সুন্দর জীবন গঠনে ইসলামী শিক্ষা, islamic lecture bangla, motivational bangla lecture,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু!
সম্মানিত শ্রোতামন্ডলি,আজ আমি আপনাদের সামনে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি, যা আমাদের জীবনকে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। একজন সফল ও সুখী জীবন গঠনে এই অভ্যাসগুলো অত্যন্ত জরুরি। আসুন, আমরা দেখি ইসলাম এই প্রসঙ্গে আমাদের কী শিক্ষা দেয়।
প্রথমত, কৃতজ্ঞতা ও ধৈর্য্য। ইসলামে কৃতজ্ঞতা একটি অত্যাবশ্যকীয় ইবাদত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে সূরা বাকারা, আয়াত ১৭২ এ বলেছেন, "হে মুমিনগণ! আমি তোমাদেরকে যে পবিত্র বস্তুসমূহ দিয়েছি, তা থেকে তোমরা আহার করো এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, যদি তোমরা কেবল তাঁরই ইবাদতকারী হয়ে থাকো। শুধু তাই নয়, সূরা ইব্রাহীম, ৭ আল্লাহ তাআলা আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, "আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা করলেন, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তবে আমি অবশ্যই তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি কঠোর। অতএব, আমাদের জীবনে যা কিছু আছে, সামান্য হোক বা বেশি, তার জন্য সর্বদা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা উচিত। আর যখন কোনো কঠিন পরিস্থিতি আসে, তখন ধৈর্য ধারণ করা ঈমানের পরিচায়ক। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। দ্বিতীয়ত, আত্ম-নিয়ন্ত্রণ। ইসলাম আমাদের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষা দেয়। আমাদের খেয়াল-খুশি মতো চলার পরিবর্তে শরীয়তের অনুশাসন মেনে চলাই প্রকৃত মুমিনের কাজ। রমজান মাসের সিয়াম সাধনা আমাদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণেরই প্রশিক্ষণ দেয়। রাগ, লোভ, হিংসা – এই সমস্ত নেতিবাচক আবেগ পরিহার করে নিজেদেরকে সংযত রাখাই ইসলামের শিক্ষা।
তৃতীয়ত, শক্তিশালী মানসিকতা। একজন মুমিনের মানসিকতা সবসময় ইতিবাচক হওয়া উচিত। আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং তাঁর রহমতের প্রতি আশাবাদী থাকা ঈমানের অঙ্গ। হতাশ হওয়া বা নিরাশ হওয়া মুমিনের শান নয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং তিনিই আমাদের সকল সমস্যার সমাধানকারী।চতুর্থত, কাজ করা। ইসলাম অলসতাকে ঘৃণা করে এবং কর্মঠ জীবনকে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে সূরা আন-নাজম, ৩৯ ইরশাদ করেছেন, "আর মানুষের জন্য কেবল তাই যা সে চেষ্টা করেছে।" অর্থাৎ শুধু স্বপ্ন দেখলে চলবে না, সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। হালাল রুজি রোজগার করা এবং নিজের হাতে উপার্জন করা ইসলামে অত্যন্ত সম্মানিত কাজ। পঞ্চমত, অবিরত শেখা। জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ফরয। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয। অর্থাৎ জ্ঞান অর্জনের কোনো শেষ নেই, কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। আমাদের জীবনভর জ্ঞান অর্জন করে যেতে হবে, দ্বীনের জ্ঞান হোক বা দুনিয়ার জ্ঞান হোক – যা আমাদের জীবনকে উন্নত করে। তাই সবশেষে এটাই বলবো যে আসুন, আমরা সকলে এই গুণগুলোকে নিজেদের জীবনে ধারণ করি এবং একটি সুন্দর, সফল ও আল্লাহ-সন্তুষ্ট জীবন গড়ি। ধন্যবাদ।
Информация по комментариям в разработке