ঈশ্বরস্তুতি প্রার্থনা উপাসনা মন্ত্র
ও৩ম্ বিশ্বানি দেব সবতর্দুরিতানি পরাসুব।
য়দ্ভদ্রং তন্ন আ সুব।
(যর্জুবেদ ৩০/৩)
অনুবাদ: হে সকল জগতের উৎপত্তিকর্তা, সমগ্র ঐশ্বর্যযুক্ত শুদ্ধস্বরুপ সর্বসুখদাতা পরমেশ্বর। তুমি কৃপা করিয়া আমাদের সম্পূর্ণ, দুর্গুন, দুর্ব্যসন ও দুঃখ দূর করিয়া দাও। যাহা কল্যাণকারক গুন, কর্ম, স্বভাব ও পদার্ঘ সেই সব আমাদিগকে প্রাপ্ত করুক।
ও৩ম্ হিরণ্যগর্ভঃ সমবর্ততাগ্রে ভূতস্য জাতঃ পতিরেকউ অাসীৎ। স দাধার পৃথিবীং দ্যামুতেমাং কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম।
(যর্জুবেদ ১৩/৪)
অনুবাদ: যিনি স্বপ্রকাশস্বরুপ ও যিনি প্রকাশময় সূর্যচন্দ্রাদি পদার্থ উৎপন্ন করিয়া ধারণ করিয়া আছেন, যিনি সম্পূর্ণ সৃষ্টি জগতের প্রসিদ্ধ স্বামী একই চৈতন্যস্বরুপ ছিলেন, যিনি সমগ্র জগৎ সৃষ্টির পূর্বে বর্তমান ছিলেন, তিনি এই ভূমি ও সূর্যাদি ধারণ করিয়া আছেন, আমরা সেই আনন্দস্বরুপ শুদ্ধ পরমাত্মার জন্য করণীয় যোগাভ্যাস ও গভীর প্রেমের সহিত ভক্তি করিতে থাকিব।
ও৩ম্ য় আত্মদা বলদা য়স্য বিশ্ব উপাসতে প্রশিষং য়স্য দেবাঃ। য়স্য ছায়াৎমৃতং য়স্য মৃত্যুঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম।
(যর্জুবেদ ২৫/১৩)
অনুবাদ: যিনি আত্মজ্ঞানের দাতা ও শরীর, আত্মা এবং সমগ্র লোকের বলদাতা, যাঁহাকে সকল বিদ্বান ব্যক্তিরা উপাসনা করেন এবং যাঁহার আশ্রয়ই মোক্ষ আনন্দ প্রাপ্তি, যাঁহার অমান্য করা অর্থাৎ ভক্তি না করাই মৃত্যুাদি দুঃখের হেতু, আমরা সেই সুখস্বরুপ সর্বজ্ঞানদাতা পরমাত্মাকে প্রাপ্তির জন্য আত্মা ও অন্তঃকরণ দ্বারা ভক্তি অর্থাৎ তাঁহারই আজ্ঞা পালন করিতে তৎপর থাকিব।
ও৩ম্ য় প্রাণতো নিমিষতো মহিত্বৈক ইন্দ্রাজা জগতো বভূব। য়ৎঈশেৎঅস্য দ্বিপদেশ্চষ্পদঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম।
(যর্জুবেদ ২৩/৩)
অনুবাদ: যিনি প্রাণী ও অপ্রাণীস্বরুপ জগতের অনন্ত মহিমা বলে একই রাজারুপে বিরাজমান আছেন, যিনি এই মনুষ্যাদি ও অন্যান্য প্রাণীদের শরীর রচনা করিয়াছেন, আমরা সেই আনন্দস্বরুপ সবৈশ্বর্যদাতা পরমাত্মার উপাসনা অর্থাৎ নিজস্ব সব উত্তম বস্তু কে তাঁহার আদেশ পালনার্থ সম্পূর্ণ করিয়া বিশেষভাবে ভক্তি করি।
ও৩ম্ য়েন দ্যৌরূগ্রা পৃথিবী চ দৃঢ়া য়েন স্বঃ স্তভিতং য়েন নাকঃ। য়ো অন্তরিক্ষে রজসো বিমানঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম।
