Скачать или смотреть শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরকে পূর্ণব্রহ্ম বলা হয় কেন?

শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর (১৮১২-১৮৭৮) ছিলেন মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি নিম্নবর্গীয় হিন্দু সমাজের মানুষের মধ্যে ভক্তি আন্দোলন প্রচার করেন। তাঁকে "পূর্ণব্রহ্ম" বলা হয় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে—

১. ঈশ্বরের অবতার রূপে গণ্য
ভক্তদের মতে, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর অবতার, যিনি সমাজের নিপীড়িত ও অবহেলিত মানুষের মুক্তির জন্য আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁর ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান ও সর্বত্র বিরাজমান—যা পূর্ণব্রহ্মত্বের লক্ষণ।

২. তাঁর শিক্ষা ও দর্শন
তিনি "সত্য, প্রেম ও দয়া"-র উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং ভক্তদের আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। তিনি জাতিভেদ ও বর্ণবাদী সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সাম্যের বাণী প্রচার করেন, যা তাঁকে এক দিব্যজ্ঞানসম্পন্ন গুরু করে তুলেছিল।

৩. মুক্তির পথপ্রদর্শক
হরিচাঁদ ঠাকুরের মতে, "সত্যযুগ আবার ফিরে আসবে যদি মানুষ সত্যপথে চলে"। তিনি সাধারণ মানুষকে সহজ ও সরল উপায়ে ঈশ্বরভক্তির পথ দেখিয়েছেন, যা তাঁকে এক সর্বজনীন গুরু তথা পূর্ণব্রহ্ম করে তুলেছে।

৪. অলৌকিক ক্ষমতা ও দিব্যজ্ঞান
ভক্তদের বিশ্বাস, তিনি অসাধারণ দিব্য ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এবং তাঁর আশীর্বাদে বহু মানুষের জীবন পরিবর্তন হয়েছিল। তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা ও কৃপা দৃষ্টি তাঁকে ঈশ্বরের সর্বাঙ্গীণ প্রকাশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

৫. ভক্তদের চেতনায় পূর্ণ ঈশ্বররূপে প্রতিষ্ঠা
শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর শুধু একজন ধর্মগুরু নন, তাঁর ভক্তদের কাছে তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের স্বরূপ, যার মধ্যে সকল জ্ঞানের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটেছে। তাই তাঁকে "পূর্ণব্রহ্ম" বলা হয়।

উপসংহার
হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবন, শিক্ষা, সমাজ সংস্কার ও ভক্তিমূলক আন্দোলন তাঁকে শুধুমাত্র একজন ধর্মগুরু নয়, বরং পূর্ণ ঈশ্বররূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাঁর ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে তিনি ভগবান বিষ্ণুর অবতার, যিনি সমাজের সকল মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। তাই তাঁকে "পূর্ণব্রহ্ম" বলা হয়।