Скачать или смотреть খন্দক যুদ্ধ — মুসলমানদের এক কঠিন পরীক্ষা || আল-ইখলাস

খন্দকের যুদ্ধ (গাজওয়ায়ে আহযাব) — সত্যিকারের ভয়ংকর শীত, কঠোর ক্ষুধা এবং আল্লাহর বিস্ময়কর সাহায্যে বিজয়ের পূর্ণ ইতিহাস

ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন, ভয়ংকর এবং কৌশলী যুদ্ধগুলোর একটি হলো খন্দকের যুদ্ধ বা গাজওয়ায়ে আহযাব। এটি শুধু একটি যুদ্ধ ছিল না; বরং ছিল মদীনা নগরীকে রক্ষার এক অনন্য কৌশলগত অভিযান। এখানে মুসলমানদের সামনে ছিল—
ঠাণ্ডা
ক্ষুধা
ভয়ংকর শত্রু
বিভিন্ন গোত্রের সম্মিলিত মিত্রবাহিনী
ভেতরে মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র
বাইরে থেকে কুরাইশ, গাতফান ও আরবের বড় বড় গোত্র
তবে সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল আল্লাহর সাহায্য।

🔥 শত্রু জোট—“আহযাব” (Confederate Army)
মক্কার কুরাইশরা চায় যে—
“মুসলমানদের নাম–নিশান মুছে ফেলতে হবে।”
তারা অন্যান্য গোত্রকে উস্কে দিয়ে প্রায় ১০,০০০ সৈন্যের বিশাল বাহিনী সংগঠিত করে।
এই জন্যই এ যুদ্ধকে বলা হয় আহযাবের যুদ্ধ — কারণ অনেক দল মিলে এসে যুদ্ধ করেছিল।
মদীনা ছিল সেই সময় একটি ছোট নগরী—সেখানে মুসলমানদের সংখ্যা মাত্র ৩,০০০।
দুই পক্ষের শক্তির পার্থক্য ভয়ংকর:
মুসলমান: ৩,০০০ জন
শত্রুবাহিনী: ১০,০০০+ জন
যুদ্ধ সরাসরি হলে মুসলমানরা টিকতেই পারবে না।

🔥 সালমান ফারসীর প্রস্তাব: খন্দক খনন
সাহাবী সালমান ফারসী (রাঃ) পারস্যে প্রচলিত একটি কৌশল শোনালেন—
“আমরা এমন একটি গভীর ও প্রশস্ত খন্দক (পরিখা) তৈরি করি, যেটি ঘোড়া বা উট কোনোভাবেই পার হতে পারবে না।”
নবীজি ﷺ প্রস্তাবটি গ্রহণ করলেন।
খন্দকের বৈশিষ্ট্য:
দৈর্ঘ্য: ৫.৫ কিলোমিটারের মতো
গভীরতা: ১২ ফুটের বেশি
প্রস্থ: প্রায় ১৫ ফুট
হাজার হাজার সাহাবী হাতে কোদাল নিয়ে দিন–রাত খনন করতে থাকেন।
শীত, ক্ষুধা, ক্লান্তি—সবকিছুর পরও তারা কাজ থামাননি।

নবীজি ﷺ নিজে কোদাল হাতে নিয়ে খনন করতেন।
এক বড় পাথর ভাঙতে না পারলে তিনি আঘাত করলেন, আর প্রতিবার—
আল্লাহর নূর প্রকাশ পেল
তিনটি বিজয়ের সুসংবাদ দিয়েছিলেন
ইয়েমেন, শাম, রোম—এ জায়গাগুলো মুসলমানদের হবে
যা পরে ইতিহাসে সত্য হয়েছে।

🔥 শত্রু বাহিনী এসে খন্দক দেখে হতবাক
যখন কোরাইশসহ মিত্রবাহিনী মদিনায় এসে পৌঁছায়, তারা হঠাৎ দেখতে পায়—
একটি বিশাল পরিখা পুরো ফ্রন্টলাইন ঢেকে রেখেছে!
আরবরা এমন কৌশল কখনো দেখেনি।
ঘোড়া, উট, সৈন্য—কেউই পার হতে পারল না।
তাদের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে গেল।

🔥 খন্দক পার হওয়ার চেষ্টা ও প্রথম শহীদ
একসময় উমর ইবনে আবদুয়াদ নামে কুরাইশের এক বিখ্যাত যোদ্ধা খন্দক পার হয়ে আসে। তিনি চিৎকার করে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন: “কেউ আছে আমার সাথে দ্বন্দ্বে নামার?”
আলী (রাঃ) এগিয়ে এসে এক আঘাতে তাকে হত্যা করেন।
এটি ছিল শত্রুর মনোবল ধ্বংস করার মতো ঘটনা।

🔥 মদীনাকে কেন্দ্র করে অবরোধ—১৫ থেকে ২৫ দিন
শীতের প্রবল বাতাস, খাবারের অভাব, মুসলমানদের ক্লান্তি—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন ছিল।
মুনাফিকরা ভেতর থেকে ভয় ছড়াতে থাকে।
কিন্তু মুসলমানরা আল্লাহর উপর ভরসা রাখে।

