মানুষের ভাবনার সুন্দর রূপ হলো কবিতা।
কবিতা মানুষের মনের ভাবকে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে।
১৯৯৯ সনের ২১ শে মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব কবিতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো।
এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল, বিশ্বব্যাপী কবিতা পাঠ, রচনা, প্রকাশনা ও শিক্ষাকে উৎসাহিত করা। ইউনেস্কোর অধিবেশনে এই দিবস ঘোষণা করার সময় বলা হয়েছিল, "এই দিবস বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কবিতা আন্দোলনগুলিকে নতুন করে স্বীকৃতি ও গতি দান করবে।
প্রথমে কবিতা দিবস পালন করা হতো ৫ অক্টোবর।
পরে পালিত হলো ১৫ অক্টোবর।
১৫ অক্টোবর ছিল রোমান ক্লাসিক্যাল কবি ভার্জিলের জন্মদিন। তার জনপ্রিয় তিনটি সৃষ্টিকর্ম ছিল কাব্যগ্রন্থ ইকলগুয়েজ, জার্জিকস ও অ্যানেইড।
রোমের বিখ্যাত কবিদের মধ্যে তার্জিল অন্যতম এবং তার অ্যানেইড বিবেচিত হতো জাতীয় মহাকাব্য হিসেবে এবং এই মহাকাব্য খুব জনপ্রিয়। পাশ্চাত্য সাহিত্যে প্রভাবিত ছিলেন এই কবি।
হোমারের ‘ইলিয়ড অ্যান্ড Oডিসি’র মডেল অনুকরণে তিনি লেখেন অ্যানেইড। এখনো অনেক দেশে ওই ইতিহাস অনুসরণে অক্টোবর মাসে কবিতা দিবস পালিত হয়।
বৃটেনে ১৯৯৪ সাল থেকে পালিত হয় কবিতা দিবস। প্রতিটি দিবসেই একজন কবিকে মূল্যায়ন ও কবিতার আঙ্গিক পর্যালোচনা করা হয়। প্রতিটি বছরে স্থির করা হয় একেকটি প্রতিপাদ্য।
কবিতা অন্বেষণে ভ্রমণ, ভাবনা, চিন্তা-চেতনা বাড়ে এবং ভবিষ্যৎ পরিচয় অন্যতম হয়। লেখক-কবি প্রকৃতিগতভাবেই, উদ্ভাস-উন্মেষ ঘটে। সবক্ষেত্রেই প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানার্জনের অধিক গুরুত্ব রয়েছে, কিন্তু কবি ভাবনায় প্রকৃতি, প্রেম ও সাধনা কবিকে শানিত করে , মোহিত করে। আমরা যদি পেছনের দিকে তাকাই, আমাদের বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের দিকে ,এমনকি স্বাধীনতা ও রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, সৃষ্টিকর্ম ও গুণকর্মের দিকে Takai , তখনই বুঝা যায় কবিতা গুণের, সৃষ্টিকর্মের, অনুভূতির, ভালবাসার কৃষ্টি ও ঐতিহ্য তৈরী করে।
গীতাঞ্জলি কাব্য গ্রন্থের জন্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বহুল প্রশংসিত, বিশ্ব দরবারে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। আর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সাম্যের পক্ষে এবং অন্যায়ের বিদ্রোহী হিসেবে খ্যাত। বাংলার মানুষের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠায়, দূরদর্শী রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় স্বাধীনতার কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে প্রজ্জলমান। এছাড়া পল্লী কবি জসিম উদ্দিন, আধুনিক কবি শামসুর রহমান, আল মাহমুদ ও নারী জাগরণের কবি বেগম সুফিয়া কামাল সহ অনেকেই কবিতার মাধ্যমে মানুষকে, সমাজ ও দেশকে চেতনায় ও সুকর্মে মানবিক মূল্যবোধের বাস্তবিক পথ দেখিয়ে গেছেন, যা অম্লান ও চিরভাস্বর।
কবিদের মানসে-মানুষ মানবতা ফুল-প্রকৃতি-শিশু ও পরিবেশ উপাদান হিসাবে নজর কাঁড়ে। কবিতায় থাকে-ছন্দ, মিল ও কাব্য গুণ। শরীর ও মনে দোলা জাগায় কবিতা। কবিতা অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, স্বরবৃত্ত মোটামুটি ৩ রকমের ছন্দে লেখা হয়।
সমাজ গতিশীল, মানুষ পরিবর্তনশীল। একটু লক্ষ্য করলেই বুঝা যাবে , প্রাচীন যুগ মধ্য যুগ, আধুনিক যুগ ও সাম্প্রতিক প্রচলিত ডিজিটাল যুগ এ ,প্রকৃতি ও পরিবেশ দু’টিই ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে। মানুষের ধ্যান-ধারণা-চিন্তা-চেতনা-কাব্যগুণেরও পরিবর্তিত ভাবধারা পরিলক্ষিত।
আঞ্চলিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে সচেতন কবি ও সৃষ্টিশীল কবিতার অগ্রগতি হয়ে উঠুক মানবিকতার নিমিত্তে। আন্তর্জাতিক কবিতা দিবস উপলক্ষে এমN টাই প্রত্যাশা।
Информация по комментариям в разработке