Скачать или смотреть 🛕 Hangseshwari Temple 🛕 Hooghly | হংসেশ্বরী মন্দির বাঁশবেড়ীয়া হুগলী |

🛕 বাঁশবেরিয়া হংসেশ্বরী মন্দির 🛕

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায় ব্যান্ডেলের কাছাকাছি বাঁশবেরিয়ায় অবস্থিত একটি বিখ্যাত কালীমায়ের মন্দির হলো হংসেশ্বরী মন্দির। প্রায় দুশো বছরের পুরনো এই প্রাচীন মন্দির।

রাজা নৃসিংহদেব ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে স্বপ্নে আদেশ পেয়ে এই হংসেশ্বরী মন্দির নির্মাণ শুরু করেন। কিন্তু তিনি জীবিত অবস্থায় এই মন্দির সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি।

মুঘল আমলের দুর্গ-নগর বংশবাটী বা বাঁশবেড়িয়া কালের নিয়মে আজ হৃতগৌরব হলেও আমরা যে সময়ের কথা বলছি, সে সময় প্রসিদ্ধ জনপদ হিসাবে বংশবাটীর বেশ খ্যাতি ছিল। প্রজাবৎসল হিসাবে খ্যাতি ছিল এখানকার রাজপরিবারেরও।

বাঁশবেড়িয়া রাজপরিবার দত্তরায়দের আদি নিবাস ছিল বর্ধমানের পাটুলিতে। পরিবারটি বরাবর মুঘল সম্রাটদের বিশ্বাসভাজন কর্মচারী হিসাবে কাজ করে এসেছে এবং ফলস্বরূপ মুঘল সম্রাট আকবরের কাছ থেকে “রায়” উপাধি এবং তাঁর পুত্র জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে “মজুমদার” উপাধি লাভ করেছিল। সে যুগে বাংলায় মাত্র চারটি মজুমদার উপাধিযুক্ত পরিবার ছিল, যার মধ্যে পাটুলির দত্তরায় ছাড়া নদীয়ার কৃষ্ণনগর রাজপরিবারের পূর্বপুরুষ ভবানন্দের নাম উল্লেখযোগ্য।
হংসেশ্বরী মন্দিরটির নির্মান শুরু করেন রাজা রামেশ্বর রায়ের প্রপৌত্র নৃসিংহদেব রায়। এর মধ্যে বাঁশবেড়িয়া রাজবাড়ির উপর দিয়ে বয়ে গেছে অনেক ঝড়। রামেশ্বর রায়ের নাতি তথা নৃসিংহদেবের পিতা গোবিন্দদেবের অকাল মৃত্যুতে জমিদারির বেশ কিছু অংশ হাতছাড়া হয়ে যায়। পরে ওয়ারেন হেস্টিংস ও লর্ড কর্নওয়ালিসের বদান্যতায় অপহৃত জমিদারির কিছুটা অংশ পুনরুদ্ধার করা গেলেও সম্পূর্ণটা উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি, তা করতে হলে লন্ডনের কোর্ট অফ ডিরেক্টরের কাছে আর্জি জানাতে হত। ব্যাপারটি প্রচুর সময় ও অর্থ খরচ সাপেক্ষ ছিল। কিন্তু এই সময়ে তৎকালীন রাজা নৃসিংহদেব কাশী চলে যান এবং ১৭৯২ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি কাশীতে থেকে তন্ত্রচর্চা করেন ও ‘উড্ডীশতন্ত্র’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। ১৭৯৯ খ্রীস্টাব্দে তিনি কাশী থেকে ফিরে আসেন এবং জমিদারির মালিকানা উদ্ধারের পরিবর্তে তাঁর লন্ডন যাওয়ার উদ্দেশ্যে জমানো অর্থ দিয়ে তন্ত্রমতে একটি মন্দির স্থাপনার কথা ভাবেন। প্রপিতামহের তৈরী অনন্ত বাসুদেব মন্দিরটির ক্ষয়প্রাপ্ত অবস্থা দেখে তিনি ঠিক করেন পোড়ামাটির মন্দির না বানিয়ে পাথরের মন্দির বানাবেন।

রাজা নৃসিংহ দেব রায় মহাশয়
১৭৯৯ খ্রীস্টাব্দে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ১৮০২ খ্রীঃ মন্দিরের কাজ অসমাপ্ত থাকা অবস্থায় নৃসিংহদেব দেহত্যাগ করেন। এবং নৃসিংহদেবের প্রথম স্ত্রী সহমরণে যান তার সঙ্গে।

নৃসিংহদেবের দ্বিতীয় স্ত্রী রাণী শঙ্করী ১৮১৪ খ্রীস্টাব্দে স্বামীর অসমাপ্ত মন্দিরটির সার্থক রূপ দান করেন। শোনা যায়, মন্দির তৈরির জন্য পাথর আনা হয়েছিল উত্তর প্রদেশের চুনার থেকে এবং মন্দিরের মিস্ত্রী-কারিগরদের আনা হয়েছিল রাজস্থানের জয়পুর থেকে। মন্দিরটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছিল তখনকার দিনে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা।

