Скачать или смотреть @# বনচাঁড়াল@rear medicinal plant# J.C.Bose experimental plant@

বনচাঁড়াল
জগদীশ চন্দ্র বোসের 'অব্যক্ত' গ্রন্থ থেকে বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ পড়ে গাছেদের সম্বন্ধে ধারণাটা অনেকটা পাল্টে গেল। এখন আর তাই গাছের পাতা ছিঁড়তেও হাত ওঠে না। জগদীশচন্দ্র বসু আলোর উৎসের তারতম ঘটিয়ে বনচাঁড়াল পাতার স্পন্দনের পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলেন। আমরা দশম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে 'স্নায়ুসূত্রে উত্তেজনা প্রবাহ' নামাক প্রবন্ধে বাইরের শক্তি গ্রহণ করে তা ভিতরের শক্তিকে রূপান্তরিত করার উদাহরণ হিসেবে বনচাঁড়ালের উদাহরণ পড়েছিলাম। তখন থেকেই বনচাঁড়ালের প্রতি আমার ভীষণ কৌতুহল। বনচাঁড়াল শব্দকাতর উদ্ভিদ। তুড়ি বাজালেই উদ্ভিদটির আগার ছোটপাতাগুলি নড়তে থাকে তাই একে তূরকচন্ডাল (বা ইংরেজিতে Dancing plant) বলে।
তারকেশ্বর সংলগ্ন রামনগর অঞ্চলে রনের খালের পাড়ে এক বাগদি ভেষজবিশারদের কাছে এই গাছের সন্ধান পেলাম। উনিও অবশ্য সব গাছের নাম জানেন না তবে তাদের উপকারিতা জানেন। ভারত সহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অধিকাংশ দেশেই এই উদ্ভিদ জন্মায়।

বিজ্ঞানসম্মত নাম- Codariocalyx motorius
গোত্র- Fabaceae

বনচাঁড়াল একটি নাতিদীর্ঘ লতানে গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। পাতা ও শাখা প্রশাখা মসৃণ, পাতাগুলি হালকা সবুজ বর্ণের লম্বাটে বল্লমাকার, নয় দশ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পাতার উপরীপৃষ্ঠ মসৃণ ও পশ্চাদপৃষ্ঠ রোমস প্রকৃতির হয়। ফুল মঞ্জুরীপত্র দ্বারা আবৃত্ত থাকে। পরে পরে মঞ্জুরীপত্রগুলি খুলে উন্মুক্ত হয়। ফুলের রং ফ্যাকাসে কমলা বা হালকা বেগুনি বর্ণের হয়। এদের ফলগুলি আংশিক কাস্তে আকৃতির হয়।
ভেষজ ব্যবহার-
ত্বকের বা চামড়ার রোগের জন্য বনচাঁড়াল পাতার রস ভীষণ উপকারী।
মহিলাদের মাসিক ঋতুস্রাব নিয়মিত রাখার জন্য এই গাছের পাতা কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
অর্শের রক্ত বন্ধ করার জন্য এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এ গাছের পাতা ব্যবহৃত হয়।
দাঁতের ব্যথা দূর করতে বন বনচাঁড়াল পাতা ভীষণ ফলদায়ক।

অতি পরিচিত ভারতীয় এই উদ্ভিদ বর্তমানে প্রাকৃতিক পরিবেশে বিরল। তাই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের বিশেষ প্রয়োজন আছে।