Скачать или смотреть হাদীস পাঠের আসর (২০২৫) —২৯ : মৃত্যু

হাদীস পাঠের আসরের রমজানের এই শেষ পর্বে শ্রদ্ধেয় গুরুজী হাদীস শরীফ বাংলা মর্মবাণীর ৫৯১ থেকে ৬০১নং হাদীস পাঠ ও বিশ্লেষণ করেছেন।

(মনে রেখো) প্রত্যেক প্রাণই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। তারপর তোমরা আমার কাছেই ফিরে আসবে। (সূরা আনকাবুত, আয়াত ৫৭)

জন্মগ্রহণ করার পর একটি মাত্র সত্য যদি থাকে তবে সেটা হচ্ছে মৃত্যু। মৃত্যুর মুখোমুখি সবাইকেই হতে হবে। এর কাছ থেকে পালানোর কোনো উপায় নেই। তবে মৃত্যুতে মৃত্যুতে অনেক পার্থক্য রয়েছে। একজন বিশ্বাসীর মৃত্যু এবং একজন সত্য অস্বীকারকারীর মৃত্যু কখনো এক হতে পারে না।

আসলে একজন বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীল ব্যক্তি জীবনকে যেভাবে আলিঙ্গন করে মৃত্যুকেও একইভাবে আলিঙ্গন করে। তার কাছে মৃত্যু হলো নতুন এক জীবনের সূচনা। জন্ম তার জন্যে যেমন আনন্দ নিয়ে আসে, তেমনি মৃত্যু তাকে নিয়ে যায় আরেক আনন্দলোকে।

অন্যদিকে, দুরাচারী ভোগী ও বস্তুবাদীরা মৃত্যু থেকে সবসময় পালাতে চায়। তারা মনে করে, পার্থিব জীবন শেষ মানে সবকিছুর সমাপ্তি। তাই তারা সবসময় অস্থিরতা অশান্তি ও অনিশ্চয়তায় ভোগে। মৃত্যু জীবনের অনিবার্য পরিণতি হলেও এরা কখনোই মৃত্যুকে স্বাগত জানাতে পারে না।

নবীজী (স) মৃত্যুকে অভিহিত করেছেন বিশ্বাসীর জন্যে আল্লাহর উপহার। তিনি বলেছেন, মৃত্যু আসলে একটা সেতু। যা অতিক্রম করে সে পরম প্রভুর সাথে মিলিত হতে পারবে।

কাজেই মৃত্যু নিয়ে ভয় বা নেতিবাচকতায় ভুগবেন না। মৃত্যুকে যত বেশি স্মরণ করবেন তত তা আপনার কাছে আপন হবে। একে বরণ করার জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করলে আপনি দুনিয়া ও আখেরাত- দুই জায়গাতেই সম্মানিত হবেন। এ-জন্যেই নবীজী (স) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে বুদ্ধিমান সে-ই যে মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করে।

মৃত্যু ও পরকালের কথা স্মরণ রাখার সহজ উপায় হচ্ছে কবর জিয়ারত করা। যখন কবরে শায়িত ব্যক্তির জন্যে আপনি দোয়া করবেন তখন উপলব্ধি করবেন পার্থিব ভোগবিলাস কত ঠুনকো!

আসলে একজন বিশ্বাসীর মৃত্যু হলো কর্মময় মৃত্যু, কাজ করতে করতে পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া। যে তিনটি গুণের অধিকারী হলে একজন মানুষ প্রশান্ত ও কর্মময় মৃত্যুতে ধন্য হবে বলে নবীজী (স) উল্লেখ করেছেন সেগুলো হলো- দুর্বলের প্রতি সমমর্মিতা, পিতামাতার প্রতি মমতা ও শ্রদ্ধাবোধ এবং অধীনস্থের প্রতি যত্নশীলতা।