নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পের সঙ্গে দাঁড়িয়ে হেঁ হেঁ করছিলেন, ট্রাম্প বলেছেন মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন, এম এ জি এ, মাগা। শুনে আহ্লাদে আটখানা মোদিজী বলেছিলেন, আমাদেরও ওইরকম শ্লোগান, মেক ইন্ডিয়া গ্রেট এগেইন, কি কান্ড ওনার মনেই ছিল না যে গত ১১ বছর ধরে উনি দেশ চালাচ্ছেন, তা হোক, জানালেন আমাদের আছে এম আই জি এ, মিগা আর দুয়ে মিলে নাকি হল মেগা পার্টনারশিপ, আমেরিকা ইন্ডিয়া মেগা বন্ধুত্ব। ২০২৫ এর ফেব্রুয়ারি মেগা বন্ধুত্বের ঘোষণার আগে এবং পরে আমরা দেখলাম অমানবিক ভাবে হাতে পায়ে শেকল বেঁধে ভারতীয় নাগরিকদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে সামরিক প্লেনে করে ফেরত পাঠাচ্ছে আমেরিকা। কলম্বিয়ার মত পুঁচকে দেশও প্রতিবাদ জানালো, ভারতের বিশ্বগুরু চুপ করে বসে রইলেন। তারপর একতরফা বিরাট শুল্ক চাপিয়ে দিলেন ট্রাম্প সাহেব, চাপালেন, তুললেন আবার মাত্র গত পরশু জানিয়েছেন ইস্পাত আর কয়লার ট্যারিফ বাড়িয়ে ৫০ করা হল, আগেই জানিয়েছেন ইলন মাস্ক এর টেসলা বা টিম কুক এর অ্যাপল ভারতে কারখানা খুলুক সেটা তিনি চান না, প্রকাশ্যেই সে কথা বলেছেন। মেগা পার্টনার ভারতের প্রধানমন্ত্রী চুপ। আমেরিকার সরাসরি সমর্থনে আই এম এফ এর লোন পেল, হাতে পেয়ে গেছে ২.১ বিলিয়ন ডলার, মোট পাবে ৭ বিলিয়ন ডলার। আমাদের বিশ্বগুরু ফেকুবাবু এখন চুপ, শিরায় শিরায় সিঁদুর দৌড়চ্ছে। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় ছাত্রদের ভিসা বাতিল, ছাত্রদের জন্য নতুন ভিসা ইন্টারভিউ বন্ধ, বিশ্বগুরু তো এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনো করেছেন, তাই চুপ। এবারে ওয়ার্লড ব্যাঙ্ক ১০ বছরের জন্য ৪০ বিলিয়ন, হ্যাঁ ঠিক শুনছেন ৪০ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য বা বিনিয়োগের কথা জানিয়ে দিল, ৫০% সরকারি বিনিয়োগ, ৫০ % বেসরকারি বিনিয়োগ। খুলে বলি বিশ্বব্যাংক পাকিস্তানের জন্য ২০২৬ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত এক দশ বছর মেয়াদি নতুন কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক (CPF) চালু করেছে, যার আওতায় তারা সর্বোচ্চ ৪০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করবে। সাধারণত বিশ্বব্যাংকের চুক্তি হয় ৪–৬ বছরের জন্য, কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ১০ বছরের দীর্ঘ মেয়াদের ফ্রেমওয়ার্ককে ালাদা পছন্দের তালিকায় রাখা দেশ বলে মনে করছেন অনেকেই, এবং কে না জানে ওয়ার্লড ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তের পেছনে আমেরিকা আছে, ট্রাম্প সাহেব আছেন। এই অর্থের মধ্যে ২০ বিলিয়ন ডলার পাবলিক সেক্টরের (সরকারি প্রকল্প) জন্য, আর ২০ বিলিয়ন ডলার প্রাইভেট সেক্টরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, যা বিশ্বব্যাংক গ্রুপের অংশ ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (IFC)-এর মাধ্যমে বিনিয়োগ হবে। সরকারি অর্থ দিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা, পরিষ্কার জ্বালানি এবং বায়ু দূষণ হ্রাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে কাজ হবে। অপরদিকে, IFC-এর টাকায় প্রাইভেট বিনিয়োগ বাড়ানো, কর্মসংস্থান তৈরি, উৎপাদন খাত, প্রযুক্তি এবং অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন ঘটানোর পরিকল্পনা রয়েছে—রিয়েল এস্টেটের মতো জুয়ার প্রকল্প থেকে সরে এসে বাস্তব উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগে জোর দেওয়া হচ্ছে। এবং মাথায় রাখুন এই বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের নিজস্ব অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ‘উড়ান পাকিস্তান’-এর সঙ্গে মিল রেখেই তৈরি হয়েছে।
Информация по комментариям в разработке