Скачать или смотреть আব্দুল্লাহ বিন মোবারক (রহঃ) সাথে জনৈক বুড়ি মহিলার আল-কোরআনের ভাষায় কথোপকথোন- দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী

আল কোরআনের ভাষায় কথোপকথোন
কোরআন এ কারীমকে কে তারা এত ভালবাসতেন, এত সম্মান তারা দিতেন এত মর্যাদা দিতেন, কোরআন দিয়ে কথা বলার ক্ষমতা তারা আর্জন কররেছিলেন জোরে বলেন সুবহান্নাল্লাহ হযরত আব্দুল্রাহ বিন মোবারক- রহঃ জবরদস্ত আলেম তার আমলে হজ করতে এসেছিলেন। হজের কাজ সমাপন করে যখন তিনি রওনা করেছেন, দেখেন কোন মানুষ জন নাই কাবার চত্তরে একটা মহিল-চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছেন।ওনি মনে করলেন বুজিবা লোকটা মড়া ? মড়া কি জিন্দা- বোঝার জন্য কাছে গিয়ে ছালাম দিলেন আছ্ছালামু আলাইকুম।ছালামের জবাব ওয়ালাইকুম আছ্ছালাম না হয়ে চাদরের ভিতর থেকে জবাব এল, “সালামুন কওলাম মির রব্বির রহিম”পরম করুনাময় পরওয়ারদিগার পক্ষথেকে তোমার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।মুহাদ্দেছ সাহেব প্রশ্ন করলেন মা হজ্জ করতে এস লোকজন তো সব চলে গেছে আপনি এখানে একা একা পড়ে আছেন কেন? তিনি জবাবে কোরআনে কারীম থেকে বললেন,“মাইয়ুদনিলিল্লাহু ফামালাহু ইন হাদ” আল্লাহ পাক যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ পথ দেখাতে পারে না।অর্থাৎ আমিতো হজ্জ করতে এমছিলাম পথ হারিয়ে ফেলেছি সাথী সঙ্গীরা কে কোথায় চলে গেছে আমি খুজে পাই নাই এজন্য মুসিবতে পড়েছি একাকি পড়ে আছি এখন আমার উপায়টা কি?
মুহাদ্দেছ সাহেব বলছেন মা একাকীনি এই আবস্থায় কত সময় পড়ে আছেন ?
তিনি জবাবে কোরআনে কারীম একটি আয়াত তেলায়ত করে জবাব দেন,“ছালা ছালা ইয়াদিন সাবিয়া”
তিন রাত পূর্ণ হয়েছে। আহারে তিনটা রাত আপনার পূর্ন হয়ে গেল এখানে। আপনার পানাহারের ব্যবস্থা কি আপনি খেইছেন কি ? বুড়ি জবাবে কোরআনে কারীমের আয়াত পেশ করে মুহাদ্দিসের প্রশ্নের জবাব দেন, “আল্লাযী হুয়া ইয়তুয়িমুনী ওয়া ইয়াছবির” ঐ মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন তিনি আমার পনাহারের বন্দোবস্ত করেছেন। মুহাদ্দেছ সাহেব বলছেন,- মা আমার কাছে কিছু খাবার আছে আপনি দয়া করে এই খাবারটুকু গ্রহন করুন।বুড়ি তখন কোরআনে করীমের একটি আয়াত পাঠ করে এই প্রস্তাবকে ডিনাই করলেন বুড়ি বললেন,“ ছুম্মা আতিম্মুছ ছিয়ামা ইলাল্ লাইল” তোমাদের রোজাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ণ কর। এদ্দারা বুড়ি প্রমান করলেন আমিতো রোজা রাখছি কাজেই সন্ধ্যা আসার আগে কিছুতো খাইতে পারব না।

মুহাদ্দেছ সাহেব বলছেন, বুড়ি মা এটা যখন রমযান মোবারকের মাস নয় আপনি বুঝি নফল রোজা রেখেছেন সফরের হালতে ফরজ রেযাওতো ছেড়ে দেওয়া যায়। আপনি কি খাইছেন না খাইছেন, আপনি আমার এই খাবার গুলি খান। রোজা ভাংলে অসুবিধ হবে না।নফল রোযা ভাংলে অসুবিধা কি ? বুড়ি জবাবে বলছেন, “ওয়া আনতা ছুমু খইরুল্লাকুম ইনকুনতুম তায়লামুন” যদি তুমি নফল রোযা রাখ তা তোমার জন্য কল্যান কর।
সুতরাং আমি নফল রোযা রোখছি আমার জন্য কল্যান কর তোমার কথামত আমি খাব নাকি।
মুহাদ্দেছ সাহেব বলছেন, বুড়ি মা প্রত্যেক কথার জবাব কোরআন দিয়ে দেন কেন কারনটা কি ?
