Скачать или смотреть তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কি? গঠন, ক্ষমতা, কার্যাবলি, পটভূমি, বাতিল ও পুনর্বহাল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কি? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন। উপদেষ্টা হওয়ার যোগ্যতা। উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা ও কার্যাবলী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যাবলি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পটভূমি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল ও পুনর্বহাল

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে সকল ধরণের নির্বাচনগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ জনগনের মধ্যে বিভিন্ন কারণে এক ধরণের অবিশ্বাস জন্ম নেয়। বিরোধী পক্ষ সব সময়ই সরকারি দলের বিরুদ্ধে নির্বাচনে বিভিন্ন ধরণের কারচুপির অভিযোগ তোলে। সেজন্য বিরোধী দলগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে এক ধরণের নিরপেক্ষ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার উদ্ভব হয়। এবং দেখা গেছে সেই বিরোধী দলগুলো যখন ক্ষমতায় গিয়েছে তখন তারা আবার সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলে এবং বাতিল করে। যে কারণে বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। আমাদের আজকের ভিডিওতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করবো।

★ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি?

তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলো এমন এক ধরণের অস্থায়ী অ্যাডহক (বিশেষ ও পূর্বপরিকল্পনাবিহীন) সরকার যা একটি নিয়মিত সরকার নির্বাচিত বা গঠিত না হওয়া পর্যন্ত একটি দেশের সকল নিয়মিত সরকারি দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন করে।

★ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারঃ

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এক ধরণের ব্যবস্থা, যার অধীনে দুইটি নির্বাচিত সরকারের মধ্যবর্তী সময়কালে সাময়িকভাবে অনির্বাচিত, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় ব্যক্তিবর্গ দেশের শাসনভার গ্রহণ করে থাকে। নির্বাচন পরিচালনা করাই এর প্রধান কাজ। পাশাপশি সে সরকারের নিয়মিত বিভিন্ন কাজও করে থাকে।

১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং কোনো সাংবিধানিক সংশোধনী ছাড়াই ১৯৯০ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়। ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া সরকার ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে প্রণয়ন করে।

২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দেয় এবং সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এ সরকার ব্যবস্থাকে বাতিল করা হয়। আবার ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ বেশকিছু বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে এতো মাতামাতি সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় কি রয়েছে এবার আমরা তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানেবো।
★ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী আইন, ১৯৯৬ এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে কি বলা আছে?
১৯৯৬ সালের ২৬ মার্চ ষষ্ঠ সংসদের প্রথম অধিবেশনে ২৬৮-০ ভোটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবলিত বাংলাদেশের সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধন আইন, পাস হয়৷ রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের পর ২৮ মার্চ এটি আইনে পরিণত হয়৷ এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের চতুর্থ ভাগে “২-ক পরিচ্ছেদে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার” নামে নতুন পরিচ্ছেদ যোগ হয়৷ এতে ৫৮-ক, ৫৮-খ, ৫৮-গ, ৫৮-ঘ ও ৫৮-ঙ নামে নতুন অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত হয়৷ এছাড়া সংবিধানের ৬১, ৯৯, ১২৩, ১৫২, ১৫৭ অনুচ্ছেদসহ তৃতীয় তফসিলের বিধান সংশোধন করা হয়৷
★ সংশোধনী অনুযায়ী দুটো কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা যাবে:
১. কোন কারণে সংসদ ভেঙে দেয়া হলে, সংসদ ভেঙে দেয়ার ১৫ দিনের মধ্যে।
২. সরকারের মেয়াদ শেষ হবার কারণে, সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে।
★ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠনঃ
তৎকালীণ সংবিধানের ৫৮-গ অনুচ্ছেদ অনুসারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ১১ সদস্যের বেশি হবে না৷ এর মধ্যে একজন প্রধান উপদেষ্টা ও অনধিক ১০ জন উপদেষ্টা থাকবেন।
★ উপদেষ্টা হওয়ার যোগ্যতাঃ
১. সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।
(সংসদ সদস্য হবার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে (i) বাটনে টাচ করুন)
২. তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো সংগঠনের সদস্য হবেন না
৩. আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী নন বা প্রার্থী হবেন না এ মর্মে লিখিতভাবে সম্মত হয়েছেন
৪. ৭২ বছরের অধিক বয়স্ক নন
★ কে হবেন প্রধান উপদেষ্টা?
১. বাংলাদেশের সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হবেন প্রধান উপদেষ্টা।
২. যদি সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে পাওয়া না যায় অথবা তিনি যদি প্রধান উপদেষ্টা হতে রাজি না হন তাহলে তার অব্যবহিত পূর্বে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করা হবে।
৩. যদি কোনো অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে পাওয়া না যায় অথবা তিনি যদি প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণে অসম্মতি জানান তাহলে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকগণের মধ্যে যিনি সর্বশেষে অবসরপ্রাপ্ত হয়েছেন তাঁকে প্রধান উপদেষ্টা করা হবে।
৪. যদি আপিল বিভাগের কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে না পাওয়া যায় অথবা তিনি যদি প্রধান উপদেষ্টার পদ নিতে অসম্মতি জানান তাহলে প্রেসিডেন্ট প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শক্রমে কোনো ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ দেবেন৷
৫. উপর্যুক্ত কাউকে না পাওয়া গেলে প্রেসিডেন্ট তার স্বীয় দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন৷
★ উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা ও কার্যাবলীঃ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ‘প্রধান উপদেষ্টা’ প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদা, সম্মানী ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আর উপদেষ্টাগণ মন্ত্রীর পদমর্যাদা এবং সম্মানী ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন৷
★ ততত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যাবলিঃ
১. দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদন ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে না৷
২. শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই সরকার নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা করবে৷
অবশিষ্টাংশ ভিডিওতে এবং ফেসবুক পোস্টে দেখুন।
  / 15ran9fabg