এন্টিবায়োটিক এর ভালো-মন্দ ও সাবধানতা
ডা. কে. এম. শরীফুর রহমান
এমবিবিএস, সিসিডি (ডায়াবেটোলজি,বারডেম), সিপিআর (বিএসএমএমইউ)
প্রাক্তন সহকারী রেজিস্ট্রার, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
চীফ কো-অর্ডিনেটর, ইরাজি ডায়াবেটিক সেন্টার
চেম্বারঃ
ইরাজি ডায়াগনস্টিক ল্যাব এন্ড কনসাল্টেশন সেন্টার
হাসনাবাদ, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
হট লাইন : 01897960444 / 01897960445
Google Map - https://maps.app.goo.gl/sZz2W9c1se2R2...
অ্যান্টিবায়োটিক: ভালো, মন্দ এবং সাবধানতা
অ্যান্টিবায়োটিক হলো এমন এক ধরনের ওষুধ যা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। পেনিসিলিন আবিষ্কারের পর থেকে এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে এবং অসংখ্য জীবন বাঁচিয়েছে। তবে, এর সঠিক ব্যবহার ও কার্যকারিতা সম্পর্কে জানা অপরিহার্য।
*অ্যান্টিবায়োটিকের ভালো দিক (উপকারিতা):*
*জীবন রক্ষাকারী:* গুরুতর ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ, যেমন: নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস, সেপসিস এবং যক্ষ্মার মতো রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক জীবন রক্ষাকারী ভূমিকা পালন করে।
*সংক্রমণ প্রতিরোধ:* অস্ত্রোপচার বা দাঁতের চিকিৎসার মতো কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।
*রোগের দ্রুত নিরাময়:* এটি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ও বংশবিস্তার থামিয়ে দেয়, ফলে রোগীরা দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।
*সাধারণ সংক্রমণের চিকিৎসা:* মূত্রনালীর সংক্রমণ, ব্রংকাইটিস, সাইনাস সংক্রমণ এবং অন্যান্য ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের চিকিৎসায় এটি খুবই কার্যকর।
*অ্যান্টিবায়োটিকের মন্দ দিক (ক্ষতিকর প্রভাব):*
*অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স:* এটি সবচেয়ে বড় সমস্যা। অপ্রয়োজনীয় বা ভুলভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে ব্যাকটেরিয়া শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং ওষুধ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অর্জন করে। ফলে, একসময় সাধারণ সংক্রমণও নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে।
*পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:* কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো বমি বমি ভাব, পেট খারাপ, ডায়রিয়া, ত্বকে ফুসকুড়ি ইত্যাদি। কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে, যা জীবন-হুমকিস্বরূপ হতে পারে।
*উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতি:* আমাদের শরীরে কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা হজমে সাহায্য করে। অ্যান্টিবায়োটিক শুধু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকেই নয়, অনেক সময় এসব উপকারী ব্যাকটেরিয়াকেও মেরে ফেলে, যার ফলে ডায়রিয়া বা অন্যান্য পেটের সমস্যা হতে পারে।
*গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি:* গর্ভাবস্থায় কিছু নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে ভ্রূণের ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।
*অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে যেসব সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত:*
*চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করবেন না:* অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের আগে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শুধুমাত্র চিকিৎসকই রোগ নির্ণয় করে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক এবং এর ডোজ নির্ধারণ করতে পারেন।
*ডোজের কোর্স সম্পূর্ণ করুন:* যদি আপনার অবস্থা উন্নত হয় তবুও কোর্স সম্পূর্ণ করুন। কোর্স অসম্পূর্ণ রাখলে কিছু শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে, যা ভবিষ্যতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে।
*ভাইরাল সংক্রমণের জন্য ব্যবহার করবেন না:* সর্দি, কাশি, ফ্লু এবং বেশিরভাগ গলা ব্যথা ভাইরাসজনিত রোগ। এগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজ করে না। এই ধরনের রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয়, বরং অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ঝুঁকি বাড়ায়।
*অন্যের প্রেসক্রিপশন ব্যবহার করবেন না:* আপনার প্রতিবেশী বা বন্ধুর জন্য যে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করেছে, তা আপনার জন্য নাও করতে পারে। প্রত্যেক রোগীর জন্য ভিন্ন ভিন্ন ওষুধ এবং ডোজ প্রয়োজন হতে পারে।
*মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করবেন না:* মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে এবং এটি রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর নাও হতে পারে।
*সঠিক সময়ে ওষুধ গ্রহণ করুন:* ওষুধের কার্যকারিতা বজায় রাখতে চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী সঠিক সময় ও পরিমাণে ওষুধ গ্রহণ করুন।
সংক্ষেপে, অ্যান্টিবায়োটিক একটি অত্যন্ত মূল্যবান ওষুধ, যা সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে জীবন বাঁচাতে পারে। কিন্তু এর ভুল ও অপ্রয়োগ মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। তাই, সচেতনতা এবং চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসরণ করা অপরিহার্য।
Disclaimer
This channel is for informational purposes only. It is not intended to be a substitute for professional medical advice, diagnosis, or treatment. Always seek the advice of your doctor with any questions you may have regarding a medical condition or health problems. Reliance on any information provided on this channel is solely at your own risk.
Информация по комментариям в разработке