বুড়ি কোআনের আয়াত পাঠ করে জবাব দিচ্ছেন, “মা ইয়লফিজু মিন কওলিন ইল্লা লাদাইহি রকিবুন আতিদ”
মানুষ এমন কোন কথা বলে না যে কথা ফেরেস্তারা রেকর্ড করে না রাখে সব কথা রেকর্ড হয়ে যায়। সুতরাং আমি চিন্তা ভাবনা করে বাছাই করে নিলাম কোরআন দিয়ে কথা বলব এ কথাগুলি রেকর্ড হবে পাপতো হবেইনা প্রত্যেক আক্ষরের ১০ ১০ করে নেকী হবে আমল নামায় লেখা হবে। মুহাদ্দেছ সাহেব-- মনে মনে একটু চিন্তা করলেন-- এই বেটি হল বুড়ি একটা মেয়ে লোক- আর আমি মুহাদ্দেছ মানুষ- সে কোআন মাজীদ দিয়ে কথা বলে বাহাদুরি দেখায়- আমি তারে মাতৃ জবান দিয়ে কথা বলাবই- এই চিন্তা তিনি করলেন- তিনি তো বড় আলেম ছিলেন অত্যান্ত বড় আলেম।তার সম্পর্কে তার সাথীরা কবিতা রচনা করেছিলেন- তিনি যখন তার এলাকা ছেড়ে গিয়েছিলেন তার সাথীরা বলেছিলেন,“ ইযা ছাড়া আব্দুল্লাহ মিম্মারউ লাইলাতাম = ২ বার ছড়া আনহা নুরুহা ওয়া জামালুহা” আব্দুল্লাহ যখন আমাদের এলাকা ছেড়ে গেল তখন এলাকার নুর গেল সুন্দর্য গেল আলো গেল সব হারায় ফেললাম যেহেতু তিনি সাহেবে এলেম ছিলেন ।তারা বলল,“ইযা যুকিরাল আখিয়ারু ফি বান্দাতিন ফা হুন আনযুমুন ওয়া আনতা হিলালুহা” আমরা যখন আমাদের বন্ধুদের মধ্যে আলোচনা করি তখন আমাদের বন্ধুরা আর যত বড় বড় আলেম আছে তারা যদি তাঁরকা হয় তবে আব্দুল্লাহ তুমি সেই তারকারাজির মধ্যে চাঁদের মত এরকম বড় আলেম ছিল হযরতে আব্দুল্লাহ বিন মোবারক।তিনি চিন্তা করলেন এই বুড়ি, দেখি তারে দিয়ে মাতৃ জবান দিয়ে কথা বলা যায় নাকি তিনি জিজ্ঞাস করলেন বুড়ি মা বাড়ি কই? ওনার চিন্তা কোরআন মাজীদে তো আর খাগরাছড়ি ফটিকছড়ি নাই গ্রামের নাম তো নাই ধরা যায় নাকি ? তিনি যখন বাড়ির প্রশ্ন করলেন।
বুড়ি তখন কোরআনে কারীমের আয়াত তেলায়ত করে জবাব দিলেন “সুবহান্নাল্লাযী আসর বিআবদিহী লাইলাম মিনাল মাসজিদিল হারমি ইলাল মাসজিদিল আকসা”পবিত্র মহান সত্তা দোষ ত্রুটি অক্ষমতা দূর্বলতা থেকে মুক্ত তিনি যিনি তার বান্দাকে ইসরার করিয়েছেন মসজিদিল হারাম হতে মসজিদিল আকসায়। এদ্দারা তিনি প্রমান করতে চাইলেন মসজিদে হারামে আসছি হজ করতে আর মসজিদে আকসার কাছে আমার বাড়ি।
মুহাদ্দিছ সাহেব না পেড়ে তিনি তখন চিন্তা করলেন এমন-- বিদুষি মহিলা একা একী ফেলে যাওয়া কিছুতেই বুদ্ধিমানের কাম না তিনি বললেন মা আমার কাছে একটা উট আছে আপনি যদি রাজী হন উটের পিঠে ছাওয়ার করে আপনার গন্তব্যে পৌছে দেই।বুড়ি তখন কোরআনে কারীমের একটি আয়াত পাঠ করে,সম্মতি প্রদান করলেন তিনি পড়লেন, “ওয়া ইন তাফআলু মিন খইরি ইয়ালামুনল্লাহ” যদি তুমি কোন ভাল কাজ কর তবে অবশ্যই আল্লাহ তা জানবেন এবং উত্তম ভাবে আল্লাহ তোমাকে পুরষ্কৃত করবেন।তার মানে হল পথহারা মানুষকে পথ দেখানো নিশ্চই ভাল কাজ তুমি একটা ভাল প্রস্তাব করেছ।
মুহাদ্দেছ সাহেব বলছেন মা আমার এ উটের উপর আরোহন করুন। বুড়ি উটের উপর আরোহন করতে যাচ্ছেন হঠাৎ লক্ষ করে দেখছেন মুহাদ্দেছ সাহেব তার দিকে তাকিয়ে আছেন বুড়ি তখন কোরআনে কারীমের একটি আয়াত তেলায়ত করেন “কুল্লিল মুমিনিনা ইয়াগুদ্দু মিন আবছরিহিম”ও নবী মুমিন লোকদের মুমিন পুরুষদের আপনি বলে দিন তারা যেন তাদের চক্ষুকে পরনারী থেকে নিন্মগামী করে।বুড়ি এ আয়াত দ্বারা মুহাদ্দিছকে বুঝাতে চাইলেন আমি বুড়ি মানুষ উটের ছাওয়ার হতে গিয়ে না জানি বেসতর হয়ে যেতে পারি চক্ষুকে নিন্মগামী করেন।সুবহান্নাল্লাহি।