হংসেশ্বরী মন্দিরটি দক্ষিণমুখী, উচ্চতা ৭০ ফুট। এর চারিদিকে বারান্দা ও সামনে উন্মুক্ত ইটের তৈরি বাঁধানো চত্বর রয়েছে। তন্ত্র মতে তৈরী এই পাঁচতলা মন্দিরটিতে আটকোণে ৮ টি, মধ্যস্থলে ৪ টি ও কেন্দ্রস্থলে ১ টি মিলে মোট ১৩টি মিনার বা চূড়া রয়েছে।

দেবী প্রতিমাটি নীলবর্ণের। দেবীর বামহাতে খড়গ ও নরমুন্ড, এবং ডানহাতে অভয়মুদ্রা ও শঙ্খ। দেবীর প্রধান বাৎসরিক পুজো হয় কার্ত্তিক অমাবাস্যায় দীপান্বিতা তিথিতে। বছরে ৩৬৪ দিন দেবীর শান্তমূর্তি, কিন্তু দীপান্বিতা অমাবস্যার একটি রাতের জন্য দেবীর এলোকেশী রূপ। সেদিন সন্ধ্যারতির পর দেবীর মুখে পরিয়ে দেওয়া হয় রূপোর মুখোশ ও সোনার জিভ। গায়ের বস্ত্র খুলে কেবল ফুল-অলঙ্কার সজ্জিত রাজবেশ পরানো হয়। বছরের অন্যদিন গুলিতে দখিণা কালিকা মতে পুজো হলেও বছরের এই একটি দিন তান্ত্রিক মতে পুজো হয়।

এছাড়াও প্রতি অমাবস্যায় ও স্নানযাত্রার দিন দেবীর বিশেষ পুজো হয়। দেবীর নিত্যপুজো ও অন্নভোগের ব্যবস্থা আছে। প্রতি ১২ বছর বা এক যুগ অন্তর দেবীর অঙ্গরাগ করা হয়। ১৮২০ সাল নাগাদ দেবীর অলঙ্কার চুরি যায়। পরবর্তী কালে মন্দিরটি আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে চলে এলেও দেবীমুর্তি, অলঙ্কার ও মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এখনও পাশের রাজবাড়ির সদস্যদের তত্ত্বাবধানেই রয়েছে।

কিভাবে যাবেন !

হাওড়া থেকে কাটোয়া লোকালে চেপে বাঁশবেড়িয়া স্টেশনে নামুন, স্টেশন থেকে অটো/ টোটো তে পৌঁছে যান হংসেশ্বরী মন্দিরে,
এছাড়া ব্যান্ডেল স্টেশন থেকেও হংসেশ্বরী মন্দির যাবার অটো টোটো পাবেন। সুতরাং কাটোয়া লোকাল না পেলে হাওড়া মেইন লাইনের যে কোন ট্রেন ধরে ব্যান্ডেল পৌঁছে যান সেখান থেকে টোটো ধরে চলে আসুন মন্দিরে।

আর যদি মনে করেন সড়কপথে যাবেন, তাহলে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ধরে পৌঁছে যান কল্যাণী। সেখানে ঈশ্বর গুপ্ত সেতু দিয়ে গঙ্গা পার করেই বাঁ হাতে পাবেন হংসেশ্বরী মন্দির যাবার ছোট রাস্তা।

এছাড়া বালি থেকে স্টেট হাইওয়ে ১৩ (চলতি নাম দিল্লী রোড) ধরে চলুন আসুন মগরা। সেখান থেকে স্টেট হাইওয়ে ৬ ধরে বাঁশবেড়িয়ার ঝুলনিয়া মোড় থেকে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তা ধরুন। ঈশ্বর গুপ্ত সেতুতে ওঠার ঠিক আগে ডানদিকে পাবেন হংসেশ্বরী মন্দির যাবার ছোট রাস্তা।

#tourwiththesanjibbiswas
#Tourwiththesanjibbiswas
#HangseshwariTemple
#HangseshwariTempleHooghly
#BansberiaHangseswariTemple
#হংসেশ্বরীমন্দির
#হংসেশ্বরীমন্দিরহুগলী
#বাঁশবেড়িয়াহংসেশ্বরীমন্দির
#OffbeatTouristPlacesNearKolkata
#WeekendTourFromKolkata
#WeekendTripFromKolkata
#OffbeatDestinationofWestBengal
#OnedayTripFromKolkata
#KonnagarHooghlyTrip


ইউটিউব চ্যানেল লিংক :-    / tourwiththesanjibbiswas  

‪@TravelWithKoushik‬ ‪@explorershibaji‬ ‪@NaturesWomb‬‪@travelguideavik‬