Скачать или смотреть ওহুদের যুদ্ধের ইতিহাস....

📜 উহুদ যুদ্ধের ইতিহাস

যুদ্ধের কারণ:

বদরের যুদ্ধ (২ হিজরি)-তে মক্কার কুরাইশরা মারাত্মকভাবে পরাজিত হয়। তাদের প্রায় ৭০ জন সৈন্য নিহত এবং ৭০ জন বন্দি হয়।

বদরের প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ করে কুরাইশরা। বিশেষ করে আবু সুফিয়ান, হিন্দা (আবু সুফিয়ানের স্ত্রী) এবং বদরে নিহতদের আত্মীয়স্বজনরা।

৩ হিজরি সালের শাওয়াল মাসে কুরাইশরা প্রায় ৩,০০০ সৈন্য নিয়ে মদিনার দিকে অগ্রসর হয়। তাদের সাথে ছিল ২০০ অশ্বারোহী ও ৭০০ বর্মধারী সৈন্য।



মুসলমানদের প্রস্তুতি:

রাসূল ﷺ সাহাবাদের সঙ্গে শুরা করে যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ করেন।

নবীজি ﷺ এর মত ছিল মদিনার ভেতরে থেকে প্রতিরক্ষা নেওয়া। কিন্তু তরুণ সাহাবাদের একাংশ (যারা বদরে অংশ নিতে পারেননি) বাইরে যুদ্ধের পক্ষে মত দেন।

শেষ পর্যন্ত উহুদ পাহাড়ের কাছে মদিনার বাইরে যুদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়।

মুসলমানদের সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় ১,০০০ জন। কিন্তু যুদ্ধের ঠিক আগে মুনাফিক নেতা আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই তার ৩০০ জন লোক নিয়ে ফিরে যায়। ফলে মাত্র ৭০০ জন সাহাবী যুদ্ধক্ষেত্রে অবশিষ্ট থাকেন।



যুদ্ধের শুরু:

যুদ্ধ শুরু হলে মুসলমানরা প্রথমেই আক্রমণ চালিয়ে কুরাইশদের পিছনে ঠেলে দেয়।

কুরাইশদের পতাকা বাহকরা একে একে নিহত হয়।

মুসলমানরা জয়লাভের দ্বারপ্রান্তে চলে যায়।



তীরন্দাজদের ভুল

রাসূল ﷺ আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) এর নেতৃত্বে ৫০ জন তীরন্দাজকে উহুদের পাহাড়ের ঢালে স্থাপন করেছিলেন এবং কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন:

"আমাদের জয় হোক বা পরাজয়, তোমরা এখানে থেকে সরবে না।"

কিন্তু মুসলমানরা যখন কুরাইশদের পিছু হটতে দেখে এবং যুদ্ধলব্ধ মাল সংগ্রহ করতে থাকে, তখন তীরন্দাজদের একটি অংশ স্থান ত্যাগ করে।



যুদ্ধের মোড় পরিবর্তন:

সুযোগ বুঝে কুরাইশদের অশ্বারোহী বাহিনী (খালিদ ইবনে ওয়ালিদ – যিনি তখনও ইসলাম গ্রহণ করেননি) পিছন দিক থেকে আক্রমণ চালান।

মুসলমানরা দুই দিক থেকে চাপে পড়ে বিভ্রান্ত হয়ে যায়।

এই সময়ে হিন্দা তার দাস জুবাইরকে দিয়ে হযরত হামজা (রা.)-কে শহীদ করায়।



রাসূল ﷺ এর ওপর আক্রমণ:

কুরাইশরা রাসূল ﷺ-কে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। তিনি আহত হন, দাঁত ভেঙে যায়, কপাল রক্তাক্ত হয়।

প্রচার হয় যে নবীজি ﷺ শহীদ হয়েছেন। এতে মুসলমানদের মনোবল ভেঙে যায়।

তবে কিছু সাহাবী রাসূল ﷺ-কে রক্ষা করতে জীবন উৎসর্গ করেন।



যুদ্ধের সমাপ্তি:

মুসলমানদের প্রায় ৭০ জন সাহাবী শহীদ হন।

কুরাইশরা কিছুটা জয়লাভ করে ফিরে গেলেও, তারা মদিনায় প্রবেশ করতে পারেনি।

শহীদদের মধ্যে ছিলেন—হযরত হামজা (রা.), মুসআব ইবনে উমায়ের (রা.) প্রমুখ।



যুদ্ধের শিক্ষা:

1. নবীর আদেশ অমান্য করা হলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

2. মুসলিম বাহিনীর ঐক্য ও শৃঙ্খলা ভাঙলে শত্রুর সুযোগ তৈরি হয়।

3. এই যুদ্ধ মুসলমানদের জন্য এক ধরনের পরীক্ষা ছিল।

4. বদরের মতো সহজ জয় সবসময় নাও আসতে পারে—আল্লাহ চাইলে পরীক্ষা নেন।

👉 সংক্ষেপে, উহুদ যুদ্ধ (৩ হিজরি, শাওয়াল মাস, ৬২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিল ইসলামের দ্বিতীয় বড় যুদ্ধ, যা মুসলমানদের জন্য এক গভীর শিক্ষা ও ধৈর্যের পরীক্ষা।