ভুল ধারণা-১: কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপ হয় না।
অনেকে ভাবেন, উচ্চ রক্তচাপ বুড়োদের রোগ। আসলে তা নয়। অল্প বয়সেও উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে।
অতি লবণযুক্ত ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ওজন বৃদ্ধি, খেলাধুলা, ব্যায়াম বা কায়িক শ্রমের অভাবে অল্প বয়সীদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বাড়ছে।
আবার বিভিন্ন ধরনের অসুখ, যেমন বংশগত কিডনি রোগ, কিডনির প্রদাহ, ত্রুটিপূর্ণ কিডনি, কিডনির রক্তনালির সমস্যা বা কিডনির টিউমার হলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে।
হরমোনজনিত সমস্যা, মস্তিষ্কের টিউমার, লুপাস, রক্তনালির প্রদাহ বা জন্মগত রক্তনালির সংকোচন এবং দীর্ঘদিন স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ সেবনের ফলে কম বয়সেও উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
ভুল ধারণা-২: বয়স বাড়লে তো রক্তচাপ বাড়বেই।
বয়স হলে রক্তচাপ একটু বেশিই থাকে, এ জন্য চিন্তার কিছু নেই, এমন ধারণাও সঠিক নয়। উচ্চ রক্তচাপ যে বয়সেই ধরা পড়ুক, তাকে উচ্চ রক্তচাপ হিসেবেই গণ্য করা উচিত।
উচ্চ রক্তচাপকে স্বাভাবিক না ভেবে নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো সহজ হয়।
ভুল ধারণা-৩: কোন উপসর্গ তো নেই, কেন চিকিৎসা নেব?
আমার কোনো শারীরিক সমস্যা নেই, মাথাব্যথা বা ঘাড় ব্যথা নেই, মাথা ঘোরে না বা ঝিমঝিমও করে না। আমার উচ্চ রক্তচাপ থাকতেই পারে না।
আমাদের অনেকের এরকম ধারণা আছে। কিন্তু ধারণাটা পুরোপুরি ভুল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো উপসর্গ থাকে না। নিয়মিত রক্তচাপ মাপা ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত করার উপায় নেই।
ভুল ধারণা-৪: ঘাড়ে ব্যথা মানে রক্তচাপ বেশি।
ঘাড়ে ব্যথা হলে কেউ কেউ মনে করেন, নিশ্চয়ই রক্তচাপ বেড়েছে। এই ধারণাটাও অমূলক।
ঘাড়ে ব্যথা মানেই রক্তচাপ নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্তচাপ বৃদ্ধির কোনো উপসর্গ বোঝা যায় না।
তবে, রক্তচাপ খুব বেশি বেড়ে গেলে দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, বুকে ব্যথা বা বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, লালচে প্রস্রাব, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাথাব্যথা, শরীরের অংশবিশেষ বা একাংশের দুর্বলতা কিংবা অবশ হওয়া এবং অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের খিঁচুনি হতে পারে।
ভুল ধারণা-৫: ডিম, দুধ ও মাংস খাওয়া নিষেধ।
অনেকের ধারণা, উচ্চ রক্তচাপ হলে ডিম, দুধ ও মাংস খাওয়া নিষেধ। এসব খাবার খেলে রক্তচাপ বাড়ে।
এটা একদমই ঠিক নয়। লবণ খেলে রক্তচাপ বাড়ে বটে, কিন্তু দুধ-ডিমের সঙ্গে রক্তচাপ বৃদ্ধির কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়লে, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ঘি, মাখন, ডালডা এবং এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার, দুধের সর, ভাজা পোড়া খাবার, লাল মাংস যেমন গরু বা খাসির মাংস, ট্রান্সফ্যাটসমৃদ্ধ বেকারির খাবার, লবণ ও অধিক লবণজাত খাবার এবং কোমল পানীয় এড়িয়ে চলা উচিৎ।
সরবিহীন দুধ রোজই খাওয়া যায়। ডিম, মুরগির মাংস নিয়মিত খেতে কোনো মানা নেই।
ভুল ধারণা-৬: লবণ ভেজে খাওয়া যাবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাবারে বাড়তি লবণের ব্যবহারে বারণ। উচ্চ রক্তচাপের রোগীর দৈনিক এক চামচের বেশি লবণ খাওয়া ঠিক নয়।
অনেকের ধারণা কাঁচা লবণ নিষেধ তো লবণ ভেজে বা টেলে খাওয়া যাবে। আসলে লবণ যেভাবেই খান, উচ্চ রক্তচাপ বাড়াবেই।
ভুল ধারণা-৭: তেঁতুল গুলে খেলে রক্তচাপ কমে।
রক্তচাপের পরিমাণ বেশি দেখলে কেউ কেউ পানিতে তেঁতুল গুলে খান বা টক খান। এতে রক্তচাপ কমে না। বরং লবণ মিশিয়ে এসব খেলে রক্তচাপ আরও বেড়ে যেতে পারে। তার ওপর হতে পারে গ্যাস।
ভুল ধারণা-৮: রক্তচাপ স্বাভাবিক, ওষুধ কেন চলবে?
