বেদে গো হত্যার নির্দেশ আছে? | পশু হত্যার নির্দেশ বেদে? 33 কোটি দেবতা কি? #বেদে_গো_হত্যা নির্দেশ আছে #পশু_হত্যার_নির্দেশ_বেদে #33কোটি_দেবতা ক
বেদে গো হত্যার নির্দেশ আছে? | পশু হত্যার নির্দেশ বেদে? 33 কোটি দেবতা কি?
৩৩ কোটি দেবতা কি কি?
উত্তরঃ কোটি শব্দের অর্থ প্রকার অর্থাৎ ৩৩ কোটি দেবতা মানে ৩৩ প্রকার দেবতা।
প্রকৃতির শাসক, প্রজার পালক সর্ব্বব্যাপক, সর্ব্বাধিপতি পরমাত্মার তেত্রিশ ভৌতিক দেব শক্তির অনুশীলন কর। ( যজুর্বেদ ১৪/৩১)
শতপথ ব্রাহ্মণে ( কাঃ ১৪ অঃ ৫) যাজ্ঞবল্ক ঋষি শাকল্যকে বলিতেছেনঃ -
দেবতা ৩৩ টী, ইহারা পরমেশ্বরের মহিমাকে প্রকাশ করিতেছে।
৮ বসুঃ অগ্নি, পৃথিবী, বায়ু, অন্তরীক্ষ, আদিত্য (সূর্য), দৌঃ, চন্দ্র ও নক্ষত্র। (সকল সৃষ্টির নিবাস স্থান বলিয়া এ সকলকে ৮ বসু বলে।)
১১ রুদ্রঃ প্রাণ, অপ্রাণ, ব্যান, সমান, উদাম, নাগ, কূর্ম্ম, কৃকল,দেবদত্ত, ধনঞ্জয় ও জীবাত্মা। (এই ১১ টি দেহান্তকালে রোদন করায় বলিয়া ইহাদিগকে রুদ্র বলে।)
১২ আদিত্যঃ বছরের ১২ মাস। ( সংবৎসরের বার মাস সকলের আয়ু হরণ করে বলিয়া এই সকলকে আদিত্য বলে।)
১ ইন্দ্রঃ পরম ঐশ্বর্য্য হেতু বলিয়া বিদ্যুতের নাম ইন্দ্র।
১ প্রজাপতিঃ যজ্ঞ বা শুভকর্ম। ( যজ্ঞকে প্রজাপতি বলিবার কারণ এই যে, তদ্দ্বারা বায়ু, বৃষ্টি, জল, ঔষধির, বিদ্বানদিগের সম্মান এবং বিবিধ শিল্পবিদ্যার সাহায্যে প্রজাপালন হইয়া থাকে।)
উপরের আলোচনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, ৩৩ কোটি দেবতা বলতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তিকে বুঝানো হয়েছে। হাত, পা বা মানুষ আকৃতির কাউকে বুঝায়নি।
😎😎😎
প্রশ্নঃ বেদে কি যজ্ঞে পশু বলি দেওয়ার বিধান আছে?
উত্তরঃ না। দেখুন বেদ থেকে প্রমাণ....
যজ্ঞের মহত্বতার গুনগান করে বেদ বলছে যে, সত্যনিষ্ঠ বিদ্বান লোক যজ্ঞ দ্বারাই পূজনীয় পরমেশ্বরের পূজা করে। "যজ্ঞ বৈ শ্রেষ্ঠতম কর্ম " আদি বচন অনুসারে যজ্ঞ কর্মেই সব শ্রেষ্ঠ ধর্মের সমাবেশ হয়ে থাকে। যাহাতে হিংসার কোন স্খান নেই, এজন্যই যজ্ঞে "অধ্বর" শব্দটি এসেছে। নিরুক্ত ১।৮ এ অধ্বর শব্দের অর্থ হিংসরহিত করা হয়েছে। এ জন্য ঋগবেদে বলা হয়েছে যে, এই হিংসারহিত যজ্ঞেই বিদ্বানরা সুখ প্রাপ্ত করে থাকে (ঋগবেদ ১।১।৪)।
অতএব বৈদিক যজ্ঞে পশুবলির বিধান শুধু একটি ভ্রান্ত ধারনা মাত্র। যজ্ঞে পশুবলির প্রথা মধ্য কালে এসেছে। প্রাচীন কালে যজ্ঞে পশুবলির প্রথা ছিলো না। ধর্ম পথ হতে বিচ্যুত লোক নিজ মাংসলোলুপতার বশীভূত হয়ে যজ্ঞে পশুবলির প্রথা প্রচলন করেছে। যার প্রমাণ আমরা মহাভারতে পাই -
.
সুরা মৎসা মধু মাংসমাসবং কৃসরোদনম্।
ধুর্তেঃ প্রবর্তিতং হোতন্নৈবদ্ বেদেষু কল্পিতম।।
(মহাঃ শান্তি পর্বঃ ২৬৫,শ্লোক ৯)
---সুরা, মৎস, মাংস, তালরস, এইসব বস্তুকে ধুর্তেরাই যজ্ঞে প্রচলিত করেছে। বেদে এসব উপযোগের বিধান নেই।
.
