Скачать или смотреть চিলমারী নদীবন্দর। Chilmari River Port. Bangladesh.

চিলমারী নদী বন্দর বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার একটি ঐতিহাসিক ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর, যা ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে অবস্থিত। একসময় এটি অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে জলপথে সংযুক্ত ছিল এবং একটি কাস্টম স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে দেশভাগ ও যমুনা নদীর ভাঙনের ফলে এর গুরুত্ব কমে যায়। ২০১৬ সালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিলমারীকে নদীবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেন, এবং ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল চিলমারী, রাজিবপুর ও রৌমারী এলাকায় নদীবন্দর অবকাঠামো নির্মাণ, যাতে রংপুর বিভাগের সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে নৌপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত হয় ।

তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি ধীর ছিল। ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ৩.২৮% এবং বাস্তব অগ্রগতি ৮% ছিল। ব্যয় বৃদ্ধি ও কাজের অগ্রগতির ধীরগতির কারণে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে ।

সাম্প্রতিক অগ্রগতি

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পুনরায় একনেকে অনুমোদিত হয়, এবং প্রকল্পের ব্যয় ৩৩৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। বর্তমানে প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে, এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিজি বাংলা ও স্ট্যান্ডার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছে ।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা

চিলমারী বন্দরকে ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটের একটি পোর্ট অব কল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যা ভারতের আসাম, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে নৌপথে সংযোগ স্থাপন করবে। এটি স্থানীয় কৃষিপণ্য যেমন পাট, চাল, গম ইত্যাদির রপ্তানি ও আমদানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ।

উপসংহার

চিলমারী নদী বন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এটি শুধু কুড়িগ্রাম জেলার নয়, বরং পুরো রংপুর বিভাগের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।