Скачать или смотреть ঢাকা ১৭ উপ-নির্বাচন ২০২৩ | Dhaka 17 by-election 2023 |

ভিডিও পরিকল্পনা, প্রতিবেদন রচনা এবং প্রতিবেদন পাঠ
জাহাঙ্গীর আলম

আসন ১৭ ভোট গ্রহণ ১৭
প্রিয় দর্শক, শ্রোতা রাজনীতির সাতকাহনে আপনাদের স্বাগত জানাই আমি জাহাঙ্গীর আলম। আমাদের আজকের বিষয়: ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন ২০২৩।
এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক, জাতীয় সংসদের ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের খুটিনাটি । আসন নম্বরের সঙ্গে ভোট গ্রহণের তারিখের কাকতালীয় মিল। আসন নম্বর ১৯০: ঢাকা ১৭ এবং ভোট গ্রহণের তারিখ সতেরো জুলাই, ২০২৩।
এই উপনির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারাভিযান শুরু হয়েছে গত ২৭শে জুন। চলবে আগামী ১৫ জুলাই মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ।
ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে সতেরো জুলাই।
উল্লেখ্যযোগ্য যে, ঢাকাই সিনেমার এককালের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ওরফে ফারুক ২০২৩ সালের ১৫ই মে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে আসনটি শূন্য ঘোষিত হয়।
এই উপনির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তি পাঁচ/ছয় মাসের জন্য সংসদ সদস্য হবেন। কারণ,চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সেই হিসেবে পরবর্তী পাঁচ বছর মেয়াদ ধরলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মিস্টার মোহাম্মদ এ আরাফাত, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে মিস্টার সিকদার আনিসুর রহমান,বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকে মিস্টার মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম স্বপন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ছড়ি প্রতীকে মিস্টার মোহাম্মদ আকতার হোসেন, জাকের পার্টির গোলাপফুল প্রতীকে কাজী মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান ও তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকে শেখ হাবিবুর রহমান দলীয়ভাবে এই উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মিস্টার আশরাফুল আলম যিনি হিরো আলম নামে সমধিক পরিচিত। তিনি একতারা প্রতীক নিয়ে এই উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। আদালতের নির্দেশে আরও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মিস্টার তরিকুল ইসলাম তার প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন ।

বিএনপি এই উপনির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি । বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বার বার জোর দিয়ে বলে আসছেন যে, বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না ।

মিস্টার এ. আরাফাত এই প্রথম একটি সংসদীয় আসনের উপ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিস্টার মোহাম্মদ এ. আরাফাত একজন শিক্ষাবিদ। তিনি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর কৌশলগত ব্যবস্থাপনা ও নীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। মিস্টার আরাফাত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় বলা হয়, মিস্টার আরাফাতের ব্যাংকে নিজের নামে তিন কোটি ৪৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬শ৬ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এক কোটি ১০ লাখ টাকা আছে।
এছাড়া নিজ নামে আছে এক কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে এক কোটি ৯৯ টাকার শেয়ার। মিস্টার আরাফাতের নিজের নামে সঞ্চয়পত্রে স্থায়ী আমানত ৩০ লাখ টাকা।
১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের গাড়ি এবং ছয় লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে।
রাজধানীতে আছে দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা দামের অ্যাপার্টমেন্ট।
তার নিজের ও স্ত্রীর সোনার অলংকার বা অন্য কোনও মূল্যবান অলংকার নেই।
হলফনামায় মিস্টার আরাফাত আরও জানান, তার কৃষি ও অকৃষি জমি নেই।
মিস্টার আরাফাত স্ট্র্যাটেজিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে নিজ নামে এক কোটি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৩শ৮৬ টাকা গৃহঋণ নিয়েছেন।
তার স্ত্রীর নামে অপরিশোধিত শেয়ারের অর্থের পরিমাণ আট লাখ টাকা।
মিস্টার আরাফাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চ্যালেন্জ, ট্রানজিট ও কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ খাতের জন্য উপযুক্ত নীতি, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বাংলাদেশে রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে লেখালেখি করে থাকেন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী শিকদার আনিসুর রহমানের জমা আছে প্রায় ৫৬ লাখ টাকা
জাতীয় পার্টির প্রার্থী শিকদার আনিসুর রহমানের নামে মামলা রয়েছে তিনটি। এছাড়া অতীতে একটি মামলা খারিজ হয়েছে, আর একটি আপস নিষ্পত্তি হয়েছে। বাড়ি ভাড়া, ব্যবসা ও পেনশন থেকে বছরে তার আয় ১৫ লাখ ১শ৮৩ টাকা।
তার ওপর নির্ভরশীলের আয় দুই লাখ চার হাজার টাকা। আনিসুর রহমানের কাছে নগদ আড়াই লাখ ও স্ত্রীর হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা আছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৭০ হাজার টাকা আছে ও পাঁচ তোলা স্বর্ণালংকার আছে।
মিস্টার আনিসুর রহমানের কৃষি থেকে বছরে কোনো আয় নেই। শেয়ারবাজারে তার বিনিয়োগ নেই। তবে ১৭ লাখ টাকার গাড়ি ও সাত লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং আসবাবপত্র রয়েছে।
তিনি অবসর ভাতা হিসেবে বছরে এক লাখ ২০ হাজার ১৮৩ টাকা পান।
কৃষিজমি না থাকলেও মিস্টার আনিসুর রহমানের অকৃষিজমির আর্থিক মূল্য ৪১ লাখ ৭৬ হাজার ৫শ টাকা। বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের আর্থিক মূল্য ২৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। ডেলটা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড বা ডিবিএইচ থেকে তিনি ১৭ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, মিস্টার আশরাফুল আলম সাঈদ, যিনি হিরো আলম নামে পরিচিত। শিশু বয়সেই মায়ের সঙ্গে গ্রামে গ্রামে ঘুরে আচার বিক্রি করতেন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় দারিদ্র্যের কারণে শুরু করেন সিডি/ ক্যাসেটের ব্যবসা। সিডি ব্যবসায় ভাটা পড়লে স্বল্প পুঁজি নিয়ে মিস্টার আলম শুরু করেন ক্যাবল নেটওয়ার্ক বা ডিস ব্যবসা। সখের বশে বেশ কিছু মিউজিক ভিডিওতে মডেলিং করেন আর তা প্রচার করতেন নিজের সিডি চ্যানেলে। পরে ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড শুরু করেন মিউজিক ভিডিও। ২০১৬ সালের দিকে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে ভাইরাল হয় তার ভিডিও। ট্রোল আর মিমে হিরো আলমের পরিচিতির বিস্ফোরণ ঘটে।