Скачать или смотреть জগন্নাথদেবের একটি সত্য ঘটনা। जगन्नाथदेव की एक सच्ची कहानी.

জগন্নাথদেবের একটি সত্য ঘটনা। जगन्नाथदेव की एक सच्ची कहानी.



আজ জগন্নাথদেবের একটি সত্য কাহিনী শেয়ার করবো।
কাহিনীটি হচ্ছে জগন্নাথ ভক্ত এক মুসলিম ছেলেকে নিয়ে।

ভারতে পুরীর জগন্নাথ দেবের রথ কি কারনে এক মুসলিম ব্যক্তির সমাধির সামনে এসে কিছু ক্ষনের জন্য দাঁড় করানো হয়?

প্রতিবছর পুরীতে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব পালন করা হয়। দেশ-বিদেশ থেকে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে এই রথযাত্রায়। জগন্নাথ,বলরাম,সুভদ্রা এই তিনজনের তিনটি রথ মাসির বাড়ি অর্থাৎ গুন্ডিচা দেবীর মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু এই যাত্রায় রথ গুলিকে দাঁড় করানো হয় এক মুসলিম জগন্নাথ ভক্তের সমাধির সামনে। আমরা সবাই জানি যে ভগবান তার ভক্তদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ করেন না। যে তাকে ভক্তি ভরে স্মরণ করে ভগবান তার ওপর সর্বদা কৃপা দৃষ্টি বর্ষণ করেন।

এমন একটি বিখ্যাত কাহিনী প্রচলিত রয়েছে যা জানলে চমকে উঠবেন। ভগবান জগন্নাথের এক ভক্ত ছিল মুসলিম। তার নাম ছিল 'সালবেগ'। তখন কার সময়ে ভারতে 'মূঘল শাসন' চলছিলো সেই মুঘল সালাতে কাজ করতো সালবেগের "মা"! সালবেগের "মা"ছিলেন হিন্দু কিন্তু তাঁর বাবা ছিলেন একজন মুসলিম সে কারনেই সালবেগ ইসলাম ধর্মকে মানতো।

এক ভয়ানক "যুদ্ধ " সংঘটিত হয় মুঘল সাম্রাজ্যে।এই যুদ্ধ চলাকালীন সময় সালবেগের মাথায় গুরুতর আঘাত পায়।এই আঘাতের জন্য তার মাথায় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। অনেক বৈদ্য আর হাকিমদের দেখিয়েও তার মাথার ক্ষতচিহ্ন কোন ভাবেই ঠিক হয়নি,সম্পূর্ণরূপে সুস্থ না হওয়ার কারনে "সালবেগ",কে মুঘল সৈন্য থেকে বের করে দেওয়া হয়। এতে সালবেগ ভিতরে ভিতরে অনেক কষ্ট পায়। ছেলের এই দূরাবস্তা দেখে সালবেগের "মা " আর সহ্য করতে না পেরে তিনি তার পুত্রকে বলেন জগন্নাথ দেবকে স্মরণ করতে। সালবেগ তার মার কথা মতো সেই দিনের পর থেকে ভগবান জগন্নাথ দেবের আরাধনা করতে থাকে ধীরে ধীরে।এই ভক্তির জন্য সালবেগ মানসিক শান্তি পেতে থাকে, এবং জীবনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি লাভ করতে থাকে।
একদিন ঘুমের মধ্যে "সালবেগ" স্বপ্নে দেখতে পায় যে স্বয়ং জগন্নাথ দেব তার সামনে এসেছেন। এবং তার মাথার ক্ষত ঠিক করার জন্য একটি বীরপুতি প্রদান করেছেন আর সেটা নিজের মাথায় লাগাতেই "সালবেগের" ঘুম ভেঙ্গে যায়। "সালবেগ "তখন বুঝতে পারে যে এটা একটা স্বপ্ন ছিল। কিন্তু কৌতূহলবশত "সালবেগ" তার নিজের মাথার ক্ষতচিহ্ন স্থানে হাত দিতেই দেখে তার মাথায় ক্ষতচিহ্ন আর নেই।

তখন সালবেগ আর দেরি না করে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। প্রভু জগন্নাথ দেবের দর্শন করতে উৎসুক হয়ে উঠে। ভগবানের জয় জয়কার করতে করতে মন্দিরে প্রবেশ করতে গেলেই তাকে বাধা দেয়া হয়। যেহেতু হিন্দু ছাড়া কাউকেই জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হতো না। সে জন্য সালবেগ মুসলিম হওয়ার কারনে তাকেও আটকানো হয়।তখন সালবেগ সবাইকে একটি কথা বলেছিলো যে যদি আমার মনে প্রকৃত ভক্তি থাকে,তাহলে ভগবান অবশ্যই আমার ডাকে সারা দিবেন। তখন সালবেগ মন্দিরের বাহিরে বসেই মন প্রাণ দিয়ে ভগবানের নাম জপ করতে থাকে। কিছু দিন পরেই সালবেগের মৃত্যু হয়।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়,সালবেগ মৃুত্যুর পর ঘটে এক অলৌকিক ঘটনা। জগন্নাথ মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দিরে যাওয়ার রাস্তার পাশে সালবেগের (সমাধি) বানানো হয়েছিলো। সালবেগের মৃত্যুর কিছু মাস পর যখন জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা বের হয় তখন হঠাৎ সেই সমাধি ক্ষেত্রের সামনে এসে জগন্নাথ দেবের রথ থেমে যায়। সব ভক্তরা হাজার চেষ্টা করেও রথকে নাড়াতে পারলেন না। সবাই খুব চিন্তিত হয়ে পড়লেন কি ভাবে রথকে নিয়ে যাওয়া যাবে। মন্দিরের কোন পুরোহিত কোন কিছুই করতে পারলেন না।

তখন কোন একজন ব্যক্তি সবাইকে সালবেগের ভক্তির ঘটনা শোনালেন। কি ভাবে তিনি জগন্নাথ দেবকে স্বপ্নে দেখতে পেয়েছিলেন। একজন মুসলিম হয়েও সারাজীবন ভক্তি ভরে জগন্নাথ দেবকে ডেকেছেন। তার পর সবাই যখন এক সাথে সালবেগের নামে জয় জয়কার করতে লাগল তখন হঠাৎই জগন্নাথের রথ আবার চলতে শুরু করলো। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত রথযাত্রার সময় সালবেগের সমাধির সামনে এসে কিছুক্ষনের জন্য রথ দাঁড় করানো হয়।

এটাই হচ্ছে প্রকৃত ভক্তি এখানে জাতি- ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এক ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিল। প্রভু জগন্নাথ দেবের কাছে আমরা সবাই মনে করি সব ভক্তই সমান।সে যে ধর্মেরই হোক না কেন যদি প্রকৃত ভক্তি সঙ্গে ভগবান কে ডাকা হয় তিনি অবশ্যই সাড়া দেন।

জয় জগন্নাথের জয় 🖤🙏
সনাতন - HINDU