বিয়ে করবেন কি নিয়ম মেনে জেনে নিন।শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ।
শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে তিনি বর্তমানে এক পরিচিত মুখ। কিন্তু সেই নব্বই দশক থেকেই রয়েছে তার তুমুল জনপ্রিয়তা। আহলে হাদিসের অনেক বড় একজন আলেম তিনি। মাযহাব নির্বিশেষে হক পথে কোরআন ও সহীহ হাদিস দ্বারা ইসলামের খেদমত করে যাচ্ছেন যুগ যুগ ধরে। যদিও তার শত্রু সংখ্যা কোনোকালেই কম ছিল না, তবুও তিনি কাউকে পরোয়া না করে হক পথে রয়ে গেছেন। আমরা দোয়া করি তার জন্য, আল্লাহ যেন তাকে হক পথে থাকার তৌফিক দান করেন। সত্যের বাণী পৌঁছাতে রাসুল সাঃ এর জীবনে কত কষ্ট পোহাতে হয়েছে তা আমরা সকলেই জানি।
আমরা বেশিরভাগ মানুষ তার নামের বানান আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এইভাবে করে থাকি কিন্তু সঠিক বানান টা হবে আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ। রাজ্জাক দিয়ে বেশি পরিচিতি লাভ করার কারণে আমরা এই শব্দটি ব্যবহার করেছি। এ প্রবন্ধের মাধ্যমে তার জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা, শিক্ষা, কর্মজীবন ও তার দাওয়াতি জীবন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আপনারা শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর জীবনী সম্পর্কে বেশ ভালো একটা ধারণা পাবেন। কথা না বাড়িয়ে শুরু করছি আজকের আলোচনা…
সূচিপত্র
[show]
শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর পরিচয়

আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের মাঝে অতি পরিচিত একটি নাম। কোরআন সুন্নাহ নিয়ে বক্তব্য, ইসলামিক বই লেখনী, শিক্ষকতা, পত্রিকা সম্পাদনা ও মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সহ দ্বিনী খেদমতের সব বিভাগে রয়েছে তার সকল পদচারণা। তিনি আল্লাহর অশেষ একজন নেয়ামত হিসেবে আমাদের মাঝে আগমন করেছেন।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল, আলেম-ওলামার মাটি দেবী নগরে মাওলা বক্স হাজীরটলা গ্রামে ১৯৬০ সালে একটি সম্ভ্রান্ত ধার্মিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর শিক্ষাগত যোগ্যতা
শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর পড়াশোনার হাতেখড়ি গ্রামের মক্তব থেকেই হয়েছিল। তিনি নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মাদ্রাসায় ১৯৭৫ থেকে ৭৯৮২ ইং পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। সেখানে হাদিসের অন্যতম কিতাব মিশকাত শরীফ পর্যন্ত পড়াশোনা করে উচ্চশিক্ষার আশায় ইলমের কেন্দ্র বলে খ্যাত ভারতের উত্তর প্রদেশ গমন করেন এবং উত্তরপ্রদেশের দারুল উলুম মাউনাথভাঞ্জান থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে দাওরা হাদিস শেষ করেন। উল্লেখ্য, তিনি পশ্চিমবঙ্গ থেকেও একবার দ্বারা হাদিস শেষ করেছিলেন।
১৯৮৩ থেকে ১৯৮৮ ইং পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ ভারতে উচ্চশিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
কর্মজীবনের পাশাপাশি তিনি কলকাতা আলিয়া বোর্ড ও ঢাকা আলিয়া বোর্ড থেকে বিভিন্ন সময়ে আলিম, ফাযিল ও কামিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি হাদীস ও তাফসীর নিয়ে ১ম বিভাগে কামিল পাশ করেছেন।
শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর কর্মজীবন
ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে দীর্ঘ পাঁচ বছরের উচ্চ শিক্ষা শেষ করে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এরপর ২০ আগস্ট ১৯৮৮ ইং সালে আল-মারকাযুল ইসলামী, জান্নাতপুর, গোবিন্দগঞ্জ, ও গাইবান্ধায় মুহাদ্দিস হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনের পাশাপাশি তিনি কলকাতা আলিয়া বোর্ড এবং ঢাকা আলিয়া বোর্ড থেকেও তার পড়াশোনা চালিয়ে যান যেটা আপনার ইতিপূর্বে জেনেছেন।
তিনি কর্মজীবনের পাশাপাশি বক্তব্যের মাধ্যমে দাওয়াতী কাজেও অবদান রাখা শুরু করেন। আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর বক্তব্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তিনি মাযহাব-মাসলাক নির্বিশেষে আপামর মুসলমানদের উদ্দেশ্যে নসিহত মূলক বক্তব্য দেন। বিশেষ করে জান্নাত-জাহান্নাম, কেয়ামত, আদর্শ পরিবার, কে বড় ক্ষতিগ্রস্ত ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর বক্তব্য মাযহাব নির্বিশেষে সকল মুসলমানের হৃদয়ে নাড়া দিতে সক্ষম।
তার বক্তব্যের পুরোটা অংশ জুড়ে থাকে হাদিসের অনুবাদ। যার ফলে দেড় ঘণ্টার বক্তব্য যেন হয়ে যায় একটি দারসে হাদীস। তার প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার হাদিস মুখস্ত রয়েছে।
তিনি পিস টিভিতে ও নিয়মিত আলোচনা করে থাকতেন, কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে পিস টিভি বন্ধ। দেশের বাইরে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মিশর, ভারত ও নেপালে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি একটু কঠোর ভাবে কথা বলে থাকেন, যে কঠোরতা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বক্তব্যের সময় ধরে রাখতেন। বর্তমানে বেশিরভাগ ওয়াজ মাহফিল দেখলেই দেখা যায় পুরো মাহফিল জুড়ে হাসি ঠাট্টায় মাতোয়ারা সবাই, এটা আসলে ইসলামের দাওয়াতের নামে শয়তানী ছাড়া আর কিছুই না। বক্তব্যই বলে দিবে কোন কথা কঠোর হতে হবে আর কোন কথা নরম হতে হবে। হাসি-ঠাট্টা দিয়ে মানুষকে বিনোদন দেওয়া যায় কিন্তু ভ্রান্ত মানুষকে হেদায়েতের পথে আনা যায় না। যে কারণে লক্ষ্য করলে দেখব শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর বক্তব্য যারা শুনে তারা হেদায়েতের পথে বেশি ধাবিত হয়। আল্লাহ তাকে নেক হায়াত দান করুন, এবং ইসলামের বেশি বেশি খেদমত করার তৌফিক দান করুন।
শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর মাদ্রাসা সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান
ইসলামী শিক্ষাকে বাংলাদেশের ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। যেমন;
আল-জামি’আহ আস-সালাফিয়্যাহ, রুপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা।
আল-জামি’আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া,পবা, রাজশাহী।
আল-জামি’আহ আস-সালাফিয়্যাহ, তেঘড়া, বিরল, দিনাজপুর।
আল-জামি’আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ছয়মাইল, বাবুগঞ্জ, বরিশাল।
আল-মাদরাসাতুস সালাফিয়া, আটমল, বগুড়া।
মাসিক আল ইতিছাম পত্রিকা ( অফলাইন এবং অনলাইন)।
বৃ-কুষ্টিয়া দারুল হাদীস সালাফিয়া মাদ্রাসা, বগুড়া।
মহিলা সালাফিয়া মাদ্রাসা, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
নিবরাস ইয়াতিম কল্যাণ ফান্ড।
বাইতুল হামদ জামে মসজিদ কমপ্লেক্স।
আল-জামি’আহ আস-সালাফিয়্যাহ, যাকাত ফান্ড।
এছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করেন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
Информация по комментариям в разработке