Скачать или смотреть বিদ্রোহী কবি ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম/Kazi Nazrul Islam

অনেক জ্ঞানী-গুণিজন পৃথিবীকে আলোকিত করেছেন তাদের জ্ঞান এবং কর্ম দ্বারা। একের পর এক রচনা করেছেন এবং গড়েছেন ইতিহাসের পাতা। উন্মোচিত হয়েছে বিজ্ঞান, সাহিত্য জগতের নতুন নতুন দার। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সেই ইতিহাসই চিন্তা, চেতনা ও প্রেরণার উৎস হয়ে চলেছে। তিনি চলে গেছেন আজকের এই দিনে, কিন্তু রয়ে গেছেন সকলের হৃদয়ে, তার সমস্ত কৃতকর্মের দ্বারা, তাদেরই একজন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

তিনি বিংশ শতাব্দীর প্রধান বাঙালি কবি ও সঙ্গীতকার। তার মাত্র ২৩ বছরের সাহিত্যিক জীবনে সৃষ্টির যে প্রাচুর্য তা তুলনারহিত। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তার প্রধান পরিচয় তিনি কবি। কবিতা ও সঙ্গিতে, শ্রোতা বা শিল্পিদের মুগ্ধ করা এই মানুষটি সাম্য, প্রেম, বিরহের কথা বলেগেছেন। থেকেছেন মানুষের হৃদয়ে, থেকেছেন ধর্মন্ধতার বিরুদ্ধে সোচ্চার।

তিনিই বাংলাদেশের জাতীয় কবি। আজ তার শুভো জন্মদিন। ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম।জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’।

সত্য প্রকাশের দুর্দান্ত সাহস নিয়ে সজরুল আমৃত্যু সকল অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার ও প্রতিবাদী। এজন্য বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে অধিক পরিচিত। আবার একই সঙ্গে কোমল দরদি মন নিয়ে ব্যথিত-বঞ্চিত মানুষের পাশে থেকেছেন তিনি।

এক হাতে বাঁশি আর অন্য হাতে রণতূর্য নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি এসেই প্রচলিত শিল্প ধারাসমূহকে পাল্টে দিয়ে নতুন বিষয় ও নতুন শব্দে বাংলা সাহিত্য ও সংগীতকে করেছেন সমৃদ্ধ।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অন্যতম এই প্রাণপুরুষের নামের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ‘বিদ্রোহী কবি’, ‘প্রেমের কবি’, ‘সাম্যের কবি’সহ নানা অভিধা। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব এবং বাঙালী মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।

গ্রামের পাশের মক্তবে তিনি শিক্ষা জীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি কুরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন করেন।
১৯০৮ সালে তার পিতার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তার শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্ত হয়।
দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া নজরুলের কর্মজীবনও ছিল অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়।
মসজিদের ইমামতি, লেটোর দলে যোগদান, ১৯১৭ সালে সেনাবহিনীর বাঙালি পল্টনে যোগদান, সাম্যবাদী ধারার রাজনীতি, পত্রিকা সম্পাদনা কিংবা চলচিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়াসহ বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতায় তার জীবন ছিল পূর্ণ।
মাত্র তেতাল্লিশ বছর রয়সে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়ায় এই ঋদ্ধ ও সম্ভাবনাময় জীবন আমৃত্যু নির্বাক হয়ে যায়।

১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে নজরুলকে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদানের সরকারি আদেশ জারী করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান। কবির বাকি জীবন বাংলাদেশেই কাটে।

কাজী নজরুল ইসলাম কবি হলেও সহিত্যের অন্যান্য শাখায়ও তিনি বিচরণ করেছেন। তাঁর রচিত উপন্যাসের মধ্যে- “বাঁধন হারা”, “মৃত্যু-ক্ষুধা”, “কুহেলিকা” উল্লেখযোগ্য। এবং গল্পগ্রন্থের মধ্যে-”ব্যথার দান”,”রিক্তের বেদন”, “শিউলিমালা” বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।”যুগ-বাণী”, “দুর্দিনের যাত্রী”, “রুদ্র-মঙ্গল”, “ রাজবন্দির জবানবন্দি” ছিলো তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ।

সম্মাননা ও পুরস্কার স্বরূপ ১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাংলা সাহিত্যের সর্বোচ্চ পুরস্কার জগত্তারিণী স্বর্ণপদক নজরুলকে প্রদান করা হয় এবং ১৯৬০ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণে ভূষিত করা হয়।

১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

#কাজীনজরুলইসলাম #কাজীনজরুলইসলামবিসিএস #বিদ্রোহীকবিকাজীনজরুলইসলাম #জাতীয়কবিকাজীনজরুলইসলাম #নজরুলইসলাম #কাজীনজরুলইসলামেরগজল #কাজীনজরুল