Скачать или смотреть কচুয়ায় মৎস্য হ্যাচারি করতে চান তাপস

১৫ বছর ধরে মাছচাষের মাধ্যমে রেণু উৎপাদন করছেন চাঁদপুরের কচুয়ার তাপস চন্দ্র সরকার। শুরুতে দেড় লাখ টাকা পুঁজি ছিল তার। লিজ নিয়েছিলেন দুটি পুকুর। সেই ব্যবসা এখন বেড়ে হয়েছে ৮০ লাখ টাকার। বর্তমানে প্রায় ৩০টি পুকুরে মাছ চাষ ও রেণু উৎপাদন করছেন তাপস। তার এখন স্বপ্ন একটাই, অন্যের জমিতে নয়, নিজের জমিতে পুকুর কেটে বৃহৎ আকারে মৎস্য হ্যাচারি করার।

তাপস চন্দ্র সরকারের বাড়ি কচুয়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা নাহারায়। তার বাবা চিত্তরঞ্জন সরকার গত ৪০ বছর ধরে এই এলাকায় রেণু ও পোনা উৎপাদন করে আসছিলেন। বাবার বয়স বেড়ে যাওয়ায় ২০০৬ সালে ব্যবসার হাল ধরেন তাপস। তারপর থেকে শুধু তার এগিয়ে যাওয়ার গল্প।

তাপস বলেন, এটা আমার বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা। বাবার হাত ধরে আমি এ ব্যবসায় সফলতার স্বপ্ন দেখছি। বর্তমানে আমার প্রায় ৩০টি পুকুর রয়েছে। প্রতিটি পুকুর এলাকার মহাজনদের কাছ থেকে সন মেয়াদে (বর্ষচুক্তি) বরাদ্দ নেয়া। পুকুরে মাছের রেণু উৎপাদন করে পাইকারি ও খুচরা খামারিদের কাছে বিক্রি করি। তবে পুকুর নিজের না হওয়ায় এবং বিভিন্ন সময়ে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করায় তেমন একটা লাভ থাকে না।

স্বপ্নবান তাপস বলেন, ভবিষ্যতে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমিষের ঘাটতি পূরণে বৃহৎ মৎস্য হ্যাচারি করতে চাই আমি।

চিত্তরঞ্জন সরকার বলেন, এই এলাকায় একমাত্র আমরাই মৎস্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত আছি। বিগত দিনে এ পেশায় জড়িত থাকায় প্রশাসন ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও পুরস্কার পেয়েছি। বয়সের কারণে এখন আর কাজ করতে পারি না। তবে ছেলের সফলতা দেখে ভালো লাগে। আমার ছেলের মৎস্য প্রকল্পে প্রায় ১৫-২০ জন শ্রমিক রয়েছে। এর মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান হয়েছে।

নবাবপুর থেকে আসা খামারি অধ্যাপক মাহবুব আলম বলেন, তাপস চন্দ্র সরকারের মৎস্য খামারে গুণগত মানসম্পন্ন রেণু পাওয়া যায়। তাই আমি বেশ কয়েকবার তার কাছ থেকে বিভিন্ন দেশীয় ও কার্প জাতীয় পোনা কিনেছি। আজো কিনতে এসেছি।

তাপস চন্দ্রের স্বপ্ন এবং জেলার সার্বিক মৎস্য চাষ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাসুদুল হাছান বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ বৃদ্ধি করতে হবে। কোনো মৎস্য খামারি ঋণ নিতে চাইলে ব্যাংকের মাধ্যমে তাকে সহযোগিতা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, যারা বেকার যুবক, তারা মৎস্য অফিসের সঙ্গে পরামর্শক্রমে মাছ চাষ করে নিজেদের বেকারত্ব ঘোচাতে পারেন। এছাড়া তাদের উদ্যোগ দেশে আমিষের চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা রাখবে।