জয়চন্ডী পাহাড়

Описание к видео জয়চন্ডী পাহাড়

জয়চন্ডী পাহাড় অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় । এখানে সত্যজিত্ রায়ের পরিচালিত ''হীরক রাজার দেশে ''ছায়াছবিটির শুটিং হয়েছিল । চারিদিকে শুধু পাহাড় আর পাহাড় । প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুবই মনোরম । বড় বড় পাথর এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে । গাড়ী পার্কিং--এর আলাদা কোনো ব্যাবস্থা নেই ।পাহাড়ের পাদদেশে বিরাট বড় ফাঁকা জায়গা আছে ।সেখানেই গাড়িগুলিকে রাখা হয় । ওই ফাঁকা জায়গাটাতে আছে খাবার হোটেল, বিভিন্ন রকমের খাবারের দোকান ,পূজার সামগ্রীর দোকান , ঘর সাজানোর জিনিসের দোকান । ফাঁকা জায়গাটির এদিকে অর্থাত্ পাহাড়ের ঠিক বিপরীত দিকে আছে ইস্কনের মন্দিরের একটি শাখা ।সেখানে অনবরত হরিনাম সংকীর্তন হচ্ছে । যাবার পথের ডানদিকে পরপর তিনটি পাহাড় ।পাহাড় তিনটির নাম হল-----কালীপাহাড় , সীতাপাহাড় , এবং জয়চন্ডী পাহাড় । কালীপাহাড় এবং সীতাপাহাড়ে ওঠার সিঁড়ি নেই । শুধু জয়চন্ডী পাহাড়ে ওঠার সিঁড়ি আছে ।যাবার পথের বাঁদিকে আছে যুগাঢেলা পাহাড় । ওখানেও ওঠার সিঁড়ি নেই । বহু পর্যটক আসেন বেড়াতে, ওঠেন জয়চন্ডী পাহাড়ে । রাত্রি যাপনের জন্য আছে হোটেল । পাহাড়ে ওঠবার সিঁড়ির প্রথমেই আছে একটা তোরণ ।তোরণের বাঁদিকে আছে একটা বজরঙ্গবলীর মূর্তি । ডানদিকে আছে ছৌ শিল্পের বিভিন্ন মুখোশ এবং পুরুলিয়ার কুটির শিল্পের বিভিন্ন জিনিষ । সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার মাঝে মাঝে পাওয়া যাবে লেবুর সরবত, বিভিন্ন কোল্ডড্রিঙ্কস । প্রায় পাঁচশো তিনটি সিঁড়ি । সিঁড়িগুলি খুব একটা উঁচু নয । যাত্রীদের উঠতে খুব একটা কষ্ট হয় না । চারিদিকের দৃশ্য খুবই মনোরম । চারিদিকে পলাশ ফুল, চারিদিক লালে লাল করে রেখেছে । সবুজের সমারোহ ।পাহাড়ের ওঠার সিঁড়ির বাঁদিকের পাহাড় খুবই খারাই ।মনে হয় ঠিক দেওয়ালের মতো । পাহাড়ের গায়ে গজিয়ে উঠেছে বড় বড় গাছ । গাছগুলি তাদের বড় বড় ডালপালা বিস্তার করে রেখেছে । গোটা রাস্তাটির প্রায় অধিকাংশ জায়গা ছায়া । সেজন্য সূর্যের প্রখর তাপে যাত্রীদের পাহাড়ে উঠতে বিশেষ কষ্ট হয় না । সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার সময় মনে হয় সত্যিই আমরা হীরক রাজার দেশে পৌছে গেছি ।কিছুদূর ওঠার পর পর পাবেন বসার ,বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা । বেশ কিছুটা উপরে ওঠার পর দেখা যাবে একটা দূর্গের মতো দেখতে ওয়াচ টাওয়ার ।এটি নির্মাণ করেছিলেন কাশীপুরের রাজা ।