Скачать или смотреть শাহজাহানের সাম্রাজ্যে নাকি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কথাও চলে না! জানেন, কে এই শেখ শাহজাহান?

বাঘে-গোরুতে এক ঘাটে জল খায় এর হুঙ্কারে!

জানেন, কে এই শেখ শাহজাহান?

কিভাবে এত প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেল তার?

শোনাবো সেই কাহিনী......


সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ইডির অফিসাররা। এক তীব্র জনরোষের মধ্যে পড়তে হয়েছিল ইডির আধিকারিকদের। মাথা ফাটার কারণে হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছেন তিন ইডি আধিকারিক। পুলিশের কাছে ইতিমধ্যেই সেই অভিযোগ জানিয়েছে ইডি। আর এসব কাণ্ডের দরুণ গত ২৪ ঘণ্টা ধরে খবরের শিরোনামে রয়েছে সন্দেশখালির প্রত্যন্ত গ্রাম সরবেড়িয়া। আর সেই গ্রামেরই আরও প্রত্যন্ত এলাকা আকুঞ্জবেরিয়া।

হ্যাঁ, এক সময়ে যার খাওয়া জুটত না, সেই শেখ শাহজাহানের ‘অনুগামীরাই’ বাংলার মাটিতে ঘটাল এক নজিরবিহীন ঘটনা! কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের মাথা ফাটিয়ে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের তাড়া করে কলাবাগান দিয়ে দৌড় করিয়ে ভয়ঙ্কর প্রেক্ষাপট গড়ল তারা। আর এরপর থেকেই শেখ শাহজাহান কত বড় দাপুটে নেতা, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সুন্দরবন লাগোয়া সন্দেশখালির ছোট জায়গায় শেখ শাহজাহান একটি বিরাট নাম। অধুনা তৃণমূল নেতা তথা পদাধিকারী হলেও তার রাজনৈতিক উত্থান কিন্তু বাম জামানা-তে, এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। উল্লেখ্য, রাজ্যে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক 'ঘনিষ্ঠ' এই তৃণমূল নেতার নাম উঠে এসেছে। বর্তমানে তিনি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। কিন্তু, সন্দেশখালি এলাকায় তার হুংকারে বাঘে-গোরুতে এক ঘাটে জল খায় বলেই সূত্রের খবর।

জানা যায়, সরবেরিয়া অঞ্চলের এক সময়ের পঞ্চায়েত প্রধান শেখ মোসলেমের সহকারি ও ভাগ্নে ছিলেন শেখ শাহাজাহান। শোনা যায়, ভোটের সময় নাকি এলাকা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব থাকত শাহজাহানের কাঁধে। নানা রাজনৈতিক অশান্তির ঘটনায় 'নাটের গুরু' হিসেবেও একাধিকবার উঠে এসেছে শাহজাহানের নাম। সবথেকে অবাক করা বিষয়, বাম আমলে উত্থান হওয়া এই শাজাহানের পালাবদলের পরেও একটুও প্রতাপ কমেনি। এমনকি, তার বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষদের একাধিক অভিযোগ থাকা সত্বেও শাহজাহানের দাপট কমানো সম্ভব হয়নি। শুধু তাই নয়, ভাঙ্গিপাড়া এলাকার তিন জন বিজেপি কর্মী নিরুদ্দেশ হওয়ার ঘটনার পরেও এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগের আঙুল ওঠে সরাসরি শাহজাহানের দিকে।

জেলা রাজনীতির অন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, দাপট ধরে রাখতেই নাকি ২০১৩ সালে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন শাহজাহান। এরপর ২০১৫ সালে সরকারি বাস রুট বন্ধ করে ওই রুটো অটো চালাতে শুরু করেন শাহজাহানের অনুগামীরা। সে সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর নজরেও বিষয়টি আসে। তখন তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কে এই শেখ শাহজাহান? পাশপাশি সে সময়ে দল থেকে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, এদিনের ঘটনার পরই রাতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিকের প্রশ্নে বলেছিলেন, 'যার কাছে গিয়েছিল ইডি, আশা করব রাত ১২টার মধ্যে ইডির কাছে হাজিরা দেবেন। আমি এটাই আশা করব। বাড়িতে শাহাজাহানকে পাওয়া যায়নি, এতই সাহসী যে ইডির ভয়ে কোথায় চলে গেছেন।' যদিও রাত পর্যন্ত শেখ শাহজাহান ইডির কাছে পৌঁছাননি। আর এরপরই নিরুদ্দেশ শাহজাহানের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করেছে ইডি। তবে, আদৌ এই মক্কেল এ দেশে আছেন, নাকি বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন তা এখনও জানা যায়নি।