Скачать или смотреть অর্ধলাখ খৃস্টান ধর্মাবলম্বীদের অংশ গ্রহণে ২দিনের তীর্থোৎসব সমাপ্ত

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে দুই দিনব্যাপী ফাতেমা রানির মহা তীর্থোৎসব নানা ধর্মীয় কর্মসুচিতে সমাপ্ত হয়েছে। উপজেলার বারোমারী সাধু লিওর খ্রিষ্টান ধর্মপল্লিতে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ধর্ম উৎসবটি শেষ হয় শুক্রবার ২৭ অক্টোবর। এ উপলক্ষে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে।

আয়োজক কমিটি জানায়, প্রায় ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বারোমারী সাধু লিওর এ ধর্মপল্লি গত ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে ও অনুকরণে পাহাড় ঘেরা মনোরম পরিবেশে তৈরি তীর্থস্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। প্রতি ইংরেজি বছরের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে এখানে দিবা-রাত্রি ২ দিন ব‍্যাপী তীর্থোৎসব পালিত হয়ে আসছে।

এবছর প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার খ্রিষ্ট ভক্তরা অংশগ্রহণ করেছেন। এবছর তীর্থ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুড়া ক্যাথলিক ডাইসিসের একটি ধর্মপল্লির পাল পুরোহিত রেভারেন্ট ফাদার টমাস মানকিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ খৃস্ট ধর্ম প্রদেশের বিশপ পনেন পৌল কুবি সিএসসি।

"সিনোডাল মণ্ডলীতে মিলন, অংশগ্রহণ ও প্রেরণ কর্মে ফাতেমা রানি মা মারিয়া"—এই মূল সুরে প্রথম দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে পাপ স্বীকারের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুদিনের উৎসব। পরে পবিত্র খ্রিষ্টযাগ শেষে রাত ৮টায় আলোক শোভাযাত্রা, ১১টায় সাক্রান্তের আরাধনা, রাত ১২টায় নিশি জাগরণ ও নিরাময় অনুষ্ঠান হবে। শুক্রবার সকাল ৮টায় জীবন্ত ক্রুশের পথ ও সকাল ১০টায় মহা খ্রিষ্টযাগের মাধ্যমে মহা তীর্থোৎসবের সমাপ্তি করা হয় ।

বারমারী ধর্মপল্লীর সাধারণ সম্পাদক কার্তিরোজ চিরান ও তীর্থ উৎসবের সমন্বয়কারী রেভারেন্ট ফাদার তরুণ বনোয়ারী বলেন, ধর্মীয় চেতনায় দেশি-বিদেশি হাজারো খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ভক্ত অংশ নেন। এই তীর্থস্থানে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৮ ফুট উচ্চতায় ফাতেমা রানি মা মারিয়ার মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছে। এই স্থানটি খ্রিষ্টভক্তদের জন্য একটি পবিত্র ধর্মীয় স্থান। এখানে এসে তাঁরা ধর্মীয় অনুভূতি জাগিয়ে বিভিন্ন প্রার্থনা করে থাকে। এতে উপস্থিত হয়ে অর্ধলাখ খ্রিস্টভক্ত আত্মার প্রশান্তি পেয়ে থাকেন।

এ ব‍িষয়ে নালিতাবাড়ীর ইউএনও খৃষ্টফার হিমেল রিছিল জানান, প্রতিবছরের মতো এবারো তীর্থোৎসব উপলক্ষে বারমারী ধর্মপল্লীতে ব‍্যাপক প্রশাসনিক নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। অবাধে খৃস্ট ধর্মানুসারী নারী-পুরুষগণ ধর্মীয় রীতি-নীতি সম্পন্ন করেছেন।

এ ব‍্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোনালিসা বেগম বলেন, এই তীর্থোৎসবে দেশি-বিদেশি প্রায় অর্ধলাখ তীর্থযাত্রী উপস্থিত হয়েছে। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা রয়েছে। 
নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণ ভাবে এই তীর্থস্থানে খৃস্ট ভক্তরা তাদের ধর্ম পালন করেন।