অব্যবস্থিতমর্যদৈবিমূঢর্নাস্তিকৈর্তবৈ।
সংশয়াত্মাভিরব্যক্তৈহিংসা সমনুবর্তিত।।
(মহাঃ শান্তি পর্বঃ অঃ ২৬৫, শ্লোক ৪)
--- যে ধর্মের মর্যাদা থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে মূর্খ, নাস্তিক তথা যার আত্মা সংশয়যুক্ত এবং যার কোন প্রসিদ্ধি নেই এইরূপ লোকই হিংসাকে সমর্থন করে।
.
মানান্মোহাচ্চ লোভাচ্চ লৌল্যমেত্যপ্রকল্পিতম্।।
(মহাঃ শান্তি পর্ব, অঃ ২৬৫, শ্লোক ১০)
--- সেই ধূর্তেরা অভিমান, মোহ এবং লোভের বশীভূত হয়ে সেই সব বস্তুর প্রতি লোলুপতা প্রকট করে থাকে।
.
অর্থাৎ মহাভারত থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, যজ্ঞে পশুবলি ধূর্তদের কাজ। কিন্তু পাশ্চাত্য বিদ্বান মাক্সমুলার , গ্রিফিথ আদি বেদে মাংসাহারের প্রচার করে কেবল মাত্র পবিত্র বেদ কেই কলঙ্কিত করেছে। মধ্য কালে বাম মার্গ নামে একটি দলের প্রসার খুব হয়েছিলো। যারা মাংস, মদিরা, মৎস, মৈথুন আদি কে মোক্ষের মার্গ বলে মানতো। সায়ন,মহিধর আদি বিদ্বান যারা ছিলো তারা বাম মার্গ দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কারনেই বেদে বলিপ্রথা তথা মাংসাহারের কথা উল্লেখ করেন। বেদে মাংস ভক্ষন এবং বলি প্রথার মিথ্যা প্রচারের কারনে ধর্মের যে ক্ষতিসাধন হয়েছে তা অবর্ণনীয়। আজ কাল তো আমাদের সামনে এই শঙ্কা উপস্থিত হয়ে যে, বেদে গো আহুতি এবং গো মাংস ভক্ষনের নির্দেশ রয়েছে। অথচ আমরা গাভী কে মাতৃতূল্য জ্ঞান করে এসেছি এবং গাভীকে হত্যার চিন্তাও করতে পারি না। এবং বেদেও গাভীকে "অঘ্না" "অদিতি" ইত্যাদি শব্দে ভূষিত করা হয়েছে যার অর্থ হচ্ছে গাভীগুলো হত্যার অযোগ্য। এবং বেদের অসংখ্য জায়গায় গো হত্যার নিষেধ এবং গো হত্যাকারীকে শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে। যেমন-
.
প্র নু বোচং চিকিতুষে জনায় মা গামনাগা মদিতিং বধিষ্ট।।
(ঋগবেদ ৮।১০১।১৫)
--- হে জ্ঞানবান পুরুষের নিকট আমি বলেতেছি নিরপরাধ অহিংস পৃথিবী সদৃশ গাভীকে হত্যা করিও না।
.
যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পুরুষম।তং ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসো অবীরহা।।
(অথর্বেদ ১।১৬।৪)
--- যদি আমাদের গাভীকে হিংসা কর যদি অশ্বকে যদি মনুষ্যকে হিংসা কর তবে তোমাকে সীসক দ্বারা বিদ্ধ করিব যাহাতে আমাদের মধ্যে বীরদের বিনাশক কেহ না থাকে।
.
"অনাগো হত্যা বৈ ভীমা কৃত্যে মা নো গাম অশ্বম পুরুষং বধী"
(অথর্ববেদ ১০।১।২৯)
--- নির্দোষের হত্যা অবশ্যই ভয়ানক। আমাদের গাভী, অশ্ব, পুরুষকে মেরো না।
.
"গোঘাতম্ ক্ষেধে যঃ গাম্ বিকৃন্তন্তম"
(যজুর্বেদ ৩০।১৮)
গাভীর ঘাতক অর্থাৎ হত্যাকারী যে, ক্ষুধার জন্য গাভীকে হত্যা করে। তাকে ছেদন করি।
.
" অদিতিম মা হিংসী"
(যজুর্বেদ ১৩। ৪৯)
হত্যার অযোগ্য গাভীকে কখনো মেরো না।
.
" মা গাম অনাগাম অদিতিম বধিষ্ট"
(ঋগবেদ ৮।১০১।১৫)
--- নিরপরাধ গাভী এবং ভূমিতূল্য গাভীকে কখনো বধ করো না।
.
--- "অঘ্না ইব" গাভী সমূহ বধের অযোগ্য। সর্বদা ( পশুন ত্রায়েথাম, যজুঃ ৬।১১) পশুদের রক্ষা করো তাদের পালন করো (অঃ ৩।৩০।১)।
.
অথচ এসব পৌরাণিক সায়ন, মহিধর, রমেশ আদি বেদ ভাষ্যকার দের এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। তাদের ভাষ্যে এতটাই সুস্পষ্টভাবে গো আহুতি এবং মাংস ভক্ষনের নির্দেশনা পাওয়া যায় যে সেটা অস্ত্রস্বরূপ বেদ বিদ্বেষীরা ব্যবহার করে বেদকে কলুষিত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করে। এ পর্যায়ে এরকমই কিছু মন্ত্র শঙ্কাস্বরূপ তুলে ধরবো এবং সেগুলোর বাস্তবিক অর্থ জানার প্রয়াস করবো -
#vedicjivan #vedic_jivan
Информация по комментариям в разработке