Скачать или смотреть ১ মামলায় জামিন হয়নি মান্নানের, ৬ মামলায় জামিন সাবেরের!

৫ই আগস্ট গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পাড়ি দেওয়ার পর তার মন্ত্রী-এমপি ও শীর্ষ আমলারা আত্মগোপনে চলে যায়। চালানো হয়, তাদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, ভাঙ্গচুর, অগ্নি সংযোগ। শুধু মন্ত্রী এমপিদের বাড়ি ঘর লুটপাট, ভাঙ্গচুর করে ক্ষান্ত হয়নি, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বঙ্গবন্ধু যাদুঘর, আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ নানা স্থাপনা।

পরবর্তীতে নেমে আসে মামলার খড়গ। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের মামলায় শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গণহারে আসামী করা হয়। সারা দেশে দায়ের হয় অন্তত ৫ শতাধিক হত্যা মামলা। মামলায় আসামীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। প্রতিটি মামলায় আসামী ১শত থেকে ৭ শত পর্যন্ত। এইসব গণ মামলার আইনি ভিত্তি নিয়ে শুরুতে প্রশ্ন তুলেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন।

ব্যারিস্টার সারা হোসেনের কথার প্রতিধ্বনি করলেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

গণ মামলায় গত দুইমাস ধরে প্রতিদিন কাউকে না কাউকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া এখন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। গত ৬ই অক্টোবর বিকেলে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী এবং ইন্টার পার্লামেন্ট ইউনিয়নের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা শাখার একটি টিম। পরদিন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালত পল্টন থানার মকবুল হত্যা মামলায় সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেনের ৫ দিনের রিমান্ড মন্জুর করেন। কিন্তু ২৪ ঘন্টা পার না হতেই মিউজিক্যাল পরিবর্তন হয়।

৬ মামলার সবকটিতে জামিন পেয়ে যান সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। শুধু তাই নয় জামিন আদেশের ঘন্টা-দেড়েকের মধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানা থেকে বেরিয়ে যান।

এর আগে শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত খিলগাঁও থানার ৪ মামলায়, সাবের হোসেন চৌধুরীকে জামিন দেন। এছাড়া পল্টন থানার দুটি মামলায় তাকে জামিনের আদেশ দেন বিচারক জিয়াদুর রহমান।

সাবের হোসেনের বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানার দুটি হত্যা এবং দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। পল্টন থানায় আছে দুটি হত্যা মামলা।

সাবের হোসেনের আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহীন বলেন, অসুস্থ বিবেচনায়, একজন সাবেক সংসদ সদস্য ও ইন্টারপার্লামেন্টারির প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তার জামিন দেন আদালত।

রিমান্ডে থাকা অবস্থায় সাবের হোসেন চৌধুরীকে জামিন দেওয়ায় বাদী পক্ষের আইনজীবী শুধু ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্ষান্ত হননি অর্থের লেনদেনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

সাবের হোসেন চৌধুরীর এই জামিনের বিষয়টি এখন সারাদেশে টক অব দ্যা কান্ট্রি হয়ে উঠেছে। অনেকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী, সজ্জন রাজনীতিবিদ এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে মাত্র একটি। ১৯ শে সেপ্টেম্বর তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার শারিরীক অবস্থা এমন পর্যায়ে যে তার চিকিৎসা সুনামগঞ্জে সম্ভব হয়নি। সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চলছে। তাকে জামিন দেননি আদালত।
কিন্তু একই সঙ্গে দুটি পৃথক আদালতে ৬ টি মামলার জামিন হয় কীভাবে? সাবের হোসেনের যাদুর কাঠি কোথায়? রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করেন সাবের হোসেনের জাদুর কাঠি ইন্টার পার্লামেন্ট ইউনিয়নে!