এখান থেকে শত্রুদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হত ।পাহাড়ের একেবারে উপরে উঠে ডানদিকে দেখতে পাবেন বজরঙ্গবলীর একটি মন্দির । মন্দিরের সামনের সিঁড়িতে জুতো রেখে দিয়ে বজরঙ্গবলীকে প্রণাম করে আরো কয়েকটি সিঁড়ি উঠলাম । সব সিঁড়ির ঊর্দ্ধে দেখতে পেলাম চন্ডীমাতার মন্দির । মন্দিরের সামনের বারান্দায় বিক্রি হচ্ছে পূজার সামগ্রী, খাবার জল । মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করতেই দর্শন পেলাম চন্ডীমাতার ।প্রসন্নমযী, দ্বিভুজা, বরদাত্রী, সিংহবাহিনী, স্বর্ণালঙ্কারে ভূষিতা চন্ডীমাতাকে প্রণাম করে পূজা দিলাম ।মায়ের মূর্তির ডান চরণের ঠিক পাশেই আছে একটা কালো রঙের পাথরের শিবলিঙ্গ ।চন্ডীমাতার মূর্তিটি পাথরের। মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন কাশীপুরের রাজা নীলমণি সিং দেব বাহাদুর । দেবীর স্বপ্নাদেশ পেযে নির্মাণ করেছিলেন এই মন্দির । ভক্তরা মায়ের কাছে যা প্রার্থনা করে মা তাই পূরণ করেন ।ভক্তদের সকল মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয় । ভক্তরা মন্দিরের ঠিক পাশের একটি গাছে মানত ঢিল বেঁধে দেয । মায়ের বাত্সরিক পূজা হয় ফেব্রুয়ারীর চার তারিখে । মেলাও বসে তখন । এখন এখানে সরকারি মেলা হয় আঠাশে ডিসেম্বর থেকে পয়লা জানুয়ারি পর্যন্ত । দুই হাজার ছয সাল থেকে সরকারী মেলা হওযার কারণে এখানে আর চৌঠা ফেব্রুয়ারী মেলা হয় না । কোনো সরকারী অনুদান নেই । ভক্তদের প্রণামী র অর্থেই চলে এই মন্দির । ভোরের আলো ফুটলে মন্দির খোলা হয় আর বন্ধ হয় সূর্যাস্তের পর অন্ধকার নামলে । সারাদিন মন্দির খোলা থাকে । ভক্তরা দর্শন করতে পারেন । দুপুরে অন্নভোগ হয় । বর্ষাকালে অন্নভোগ বন্ধনের জন্য আলাদা একটি ভোগঘর আছে । বর্ষাকাল ভিন্ন অন্য সময়ে মন্দিরের পাশে ফাঁকা জায়গাতেই ভোগ রান্না করা হয় । অন্যান্য সকল মন্দিরের মতো দুপুরে অন্নভোগের পর মাযের মন্দির বন্ধ হয় না । খোলাই থাকে । পাহাড়ের উপর থেকে নীচের প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি মনোরম । নীচে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন পুকুর, বাড়ী ,ফাঁকা জায়গা , পার্ক করা গাড়ীগুলি । বাড়িগুলিকে দেখে মনে হচ্ছে রঙ বেরঙের ছোটো ছোটো দেশলাইয়ের বাক্স ।দূরে রেলগাড়ি যাচ্ছে ।মনে হচ্ছে যেন একটি সাপ এঁকে বেঁকে চলে যাচ্ছে । মন্দিরের ওপাশে আছে সীতাকুণ্ড ।সীতাকুণ্ডে যাবার পথটি বড়ই দুর্গম । সীতাকুণ্ডের মুখ পাহাড়ের একটি ছোটো ফাটলের মতো । তবে এর ভিতরে আছে গভীর জল ।এর জলকে খুবই পবিত্র মনে করা হয় ।

Комментарии

Информация по комментариям в разработке