বাড়িতে বা দোকানে গিয়ে রক্তচাপ মেপে দেখলেন স্বাভাবিক। একটু নিচের দিকেই। কেউ হয়তো বলল, আপনি তবে কেন শুধু শুধু ওষুধ খাবেন?
এটি গুরুতর ভুল। কোনো কারণে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে না গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ বন্ধ করা ঠিক নয়। উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ হঠাৎ বন্ধ করলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, এমনকি জীবন ঝুঁকিতেও পড়তে পারে।
ভুল ধারণা-৯: রক্তচাপ বাড়তি, তবে ওষুধ বাড়িয়ে খাবেন?
আবার উল্টোটাও হতে পারে। কাউকে দিয়ে রক্তচাপ মাপিয়ে দেখলেন একটু বাড়তির দিকে। অমনি নিজে নিজে ওষুধ বাড়িয়ে নিলেন, এক বেলার জায়গায় দুই বেলা খেয়ে নিলেন বা মাত্রা দ্বিগুণ করে নিলেন।
এটাও ভুল। নানান কারণে একদিন রক্তচাপ বাড়তেই পারে। তাই বলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা নিজে নিজে বাড়ানো ঠিক নয়।
ভুল ধারণা-১০: ওমুকের ওষুধ খুব ভালো।
উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়লে অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে বন্ধু, স্বজন বা পরিবারের কারও ব্যবস্থাপত্র দেখে ওষুধ খান।
অমুকের ওই ওষুধে নিয়ন্ত্রণ হয়েছে বলে আমার জন্যও এটি প্রযোজ্য। তা নাও হতে পারে। কোন ওষুধ আপনার জন্য প্রযোজ্য, তা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে।
আনুষঙ্গিক কিছু বিষয়, যেমন- হাঁপানি, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ বা অন্য কোনো রোগ থাকলে সে অনুযায়ীই হবে আপনার ওষুধের ধরন। সে জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ওষুধ নির্বাচন করতে হবে।
আপনার মধ্যে এর কোনি একটি ভুল ধারণা থাকলেও শুধরে নিন আজই।
Dr. Saiful Islam
Naturopathic Physician
Founder & Director
DESH Health Center
Contact:
Cell & WhatsApp: +8801711450178
e-mail: [email protected]
/ deshhealhcentre
Fair Use Disclaimer: This channel may use some copyrighted materials without specific authorization of the owner but contents used here falls under the “Fair Use” as described in The Copyright Act 2000 Law No. 28 of the year 2000 of Bangladesh under Chapter 6, Section 36 and Chapter 13 Section 72. According to that law allowance is made for "fair use" for purposes such as criticism, comment, news reporting, teaching, scholarship, and research. Fair use is a use permitted by copyright statute that might otherwise be infringing. Non-profit, educational or personal use tips the balance in favor of fair use.
Информация по комментариям в разработке