শিশুর কৃমির লক্ষণ ও চিকিৎসা | শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম

Описание к видео শিশুর কৃমির লক্ষণ ও চিকিৎসা | শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম

শিশুর কৃমির সমস্যা নিয়ে বলেছেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সোমা হালদার, সহযোগী অধ্যাপক, শিশু বিভাগ আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ // এপয়েন্টমেন্ট 01747875480

কৃমি সব বয়সি মানুষেরই হয়ে থাকে। শিশুদের কৃমি হলে তারা তা বুঝে না, প্রকাশও করতে পারে না। শিশুর খাদ্যে অরুচি, পাতলা পায়খানা, বমি বমি ভাব, পায়খানার রাস্তায় চুলকানি হলে বুঝতে হবে তার কৃমি হয়েছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী।

বিভিন্ন প্রকার কৃমির মধ্যে গোলকৃমি, ফিতা কৃমি ও গুঁড়া কৃমির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। কখনও কখনও গোলকৃমি শিশুর নাক-মুখ দিয়েও বেরিয়ে আসে।

এটি শিশুর শ্বাসনালিতেও প্রবেশ করতে পারে। এছাড়া এটি শিশুর অন্ত্রে বা পিত্তনালিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। ফিতা কৃমি শিশুর অন্ত্রে লেগে থেকে রক্তপাত ঘটায়। এতে শিশু ধীরে ধীরে রক্তশূন্য হয়ে পড়ে। পায়খানার রাস্তায় চুলকানির জন্য গুঁড়া কৃমি দায়ী।

কৃমির কারণে শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়। কৃমি অন্ত্রে রক্তপাত ঘটিয়ে একদিকে শিশুকে রক্তশূন্য করে আবার অন্ত্রে পুষ্টি উপাদানের পরিপাক ও শোষণে বাধার সৃষ্টি করে ডায়রিয়া ঘটায়।

এভাবে দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ফলে শিশুর খাদ্যে অরুচি হয় এবং সে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবস্থা, অপরিষ্কার ঘরবাড়ি, দূষিত পানির ব্যবহার, টয়লেট শেষে ভালোভাবে হাত না ধোয়া, খাবার তৈরি বা খাওয়ার আগে হাত পরিষ্কার না করা, হাতের নখ বড় রাখা, দাঁত দিয়ে নখ কাটা ইত্যাদির মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায়।

চিকিৎসা

কৃমির চিকিৎসায় সাধারণত Albendayole বা Mebendayole অথবা Pyrental pamoate দেওয়া হয়। আমাদের দেশে বছরে দু’বার জাতীয় টিকা দিবস পোলিও টিকার পাশাপাশি এক বছর থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের কৃমিনাশক ওষুধ (Albendyaole) খাওয়ানো হয়।

প্রতিরোধ

গৃহস্থালির কাজে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে।

স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

খাবারের আগে বা টয়লেটের পরে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

শিশুদের হাতের নখ বড় রাখা যাবে না এবং দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।

সময়মতো কৃমিনাশক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।

মানুষের অপরিশোধিত মল জমির সার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

কৃমি এক ধরনের পরজীবী। এটি মানবশরীর থেকে পুষ্টি নিয়ে বেঁচে থাকে, বৃদ্ধি পায়, বংশবিস্তার করে। শিশুদের মধ্যে এই পরজীবীর সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৃমির সংক্রমণ বেশি হয়। তবে সতর্ক থাকলে এই পরজীবীর সংক্রমণ মোকাবিলা করা সম্ভব।

শিশুর কৃমির সংক্রমণ কিছু লক্ষণে বোঝা যায়। তবে কোনো কোনো শিশুর কৃমির সংক্রমণে কোনো উপসর্গ থাকে না। এই শিশুরা কৃমির বাহকের ভূমিকা পালন করে। শিশুর কৃমির সংক্রমণজনিত প্রধান লক্ষণগুণো হলো—

পেটব্যথা, পেট ফোলা-ফাঁপা, রক্ত বা রক্তযুক্ত ডায়রিয়া।

বমিভাব, বমি, ক্ষুধামান্দ্য, ওজন কমা, জ্বর, ক্লান্তি, হাত-পায়ের ব্যথা এবং মাথাব্যথা।

কিছু কিছু রোগ-লক্ষণ কৃমির ধরনের ওপর নির্ভরশীল। যেমন:

প্রোটিন ও ভিটামিনের অভাব হয় কেঁচো কৃমি, জিয়ারডিয়াসিস, আন্ত্রিক ফ্লুকস ইত্যাদিতে।

রক্তাল্পতা, ভিটামিন বি-১২ এবং ফলিক অ্যাসিডের অভাব ঘটে বক্র কৃমি ও আন্ত্রিক ফ্লুকসের সংক্রমণে।

কেঁচো কৃমি, বক্র কৃমি, আন্ত্রিক ফ্লুকসের সংক্রমণে বদহজম হয়।

জিয়ারডিয়াসিস, বক্র কৃমি, ক্রিপটো-স্পোরইডসের সংক্রমণে ওজন কমে যায়।

কেঁচো কৃমি অন্ত্রে দলা বা পিণ্ড পাকাতে পারে।

যকৃৎ, মাংসপেশি, চোখ, মস্তিষ্ক, ফুসফুস প্রভৃতি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বিভিন্ন ধরনের কৃমির সংক্রমণে জন্ডিস, খিঁচুনি, অ্যাজমাসহ নানা রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

কৃমি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নষ্ট করে বলে নানা ধরনের অসুখ এবং ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

সংক্রমিত ও কৃমির বাহক দ্রুত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসক প্রথমে রোগীর মল পরীক্ষা করে নির্দিষ্ট ধরনের কৃমির সংক্রমণ নির্ণয় করেন। এরপর সে অনুযায়ী কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন।

শৌচাগার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, মল নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শিশুকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

কিছু সতর্কতা

অনেকেই মনে করেন, চিনি বা গুড় খেলে কৃমি হয়। এ ধারণা ভুল। কৃম‌ির সংক্রমণের অন্যতম কারণ হলো অপরিচ্ছন্ন থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা।

কিছু কৃমি মাটি থেকে পায়ের ত্বকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। তাই শিশুকে নোংরা মাটিতে খালি পায়ে হাঁটতে না দেওয়াই উচিত।

শিশুর খাবার প্রস্তুতকারী ও পরিচর্যাকারীর পরিচ্ছন্নতা জরুরি। একইভাবে জরুরি শৌচাগার ব্যবহারের পর এবং খাওয়ার আগে শিশুর হাত সাবান দিয়ে ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।

Комментарии

Информация по комментариям в разработке