আসসালামু আলাইকুম ❀ 
সূরা আল-বুরুজ (আরবি ভাষায়: البروج) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৮৫ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ২২, সূরা আল-বুরুজ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
এই সূরাটির প্রথম আয়াতের اَلْبُرُوْجَ বাক্যাংশ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরাটিতে البروج (‘বুরুজ’) শব্দটি রয়েছে এটি সেই সূরা।
সূরা বুরুজ এর ঘটনা :
أَصْحَٰبُ ٱلْأُخْدُودِ
‘লম্বা গর্তের মালিকরা’ বলে কাদেরকে বোঝান হয়েছে, তাফসীরকারকগণ সে বিষয়ে কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সহীহ মুসলিম, জামে তিরমিযী, মুসনাদে আহমদ ইত্যাদি হাদীসের কিতাবে এ প্রসঙ্গে যে ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়েছে তার সারকথা হলো,
অতীতকালে এক কাফের বাদশাহ ছিল। তার দরবারে থাকত এক জাদুকর। জাদুকরের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে সে বাদশাহর নিকট আবেদন জানায়, আমাকে একজন বিচক্ষণ ছেলে দিন, তাকে আমি আমার শিক্ষা দিয়ে যাব, যাতে আমার পর এ বিদ্যা বিলীন হয়ে না যায় । কথানুযায়ী একটি ছেলে নির্ধারণ করা হলো। সে প্রতিদিন জাদুকরের কাছে গিয়ে জাদুবিদ্যা শিক্ষা করত। পথে এক খ্রিস্টান পাদ্রির বাড়ি ছিল। তখনকার সময় হিসেবে পাদ্রির ধর্মই সত্য ছিল । বালকটি তাঁর কাছেও আসা-যাওয়া শুরু করত। একদিন গোপনে সে পাদ্রির হাতে ঈমানদার হয়ে যায় এবং তাঁর সাহচর্যের ফলে আল্লাহর নৈকট্য ও অলৌকিকতার স্তরে উন্নীত হয়।
একদিন বালকটি দেখল, একটি বিরাট আকারের জন্তু (সিংহ বা অন্য কিছু) পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে আছে। যার ফলে মানুষ অস্থির। সে এক খণ্ড পাথর হাতে নিয়ে দোয়া করল, ‘হে আল্লাহ! পাদ্রির ধর্ম যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে জন্তুটি যেন আমার পাথরের আঘাতে মারা যায়।’ এই বলে সে পাথর নিক্ষেপ করে। আর এতেই জন্তুটি মারা যায়। চারদিকে হৈচৈ পড়ে যায় যে, ছেলেটি অদ্ভুত জ্ঞানের অধিকারী। একজন অন্ধ লোক তার কাছে আবেদন করে, আমার চক্ষু দুটি ভালো করে দাও। ছেলেটি বলল, ভালো করার ক্ষমতা আমার হাতে নেই। ভালো করার মালিক হলেন এক আল্লাহ । তবে হ্যাঁ, তুমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলে আমি দোয়া করব। আশা করা যায়, তিনি তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেবেন। বাস্তবে তা-ই হলো।
ধীরে ধীরে এসব ঘটনা বাদশাহর কানে পৌঁছে যায়। বাদশাহ ক্রুদ্ধ হয়ে পাদ্রি বালকটিকে তলব করে এবং সামান্য কথা-কাটাকাটির পর পাদ্রি ও অন্ধকে হত্যা করে । আর ছেলেটিকে একটি উঁচু পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করে হত্যা করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু আল্লাহর কুদরতের খেলা, যারা তাকে পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করার জন্য নিয়ে গেল, তারাই মারা গেল । ছেলেটির কিছুই হলো না। সে নিরাপদে ফিরে এলো।
তারপর বাদশাহ তাকে নদীতে ডুবিয়ে মারার নির্দেশ দেয়, কিন্তু সেখানেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো। যারা তাকে ডুবিয়ে মারার জন্য নিয়ে তারা সবাই ডুবে মারা গেল, আর ছেলেটি নিরাপদে ফিরে এলো। শেষ পর্যায়ে বালকটি বাদশাহকে বলল, আমাকে কীভাবে মারা যাবে তার উপায় অন্ধসহ আমি নিজেই বলে দিচ্ছি। আপনি সমস্ত মানুষকে একটি মাঠে একত্রিত করুন। সকলের সামনে আমাকে শূলিতে চড়ান এবং এই বলে আমার ওপর তীর নিক্ষেপ করুন “ بسم الله رب الغلام (বালকের পালনকর্তা আল্লাহর নামে) বাদশাহ তা-ই করল। এতে বালকটি তার প্রতিপালকের জন্য উৎসর্গ হয়ে গেল ।
এ অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করে উপস্থিত সকলে তৎক্ষণাৎ বলে উঠল, “”امنا برب الغلام” (আমরা বালকের পালনকর্তার প্রতি ঈমান আনলাম)। লোকজন বাদশাহকে বলল, দেখলেন তো? যা ঠেকাতে চেয়েছিলেন, শেষ পর্যন্ত তা-ই ঘটল । আগে তো দু-একজন মুসলমান হতো। এখন বিপুলসংখ্যক লোক ইসলাম গ্রহণ করে ফেলেছে। বাদশাহ ক্রুদ্ধ হয়ে বড় বড় গর্ত খনন করে সেগুলোতে ভালোভাবে আগুন জ্বালিয়ে ঘোষণা দিল, ‘যারা ইসলাম ত্যাগ করবে না, তাদেরকে এ জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হবে।
শেষ পর্যায়ে সবাইকে আগুনে নিক্ষেপ করা হলো, কিন্তু কেউ ইসলাম ত্যাগ করতে সম্মত হয়নি। একজন মুসলমান মহিলাকে ধরে আনা হলো। তার কোলে দুগ্ধপোষ্য শিশু ছিল। সম্ভবত বাচ্চাটির কারণে মহিলাটি আগুনে নিক্ষিপ্ত হতে ইতস্ত করে। কিন্তু আল্লাহর হুকুমে শিশুটি চিৎকার করে বলে ওঠে, “”اماه ! إصبرى ، فإنك على الحق” অর্থাৎ আম্মাজান! ধৈর্য ধারণ করুন, আপনি সত্যের ওপর রয়েছেন। (সহীহ মুসলিম, ৪/২২৯৯, হা. ৩০০৫, মুসনাদে আহমাদ, ৩৯/৩৫১, হা. ২৩৯৩১)
#সূরা_বুরুজ #সূরা_আল_বুরুজ #সূরা_বুরুজ_বাংলা_অর্থসহ #সূরা_বুরুজ_বাংলা_উচ্চারণ #কোরআন_তেলাওয়াত #শেখ_মাসুদ #surah_al_buruj #surah_buruj #sheikhmasud #qurantilawat #quranrecitation #quran
                         
                    
Информация по комментариям в разработке