Скачать или смотреть দফা ৩৭ বিদেশি আগ্রাসন রোধে সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়ন

বিদেশি চলচ্চিত্রের আগ্রাসন থেকে দেশীয় সংস্কৃতি রক্ষা
• সমস্যা: বিশ্বায়নের ফলে বিদেশি, বিশেষত হিন্দি, হলিউড বা অন্যান্য দেশের চলচ্চিত্রের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই চলচ্চিত্রগুলো প্রায়শই ভিন্ন জীবনধারা, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি বহন করে।
• আশঙ্কা: যদি দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্প দুর্বল থাকে এবং পর্যাপ্ত মানসম্মত প্রযোজনা করতে না পারে, তবে দর্শক বিদেশি সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়বে। এর ফলে দেশের নিজস্ব ঐতিহ্য, ভাষা, পোশাক, সামাজিক রীতিনীতি এবং জীবনবোধ ধীরে ধীরে ক্ষুণ্ন হতে পারে।
• লক্ষ্য: শক্তিশালী দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্প এবং মানসম্মত টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ করে দর্শকদের দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট রাখা এবং জাতীয় পরিচিতি (National Identity) সমুন্নত রাখা।
২. সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং এফডিসি-কে আধুনিকীকরণ
• গুরুত্ব: একটি শক্তিশালী চলচ্চিত্র ও টিভি শিল্প গড়ে তোলার জন্য উন্নত অবকাঠামো অপরিহার্য।
• এফডিসি (বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন): এটি দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান সরকারি কেন্দ্র। এর স্টুডিও, সরঞ্জাম, ল্যাবরেটরি এবং কারিগরি সুবিধাগুলো যদি আধুনিক না হয়, তবে আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্ভব নয়। এফডিসিকে প্রযুক্তিনির্ভর করে তোলা জরুরি।
• টিভি চ্যানেল: সরকারি (যেমন: বিটিভি) এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো হলো দেশীয় সংস্কৃতি প্রচারের প্রধান মাধ্যম। পুরনো ও সেকেলে নির্মাণ সরঞ্জাম, সীমিত বাজেট এবং নিম্নমানের কারিগরি সুবিধা মানসম্মত অনুষ্ঠান নির্মাণে বাধা দেয়। আধুনিক ক্যামেরা, সম্পাদনা সফটওয়্যার, স্টুডিও এবং সম্প্রচার প্রযুক্তি প্রয়োজন।
৩. সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত আর্থিক অনুদান প্রদান
• কারণ: চলচ্চিত্র ও টিভি অনুষ্ঠান নির্মাণ একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। দেশীয় নির্মাতাদের বিদেশি চলচ্চিত্রের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হলে উচ্চমানের প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ভালো বাজেট প্রয়োজন।
• ব্যবহার: এই অনুদান মূলত নিম্নোক্ত খাতে ব্যবহৃত হতে পারে:
o এফডিসি ও টিভি চ্যানেলগুলোর যন্ত্রপাতি ক্রয় ও সংস্কার।
o কারিগরী জনবলের প্রশিক্ষণ।
o ঐতিহ্যবাহী ও পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণে সরাসরি সহায়তা প্রদান।
• ফলাফল: পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা পেলে উন্নত মানের নির্মাণ নিশ্চিত হবে, যা দর্শকদের আকর্ষণ করবে এবং সংস্কৃতির মান বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
৪. দেশীয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের জন্য স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থা
• সমস্যা: দেশের অনেক শিল্পী, পরিচালক, সহকারী কর্মী, লাইটম্যান, রূপসজ্জাকর (মেকআপ আর্টিস্ট) ও অন্যান্য কলাকুশলী দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বা চুক্তিতে কাজ করেন। তাদের আয়ের কোনো নির্দিষ্ট নিশ্চয়তা থাকে না।
• প্রয়োজনীয়তা: অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তাদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা কঠিন হয়ে পড়ে। স্বাস্থ্যবীমা চালু হলে তাদের আর্থিক ও মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
• ফলাফল: কর্মজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে তারা আরও মনোযোগ দিয়ে এবং নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারবেন, যা শিল্পের সামগ্রিক মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
৫. চলচ্চিত্র প্রযোজকদের জন্য সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের সুযোগ সৃষ্টি
• সমস্যা: একটি বড় বাজেট নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করার জন্য প্রযোজকদের প্রায়শই বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। প্রচলিত ব্যাংক ঋণের শর্তাবলী কঠিন বা উচ্চ সুদের হওয়ায় প্রযোজকরা ঝুঁকি নিতে ভয় পান।
• প্রয়োজনীয়তা: সরকার যদি চলচ্চিত্র নির্মাণকে একটি শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে স্বল্প সুদে বা সহজ জামানতে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করে, তবে নতুন প্রযোজক ও বড় বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবেন।
• ফলাফল: বাজারে নতুন নতুন ও বড় বাজেটের চলচ্চিত্র আসবে, যা শিল্পের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করবে এবং বিদেশি চলচ্চিত্রের সাথে পাল্লা দেওয়ার সক্ষমতা বাড়াবে।
"১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং ২০২৪ সালের আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে তাঁদের নিজ নিজ জেলায় ভাস্কর্য, এবং শহীদদের নামে সেতু, রাষ্ট্রীয় ভবন এবং রাস্তা নির্মাণ করতে হবে।"