🔥 সর্বশেষ মুহূর্তে আল্লাহর অলৌকিক সাহায্য
যখন পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়, ঠিক সেই সময়—
আল্লাহ এক ভয়ংকর ঝড় ও প্রবল বাতাস পাঠালেন।
শত্রুদের আগুন নিভে যায়
তাঁবু উড়ে যায়
তাদের সমগ্রী ছড়িয়ে পড়ে
ঘোড়ার পেরেক আলগা হয়ে যায়
তারা আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে যায়
শত্রু বাহিনী বুঝে যায়—এই যুদ্ধ আর সম্ভব নয়।
১৫–২৫ দিনের অবরোধ শেষে তারা পূর্ণ পরাজয় স্বীকার করে পিছু হটে।

🔥 খন্দকের যুদ্ধের ফলাফল
মুসলমানদের বড় বিজয়
কুরাইশদের শক্তি ভেঙে যায়
আরব গোত্রগুলোর ভয় কমে যায়
নবীজির রাষ্ট্র আরও শক্তিশালী হয়
মদীনার ভেতরের মুনাফিকরা চুপ হয়ে যায়
বানু কুরাইযার ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হয়
মুসলমানদের মনোবল উচ্চতম হয়

🔥 খন্দকের যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা
✓ নেতৃত্ব, ঐক্য ও বুদ্ধিমত্তার মিশ্রণই বিজয় আনে
✓ কঠিন সময়ে আল্লাহর সাহায্য আসে
✓ নতুন কৌশল গ্রহণ করা সুন্নত
✓ দলগত কাজের শক্তি অসামান্য
✓ চক্রান্ত যত বড়ই হোক, আল্লাহর পরিকল্পনা সর্বোচ্চ
এই ভিডিওতে আপনি দেখতে পাবেন—
যুদ্ধের পূর্ণ পটভূমি
সালমান ফারসীর ভূমিকা
খন্দক খননের দৃশ্য
নবীজির মুজিজা ও ভবিষ্যদ্বাণী
মিত্রবাহিনীর পতনের কারণ
আল্লাহর ঝড় পাঠানোর মুজিজা
মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয়
ইসলামের ইতিহাস বোঝার জন্য খন্দকের যুদ্ধ একটি অপরিহার্য অধ্যায়।

খন্দকের যুদ্ধের ইতিহাস হচ্ছে ইসলামের একটি অতি মূল্যবান ইতিহাস। খন্দকের যুদ্ধ এর আরেক নাম আহযাবের যুদ্ধ। খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল হিজরি ৫ম সনের শাওয়াল। আহযাবের যুদ্ধ ১ মাস সময়কাল স্থায়ী হয়েছিল।
খন্দক যুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায় ইহুদীরা আরবের বিভিন্ন গোত্রকে মুসলিম বাহিনীর বিপক্ষে যুদ্ধ করার জন্য রাজি করায়। হযরত সালমান ফারসি (রাঃ) এর পরামর্শে এদিকে মুসলিম বাহিনী এটা জানার পর পরিখা খনন বা খন্দক তৈরির কাজ শুরু করে দেয়। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) নিজে মাটি বহন করেন। সাহাবীরা খন্দকের কাজে খুবই মনোযোগি ছিল, এদিকে তাদের ক্ষুধার তীব্রতাও ছিল অতিরিক্ত।
কাফের, মুশরিক, ইহুদী বাহিনী আসার পূর্বেই খন্দক তৈরির কাজ শেষ হয়ে যায়। এই পাশ থেকে মুসলমানরা তীর নিক্ষেপ করতে থাকে যাতে মুশরিকরা খন্দক পার হয়ে এপাশে না আসতে পারে। মুশরিকদের আমর বিন আবদে উদ্দ সহ আরও দুইজন এপাশে চলে এলে হযরত আলী (রাঃ) এর সাথে তার যুদ্ধ হয়। হযরত আলী রাঃ মুশরিক বাহিনীর বীর যোদ্ধা আমরকে হত্যা করে এবং মুশরিকরা ভয়ে ওপাশে পালিয়ে যায়।
মহানবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর যোহর, আসর, মাগরিব, এশা এই ৪ ওয়াক্ত নামাজ কাজা যায়।
সাহাবী ও রসুলুল্লাহ (সঃ) আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। আল্লাহ্‌ তাআলা মুসলমানদের দোয়া কবুল করলেন। ফলে তীব্র বায়ুর মাধ্যমে তুফান দেখা দিল। এই বিরাট তুফানে মুশরিকদের ওপাশে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিলো। এছাড়াও আল্লাহ্‌ তাআলা ফেরেশতা বাহিনী পাঠিয়ে দিলেন যারা মুশরিকদের মনে ভয় ও ত্রাস সৃষ্টি করে দিলেন।
অবশেষে মুশরিকরা ফিরে গেল এবং আল্লাহ্‌ তাআলা খন্দকের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীকে বিজয় দান করলেন।