব্রিটিশ ভারত) জন্মগ্রহণ করেন। এবং ২৭ নভেম্বর ১৯৯৮ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গোপালগঞ্জ জেলায় উপজেলা রয়েছে মোট পাঁচটি। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ (সদর উপজেলা), টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী, মুকসুদপুর উপজেলা। এ জেলার সম্পর্কে শেষ কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ সৌন্দর্যের এক অপরূপ উদাহরণ। ৬৪ জেলার মধ্যে সৌন্দর্য দিক থেকে কোন জেলা এগিয়ে আবার কোন জেলা তুলনামূলকভাবে কম জনপ্রিয়। এগুলো কিন্তু নির্ভর করে ব্যক্তির মনের চাহিদা এবং সেই জেলার সার্বিক অবস্থানের উপর। গোপালগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত তা হয়তো এতক্ষণে স্পষ্টরূপে বুঝে গেছেন। এ জেলা সম্পর্কে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে দয়া করে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি "আল্লাহ হাফেজ"।

In the early 18th century, Gopalganj was under the Madaripur subdivision and thana of Faridpur district. In 1909, the Gopalganj subdivision was established by taking Muksudpur and Kashiani thana from the Sadar subdivision and Gopalganj and Kotalipara thana from Madaripur. The Gopalganj Town Committee was established in 1965. This was just a few days after independence. That is, the municipality of Gopalganj was formed on 20 January 1972. Then in February 1984, Gopalganj Sadar thana was upgraded to an upazila. The geographical location of Gopalganj district is one of the 64 districts of Bangladesh. Gopalganj is an administrative region of the Dhaka division in the central part of the country.