( যর্জুবেদ ৩২/৬)
অনুবাদ: যে পরমাত্মা তীক্ষ্ণ সূর্যাদি এবং ভূমি ধারণ করিয়াছেন, যে জগদীশ্বর সুখ ধারণ করিয়াছেন, যিনি আকাশে সব লোক লোকান্তরকে বিশেষ মান যুক্ত অর্থাৎ যেমন আকাশে পক্ষী উড়িতে থাকে, সেইরুপ ভাবে নির্মাণ করিয়াছেন ও ভ্রমণ করাইতেছেন, আমরা সকলে সেই আনন্দদায়ক কাম্য পরব্রহ্ম প্রাপ্তির জন্য সর্বশক্তি দ্বারা বিশেষভাবে ভক্তি করি।
ও৩ম্ প্রজাপতে ন ত্বদেতান্যন্যাে বিশ্বা জাতানি পরিতা বভূব। য়উ কামাস্তে জুহুমস্তন্নো অস্তু বয়ং স্যাম পতয়ো রয়ীণাম্।
( ঋগ: ১০/১২১/১০)
অনুবাদ: হে সব প্রজার স্বামী পরমাত্মান্! তুমি ভিন্ন অন্য ঐ এবং এই সব উৎপন্ন জড়, চেতনাদিকে জগতের নির্মাতা এবং ব্যাপক নহেন। সেই তোমার ভক্ত আমরা, চৈতন্যস্বরুপ আমাদিগকে অন্য কেহ তিরস্কার করে না অর্থাৎ তুমি সর্বোপরি । যে যে পদার্থের কামনা করিয়া আমরা ভক্তি করি, তোমার আশ্রয় গ্রহন করি ও বাঞ্ছা করি, সেই কামনা আমাদের সিদ্ধ হউক, যাহাতে আমরা ধনৈশ্বর্যৈর স্বামী হইবে।
ও৩ম্ স নো বন্ধুর্জনিতা স বিধাতা ধামানি বেদ ভূবনানি বিশ্বা। য়ত্র দেবা অমৃতমানশানাস্তৃতীয়ে ধামন্নধ্যৈয়রয়ন্ত।
( যর্জুবেদ ৩২/১০)
অনুবাদ: হে মনুষ্যগণ, সেই পরমাত্মা আমাদের সকলের মিত্র বন্ধুর ন্যায় আনন্দস্বরুপ, সকল জগতের উৎপাদক। তিনি সর্বকামনার পূরক, সম্পূর্ণ লোক-লোকান্তরের নাম, স্থান ও জন্মকে জানেন এবং তিনি সাংসারিক সুখদুঃখহীন, নিত্যান্দময় মোক্ষস্বরুপ, সেই পরমাত্মাতে মোক্ষ প্রাপ্ত হইয়া বিদ্বান্ ব্যক্তিরা স্বেচ্ছায় বিচরণ করেন, সেই পরমাত্মাই আমাদের গুরু , আচার্য রাজা ও ন্যায়াধীশ। আমরা সকলে মিলিয়া তাঁহারই ভক্তি করিব।
ও৩ম্ অগ্নে নয় সুপথা রায়ে অস্মান্ বিশ্বানি দেব বয়ুনানি বিদ্বান্ । য়ুয়োধ্যস্মজ্জুহুরাণমেনো ভুয়িষ্ঠাং তে নম উক্তিং বিধেম।
( যর্জুবেদ ৪০/১৬)
অনুবাদ: হে স্বপ্রকাশ জ্ঞানস্বরুপ, সর্বজগৎ প্রকাশক, সর্বসুখদাতা পরমেশ্বর! যে হেতু তুমি সম্পূর্ণ বিদ্যাযুক্ত কৃপা করিয়া আমাদিগকে বিজ্ঞান বা রাজ্যাদি ঐশ্বর্য প্রাপ্তির জন্য সুন্দর ও ধার্মিক আপ্ত পুরুষদের পথে সম্পূর্ণ প্রজ্ঞান ও উত্তম কর্ম প্রাপ্ত করাও এবং আমাদের নিকট হইতে কুটিল পাপরুপ কর্মকে দূর করিয়া দাও। এজন্য আমরা আপনার বহুবিধ স্তুতিরূপ বিনম্র প্রশংসা সর্বদাই করিতে থাকিব এবং সর্বদা আনন্দে থাকিব।
Информация по комментариям в разработке