Скачать или смотреть দৈনন্দিন জীবনে উপকারি ২০টি ঔষধি গাছ | 20 medicinal plants useful in daily life | Ayurvedic plant

দৈনন্দিন জীবনে উপকারি ২০টি ঔষধি গাছ | 20 medicinal plants useful in daily life | ayurvedic plant

#khulnarkhobor
#ভেষজ
#ঔষধিগাছ

গ্রামাঞ্চলের মানুষজন এগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ব্যবহার করে এসেছে।বর্তমানে বাংলাদেশের গবেষকরা গবেষণায় এগুলোর নানা গুণাগুণ দেখতে পেয়েছেন।সেরকম কয়েকটি আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো:
১. মেন্দা
এই গাছটি বাংলাদেশের অঞ্চলভেদে চাপাইত্তা, কারজুকি, রতন, খারাজুরা নামেও পরিচিতি রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে এখনো পেটের পীড়া, রক্ত-আমাশা হলে পাতা বেটে পানিতে মিশিয়ে দুইবেলা খাওয়া হয়।গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।এই গাছের বাকল ও পাতা উভয়ই ব্যবহার করা হয়। একসময় হাড় ভেঙ্গে গেলে ছালের মিশ্রণ স্থানীয়ভাবে প্লাস্টারিংয়ে ব্যবহার করা হতো। অনেক সময় বুকের ব্যথার জন্য মালিশ করা হয় এবং ভালো ফল পাওয়া যায়।
২. বনধনে
পেটের ব্যথা ও ডায়রিয়ার ওষুধে কার্যকর। ঘা-পাঁচড়ার ক্ষেত্রে এই পাতার মিশ্রণ লাগানো হলে ভালো ফল পাওয়া যায়।এর রস আমাশয়ে ভালো কাজ দেয়। তবে বয়স যত কম হবে রস তত পাতলা করে নিতে হবে। রসের পরিমাণ এক চা চামচ পরপর তিন দিন খেলে আমাশয় নিরাময় হবে।মুখে ঘা হলে এ পাতা চিবালে ঘা ভালো হয়ে যায়।
৩. ভাট ফুল বা বনজুঁই
কৃমিনাশক এবং ডায়রিয়ার জন্য ভালো কাজ করে। কাঁচা হলুদের সঙ্গে এর পাতার রস মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। যাদের চর্ম রোগ রয়েছে, তারা এই ফুলের রস মালিশ করে বেশ উপকার পেয়েছেন।
৪. নিম
ডায়াবেটিসের রোগীরা অনেকে নিমের পাতা শুকিয়ে ছোট ছোট ট্যাবলেট বানিয়ে সকাল বিকেল খেয়ে থাকেন। এছাড়া বহুকাল থেকে চিকেন পক্স, চামড়ার অ্যালার্জির মতো সমস্যায় নিমের পাতা গরম পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পোকা মাকড়ের কামড়ের ক্ষত হলে, সেখানে নিম আর হলুদের রস একসাথে মিশিয়ে লাগানো হয়। দাঁতের ব্যথার জন্য নিমের ডালের রস ব্যবহার করলে উপকার হয়।
৫. তুলসী
এটি বাংলাদেশের অনেকের কাছেই একটি পরিচিত নাম। বিশেষ করে গ্রামের অনেক বাড়িতেই দেখা যায়। সর্দিজনিত রোগে এই গাছটির পাতা খাওয়া হয়। অনেকে চায়ের সঙ্গেও ভিজিয়ে খান। বলা হয়ে থাকে, তুলসী পাতা ভেজে ঘি দিয়ে নিয়মিত খেলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে।
৬. চিরতা
এটি অনেক স্থানে কালমেঘ নামেও পরিচিত। ডায়াবেটিস রোগীরা খেয়ে থাকেন। পাতাগুলো গুড়ো করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে অনেকে খান। পেট খারাপ, ডায়রিয়া, জ্বর ও বাত ব্যথার ক্ষেত্রে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৭. পাথরকুচি
গ্রামে একটা প্রচলিত ধারণা আছে, পাথরকুচি কিডনির পাথর ভাঙ্গতে সহায়তা করে, যদিও এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি। তবে ব্যবহারকারীরা গবেষকদের কাছে বলেছেন, জ্বর ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যায় পাথরকুচির পাতা বেটে খেয়ে তারা উপকার পেয়েছেন। চামড়ার অ্যালার্জির জন্যও এটি বেটে ব্যবহার করা হয়। ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় পাথরকুচির পাতার রস ব্যবহার করা যেতে পারে।
১৩. জবা
পেট খারাপের জন্য জবা গাছের পাতা ও ফুল গরম ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। জন্ডিসের জন্য পাতার জুস খেতে পারেন। এ ফুলের রস নারীরা মাসিক ও স্রাবজনিত সমস্যার জন্য খেয়ে থাকেন।
১৭. স্বর্ণলতা
স্বর্ণলতা অনেকের কাছে আগাছা মনে হলেও এরও রয়েছে বিশেষ গুণ।জন্ডিস নিরাময়, তলপেটের ব্যথা কমানো, ও ক্ষত উপশমে এই লতা কাজ করে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এ লতা সেদ্ধ করে সেই পানি খাওয়া হয়। এই লতার পানি পিত্তনাশক ও কৃমি দমনে সহায়তা করে। ব্যাকটেরিয়া দমনেও এটি সহায়ক। তবে এই পাতার রস অনেক সময় গর্ভপাত, বা প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয় বলেও ধারণা আছে।তাই এর ব্যবহারে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
১৮. শতমূলী
শতমূলী উচ্চমানের ফলিক এসিড ও পটাশিয়ামের প্রাকৃতিক উৎস। এতে ফাইবার, ভিটামিন এ ও ভিটামিন বি রয়েছে। এটি বন্ধ্যাত্ব নিরাময় ও শক্তিবর্ধক হিসাবে কাজ করে। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।তাছাড়া রক্ত দূষিত হলে, রাতকানা রোগ হলে, আমাশয় ও জ্বরে এই গাছ বেশ কার্যকরী। তা ছাড়া কফরোগ, অর্শ এবং বাতজ্বরেও এই গাছ কাজে লাগে।
১৯. বিলিম্বি
বিলিম্বি কাঁচা ও পাকা দুই ভাবেই খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। বিলিম্বি কামরাঙ্গার মতোই ঝাল-লবণ দিয়ে খেতে ভালো লাগে। এই ফল ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে প্রমাণিত। গবেষণায় দেখা গেছে, এর ভেতরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। চুলকানি নিরাময়, চামড়া ফাটা, যৌনরোগ চিকিৎসায় অনেক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক এই গাছের ফল ও পাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে যাদের কিডনির রোগ রয়েছে, তাদের জন্য এই ফল বা পাতা ক্ষতিকর।

সতর্কতা :
গাছের পরিচিতি ও গুনাগুণ সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দেয়া হয়েছে। কেউ যেন নিজ দায়িত্বে এটা খেয়ে রোগ থেকে নিশ্চিত বেঁচে যাবেন এমন ধারণা না করেন। রোগ নির্ণয় করবে ডাক্তার এবং তিনিই যথাযথ ওষুধ দেবেন।